যুদ্ধাপরাধের দায়ে প্রাণদণ্ড হয়েছিল তাঁর। কিন্তু একটি বিশেষ রায়ে মুক্তি পেয়ে গেলেন সইফ আল-ইসলাম গদ্দাফি। লিবিয়ার প্রাক্তন স্বৈরাচারী শাসক মুয়াম্মর গদ্দাফির দ্বিতীয় পুত্র সইফের এই মুক্তিতে দেশে ফের রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
সইফের মুক্তির কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী খালেদ আল-জাইদি। কিন্তু তাঁর মক্কেল এখন কোন শহরে রয়েছেন, তা নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। আর এই গোপনীয়তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে কি সত্যি সত্যি মুক্তি পাননি সইফ? কারণ এর আগেও তাঁর মুক্তি ঘিরে গুজব ছড়িয়েছিল। কিন্তু এ বার খালেদ বেশ জোর দিয়েই বলেছেন, আবু বকর আল-সিদ্দিক ব্যাটেলিয়নের ক্ষমা ভিক্ষায় মুক্তি মিলেছে সইফের। নিরাপত্তার খাতিরেই তাঁর গতিবিধি এখন সবাইকে জানানো যাচ্ছে না।
২০১১ সালের আরব বসন্তের বিপ্লবে ক্ষমতাচ্যুত হন লিবিয়ার দীর্ঘদিনের স্বৈরাচারী শাসক মুয়াম্মর গদ্দাফি। সির্তের যুদ্ধে মৃত্যু হয় তাঁর। ওই বছরই সশস্ত্র বিপ্লবীদের হাতে ধরা পড়েন গদ্দাফির দ্বিতীয় ছেলে সইফ। তার পরে আবু বকর আল-সিদ্দিক ব্যাটেলিয়নের নজরদারিতে জিনতান শহরের এক কারাগারে এত দিন আটক ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: আরও বড় ছক ছিল কি খুরমের
সিদ্দিক ব্যাটেলিয়ন আসলে একটি জঙ্গি গোষ্ঠী। অভ্যন্তরীণ সরকারের অনুরোধে সইফের প্রাণভিক্ষা করা হয়েছে বলে একটি বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে। দেশের পূর্বাংশে স্বায়ত্তশাসন রয়েছে এই অভ্যন্তরীণ সরকারের। সেই সরকার আগেই সইফের অপরাধ ক্ষমা করেছিল। এই সরকারে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা গদ্দাফি পরিবার ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হচ্ছে। না হলে সইফের মুক্তি অত সহজ ছিল না।
২০১৫ সালে ত্রিপোলির এক আদালত যুদ্ধাপরাধ ও হত্যার দায়ে সইফের ফাঁসির আদেশ দেয়। তাঁর বাবার শাসনের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক কণ্ঠস্বরকে সে সময় সইফ হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। আন্তর্জাতিক আদালতও তাঁকে বহু দিন খুঁজছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মদতপুষ্ট ন্যাশনাল অ্যাকর্ড দেশের পশ্চিমাংশে আলাদা একটি সরকার চালায়। সেই সরকারের আদালতই সইফের ফাঁসির সাজা দিয়েছিল। অভ্যন্তরীণ সরকারের সঙ্গে ন্যাশনাল অ্যাকর্ডের দীর্ঘদিনের বিরোধিতা।
গদ্দাফির শাসনকালে পশ্চিমী দুনিয়ার কাছে লিবিয়ার মুখ ছিলেন সইফই। লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স থেকে ২০০৮ সালে পিএইচডি করেন তিনি। যদিও সেই অধ্যায়ও প্রবল বিতর্কিত ছিল। মুক্তি পাওয়ার পরে অভ্যন্তরীণ সরকারের সাহায্যে সইফ ফের দেশের রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। যার ফলে দেশে চূড়ান্ত অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy