Advertisement
E-Paper

বাগান ছাড়ুক সনি নির্ভরতা লাল-হলুদ ভাঙুক ব্যারিকেড

এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় আকর্ষণের নাম ভারতীয় ফুটবল। আইএসএলের প্রবল সাফল্যের পরে সুনীল ছেত্রীদের সাফ কাপ জয় নতুন উন্মাদনা তৈরি করেছে আমাদের দেশের ফুটবলে। এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি আই লিগের জন্য। বাজি ধরতে পারি, এ বার আই লিগ আগের চেয়ে বেশি হাড্ডাহাড্ডি আর উত্তেজনার হবে।

ভাইচুং ভুটিয়া

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৬ ০৪:০১

এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় আকর্ষণের নাম ভারতীয় ফুটবল। আইএসএলের প্রবল সাফল্যের পরে সুনীল ছেত্রীদের সাফ কাপ জয় নতুন উন্মাদনা তৈরি করেছে আমাদের দেশের ফুটবলে। এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি আই লিগের জন্য। বাজি ধরতে পারি, এ বার আই লিগ আগের চেয়ে বেশি হাড্ডাহাড্ডি আর উত্তেজনার হবে।

এ বছর নয় দলের লিগ। তাই প্রত্যেকটা দলের কাছেই শুরুর চার-পাঁচটা ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। একবার হোঁচট খেলে বাকি মরসুম আর কামব্যাক করার সুযোগ হয়তো পাবে না। সে যত বড় দলই হোক না কেন! আবার যদি কোনও দল দুরন্ত শুরু করতে পারে, সেক্ষেত্রে অন্যরা তাকে তাড়া করার আগেই সেই দল হয়তো ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে। ট্রফিও পকেটে পুরে নেবে।

তবে আমি মনে করি ফেভারিট হিসেবে শুরু করবে বেঙ্গালুরু এফসি। এ বারও ওদের দলে বেশ কিছু তাবড় নাম আছে— সুনীল ছেত্রী, লিংদো, রিনো, থোই সিংহ। এরা মাঠে কেন ভয়ঙ্কর সেটা আইএসএলে পাওয়া ওদের পেমেন্টের অঙ্কই বলে দিচ্ছে। তা ছাড়া ছেত্রী একটা বড় ফ্যাক্টর। তবে ওকে বেঙ্গালুরু কোচ যত উইংয়ে খেলাবে, যত ওকে দিয়ে আক্রমণ ছড়াবে ততই ওর দল বিপক্ষকে সর্বস্বান্ত করে ছাড়বে। ছেত্রীকে আমি বেঙ্গালুরু টিমে দুই স্ট্রাইকারের ঠিক পিছনে খেলতে দেখতে চাই। যেখান থেকে ওর নিজের গোল করার সুযোগ যেমন বাড়বে, তেমনই স্ট্রাইকারদেরও গোল করার সুযোগ তৈরি করে দিতে পারবে। ছেত্রীর মতো প্রতিভাকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে না পারলে সেটা কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হবে।

ভারতের যে কোনও ফুটবল টুর্নামেন্টে কলকাতার দুই জায়ান্টকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। হতে পারে এ বার স্থানীয় লিগে মোহনবাগানকে খুব একটা আকর্ষণীয় লাগেনি। কিন্তু আই লিগ একেবারে অন্য বল গেম। শুধু সনি নর্ডি আর ব্যক্তি নির্ভরতা কাটিয়ে টিমগেমের দিকে বেশি নজর দিতে হবে গত বারের চ্যাম্পিয়নদের।

অন্য দিকে, ইস্টবেঙ্গল মরসুমটা নিখুঁত শুরু করেছে কলকাতা লিগ জিতে। যদিও আবার বলছি, আই লিগ সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। ইস্টবেঙ্গল ব্যাল্যান্সড টিম। তবে আই লিগে ওদের শেষ কয়েক বছরের একই স্লোগান— ‘কাছে তবু কত দূরে’-র ব্যারিকে়ড ভেঙে এ বার বেরনো দরকার। ইদানীং লিগের শেষের দিকে হোঁচট খাওয়ার অভ্যেসটা ছাড়তে পারলে আমার মতে এ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বড় দাবিদার ইস্টবেঙ্গল।

গোয়ার দিকে তাকালে সালগাওকরকে শক্ত গাঁট মনে হচ্ছে। আর কালো ঘোড়া মুম্বই এফসি। বিশেষ করে এনপি প্রদীপ আর আরাতাকে ওরা সই করানোর পরে।

মিজোরাম অবশেষে একটা আই লিগ দল পেয়েছে। যারা নিজেদের মাঠে খেলবে। ফুটবল নিয়ে সব সময় একটা আলাদা উন্মাদনা আছে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই পাহাড়ি রাজ্যে। কোনও সন্দেহ নেই, এ বার জাতীয় লিগে নিজেদের একটা দল থাকায় ফুটবল নিয়ে আরও পাগলামি বাড়বে মিজোরামে। আইজল এফসি সম্ভবত এ বারের আই লিগের সবচেয়ে কঠিন হোম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে। একে তো প্রবল সমর্থন থাকবে। তার উপর আবহাওয়া। আইজলকে ঘরের মাঠে হারানো প্রচণ্ড কঠিন হবে।

আর একটা নতুন দল ডিএসকে শিবাজিয়ান্স। ওদের অবশ্য খুব বুদ্ধি করে খেলতে হবে। দেখতে হবে গত বার ভারত এফসি যে ভুলগুলো করেছিল, সেটা যাতে ‘কপিপেস্ট’ না হয়ে যায় সরাসরি আই লিগে সুযোগ পাওয়া এই নতুন দলের গায়েও। ইতিমধ্যেই ইউথ ডেভলপমেন্টের একটা গঠনমূলক কাঠামো আছে ডিএসকের। আর এটা নিশ্চয়ই কাউকে মনে করিয়ে দিতে হবে না যে, ভারতীয় দলে প্রচণ্ড সাড়া ফেলে দেওয়া লালিয়ানজুয়ালা মতো এই অ্যাকাডেমিরই সৃষ্টি। আমার বিশ্বাস, ওরা ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ তৈরির কাজে আরও দারুণ কাজ করবে।

সব শেষে আর একটা কথা। অনেক দিন হল আই লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে কোনও ভারতীয়ের নাম দেখিনি। তবে আইএসএল থেকে যে অভিজ্ঞতা আর সাফ কাপ জিতে যে গতি তৈরি হয়েছে ভারতীয় ফুটবলে, তাতে আমার ধারণা এ বারই কোনও ভারতীয়ের নাম দেখা যাবে আই লিগের হায়েস্ট স্কোরার হিসেবে। সেটা ঘটলে সবচেয়ে বেশি খুশি হব আমিই।

bhaichung bhutia I league
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy