অকল্যান্ডে রাষ্ট্রপতি। রবিবার।
পর্যটন, বাণিজ্য, সিনেমা।
এই সবকটি ক্ষেত্রেই নিউজিল্যান্ডের সম্পর্কের গাঁটছড়া আঁট করে বাঁধা হল কোনও ভারতীয় রাষ্ট্রপতির প্রথম অকল্যান্ড সফরে। আজ প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন কি-এর উপস্থিতিতে সই হল দুদেশের মধ্যে বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত চুক্তিপত্র। যার নিট ফল, ভারত থেকে সরাসরি উড়ানে আসা এবার সম্ভব হবে এই দেশে, এতদিন যে সুযোগ ছিল না। দুই, দু’দেশের মধ্যে গত পাঁচ বছর ধরে আলোচনা চলতেই থাকা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দরকষাকষি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সফরের ফলে গতি পাবে বলে মনে করছে এখানকার সরকার। যে বিষয়টিকে হিসাবের মধ্যে রাখতে চাইছে সাউথ ব্লক যে চিনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে নিউজিল্যআন্ডের। এই শহরে এমন কোনও বর্গ কিলোমিটার দেখছি না, যেখানে কোনও না কোনও ভাবে ব্যবসা করছেন চিনারা। এটা ঘটনা যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মত পোড় খাওয়া দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এক নেতার নিউজিল্যান্ডে প্রথমবার আসার পিছনে যে একটি স্পষ্ট বার্তা রয়েছে, সেটা অনুমান করছেন এখানকার রাজনৈতিক মহল। চলতি বছরের শেষে এ দেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে আসছেন। তারপর নিউজিল্যান্ড সফরে আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
আজ দিনভর রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রী বাণিজ্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রণববাবু। সন্ধ্যাবেলা অনাবাসী এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েছেন। আগামিকাল সকালে নয়াদিল্লি ফেরার উড়ান ধরার আগে অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন তিনি।
আজ বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত চুক্তি সই হওয়ার সময় নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, ‘‘এই চুক্তির ফলে দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও সহজ হয়ে গেল। পর্যটনের ক্ষেত্রে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এবং দুদেশের মানুষের মধ্যেও।’’
সফরে আসার আগেই বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল. নিউজিল্যান্ড ক্রমশ ভারতীয় চলচিত্র নির্মাতাদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থান হয়ে উঠছে এখানকার অপূর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য। শুধু বলিউড বা তামিল ছবিই নয়, বাংলা ছবির শুটিংয়ের প্রশ্নেও যে নিউজিল্যান্ডের চাহিদা বাড়ছে, জানানো হয়েছিল সে কথাও। কিন্তু সমস্যা ছিল এত দিন, নিউজিল্যান্ডে আসতে হলে সিঙ্গাপুর অথবা ব্যাঙ্কক হয়ে আসতে হয়। এই দীর্ঘ যাত্রার কোনও সরাসরি উড়ান ছিল না।. আজকের চুক্তির ফলে খুব শীঘ্রই সরাসরি বিমান পরিষেবা শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। গত কয়েকবছরে এই দেশে ভারতীয় পর্যটকদের আগমন দ্বিগুন বেড়েছে। এবার এক ধাক্কায় তা আরও অনেকটা বেড়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- কেজরীর প্রশ্নে জানা গেল, মোদী ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিলেন এমএ-তে!
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আজ জন কি এবং প্রণব দুজনেই সরব হয়েছেন। জনের কথায়, কোট এই চুক্তিটি ভারত এবং নিউজিল্যান্ড দুদেশের জন্যই লাভজনক। এর ফলে পারষ্পরিক বিনিয়োগ বাড়বে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর যে অপার সম্ভাবনা রয়েছে তাকেও কাজে লাগানো যাবে। অন্যদিকে প্রণব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ভারত চাইছে বি্ষয়টি নিয়ে আলোচনা যাতে ত্বরান্বিত হয়। তবে রাষ্ট্রপতিভবন সূত্রের বক্তব্য, এটি এমন একটি বিষয় যাতে দীর্ঘসূত্রিতা আবশ্যক। চিনেরও পনেরো বছর সময় লেগেছিল নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে এই চুক্তি সই করতে। নিজের দেশের বাজারের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ভারসাম্য তৈরি করে তবেই এ ব্যাপারে এগোনো সম্ভব বলে আজ জানানো হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি বর্তমান সরকারের মেক ইন ইন্ডিয়া, স্কিল ইন্ডিয়া, স্মার্ট সিটির মত এমন বেশ কিছু প্রকল্পের ব্যাপারে নিউজিল্যান্ডের নেতৃত্বের সামনে ব্যাখ্যা করেছেন প্রণববাবু। তিনি জানিয়েছেন, এই ক্ষেত্রগুলিতে বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে গত কয়েক বছরে। নিউজিল্যান্ডের উচিত তাকে কাজে লাগানো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy