ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সংবর্ধনায় স্মারক ও উত্তরীয় নিয়ে ভাইচুং। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র
লাল-হলুদ জার্সিতে আবার খেলতে দেখা যাবে ভাইচুং ভুটিয়াকে!
অবাক করে দেওয়ার মতো ঘটনা হলেও এটাই ধ্রুব সত্যি!
২০১৪-১৫ মরসুমে দ্বিতীয় উইন্ডো খুললেই সরকারি ভাবে সই পর্ব সেরে ফেলবেন পাহাড়ি বিছে। তবে প্র্যাকটিসে নামবেন মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে। বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবুতে বসে এমনটাই ঘোষণা করলেন ভাইচুং। কিন্তু প্রায় দু’বছর ফুটবল থেকে দূরে সরে থাকার পর হঠাত্ করে আবার নিজের প্রাক্তন ক্লাবে ফিরে আসার কারণ কী? এই রহস্যের জট অবশ্য ভাইচুং-ই খুলে দিয়েছেন। “আমি কথা দিয়েছিলাম, লাল-হলুদের হয়ে খেলেই সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসর নেব। সে জন্যই এ বার ইস্টবেঙ্গলে সই করছি,” বলছিলেন ভারতের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। এর সঙ্গেই তিনি হাসতে হাসতে যোগ করেন, “এখন যারা ইস্টবেঙ্গলে খেলে তাদের মতো আমি এই মুহূর্তে ফিট নই। আর পুরো ফিট না হলে আমি ক্লাবের ক্ষতি করে খেলব না। তবে একশো শতাংশ ফিট থাকলে আই লিগের দ্বিতীয় পর্ব থেকে খেলতে চাই। তবে কোচ মনে করলে শেষ ম্যাচেও যদি পাঁচ মিনিট খেলায়, আমি তৃপ্তি পাব। এটা ঘটনা, এই ফেরাটা আমার কামব্যাক নয়। শুধুমাত্র অবসর নেওয়ার জন্যই ইস্টবেঙ্গলে সই করেছি।”
এ দিন রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়েই ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ককে বরণ করে নেয় ইস্টবেঙ্গল। স্মারক, উত্তরীয় তুলে দেওয়া হয় ভাইচুংয়ের হাতে। ইস্টবেঙ্গলের এক সদস্য আবার সোনার চেন দেন তাঁকে। এই অনুষ্ঠানে সচিব কল্যাণ মজুমদার এবং ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য-সহ ক্লাবের অন্যান্য কর্তাও যেমন উপস্থিত ছিলেন, তেমনই লাল-হলুদে খেলা প্রাক্তন ফুটবলার শ্যাম থাপা, শিশির ঘোষরাও এ দিন হাজির হয়েছিলেন। ভাইচুংকে ঘিরে লাল-হলুদ এখনও যে আবেগপ্রবণ তা আরও একবার বোঝা গেল এ দিন সন্ধ্যায়। এক সমর্থক ভাইচুংয়েরই ছবি উপহার দিলেন তাঁকে। কেউ আবার ফুল নিয়ে এসেছিলেন। সই, ছবির আবদারও মেটাতে হল পাহাড়ি বিছেকে।
ভাইচুং চুটিয়ে শেষ ক্লাব ফুটবল খেলেছেন মোহনবাগানের জার্সি গায়ে। ২০০৯-’১১। এর পর অবশ্য দু’ বছর ইস্টবেঙ্গলে থাকলেও শারীরিক সমস্যা এবং চোটের কারণে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলেছিলেন। আর ফিটনেসের জন্যই ২০১১-তে জাতীয় পর্যায়ের ফুটবল থেকে অবসর নিয়ে নেন তিনি। কিন্তু পুরোপুরি ফুটবল থেকে এখনও অবসর নেননি। নিজের তৈরি করা টিম ইউনাইটেড সিকিমের জার্সি গায়েও তিনটি ম্যাচ খেলেছিলেন।
ভাইচুং-ই বোধহয় প্রথম ফুটবলার যিনি ‘হল অব ফেম’ সম্মান পাওয়ার পরও আবার ক্লাব জার্সিতে মাঠে নামবেন। এ নিয়ে অবশ্য নিজেই রসিকতা করলেন পাহাড়ি বিছে। বললেন, “হল অফ ফেম পেয়ে নতুন করে আবার ক্লাব ফুটবল খেলবে, এ রকম ফুটবলার বোধহয় আমিই একা। এ বার না আমার এই সম্মান কেড়ে নেয়।”
এই মুহূর্তে ভাইচুং ফেডারেশনের টেকনিক্যাল কমিটিরও সদস্য। জাতীয় দলের কোচ নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে কমিটির মতামত নেওয়া হবে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক এ দিন পরিষ্কার বলে দিলেন, “বব হাউটন বা উইম কোভারমান্সের মতো কোচকে এই মুহূর্তে বেশি টাকা দিয়ে কোচ হিসেবে না এনে, সেই টাকা বরং অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে খরচ করা উচিত। জুনিয়ার টিমে একজন ভাল কোচ নিয়ে আসা উচিত। আর সিনিয়র দলের জন্য ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে ভাল অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন কাউকেই কোচ করা ভাল। সে তিনি বিদেশি হোন বা স্বদেশি।” জাতীয় দলের কোচ নিয়ে নাকি এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই জানালেন ভাইচুং। ২১ ডিসেম্বর এই নিয়ে আলোচনায় বসার কথা টেকনিক্যাল কমিটির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy