ভাইরাল ফিভারের মতোই ডেঙ্গি জ্বর সপ্তাহখানের ভোগায়।
টানা বৃষ্টিতে আমাদের বিরক্ত লাগলেও মশককূল আনন্দে আটখানা। এডিস ইজিপ্টা মশার সঙ্গে জোট বেঁধেছে ডেঙ্গির জীবাণুরা। বর্ষার জমা জলে এদের বাড়বাড়ন্ত বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি জ্বরের প্রবণতা। এই জ্বর মোকাবিলা করার উপায় জানালেন কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক দীপঙ্কর সরকার।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে ডেঙ্গি জ্বরের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৭৭৯ সালে। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১১০ টি দেশে এই জ্বরের প্রকোপ দেখা গেছিল। ১৯৬০ সাল থেকে ডেঙ্গির প্রবণতা হু হু করে বাড়তে থাকে। সেই সময়ে এক বছরে বিশ্বের প্রায় এককোটি মানুষ ডেঙ্গি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মশাবাহিত এই জীবাণুঘটিত জ্বরকে এখনও কব্জা করা যায়নি।
আরও পড়ুন: বর্ষায় এই ৪ ন্যাচারাল অ্যান্টিবায়োটিক যেন রান্নাঘরে অবশ্যই থাকে
আর পাঁচটা ভাইরাল ফিভারের সঙ্গে ডেঙ্গির জ্বরের খুব একটা তফাৎ নেই। আসলে বছর ভর নানান কারণে ভাইরাল ফিভার হয়। তবে বর্ষার সময় জীবাণু বহনকারী মশার বাড়বাড়ন্ত হয় বলে জ্বর হলে ডাক্তার দেখিয়ে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।
ডেঙ্গি জ্বর হলে ভাইরাল ফিভারের মতোই মাথা ও গা হাত পা ব্যথা করে। অনেকের চোখেও খুব ব্যথা হয়। ডেঙ্গি জ্বর হলে কারোর কারোর গা হাত পা ভয়ানক বেশি ব্যথা করে। তাই ডেঙ্গি জ্বরের আর এক নাম হাড়ভাঙ্গা জ্বর বা ব্রেক বোন ফিভার।
জ্বর আর গা হাতপা ব্যথা ছাড়াও বমি বা বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া হতে পারে। এ ছাড়া লাল লাল র্যাশে শরীর ভরে যায়। অনেক সময় গলা ব্যথা ও সর্দিও থাকে। হেমারেজিক ডেঙ্গি হলে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একই সঙ্গে ব্লাড প্রেশার নেমে গিয়ে রোগী শকে চলে যেতে পারে। এই সময়ের কোনও জ্বরকে অবহেলা না করা। আর নিজের চিকিৎসা নিজে করে বিপদ বাড়াবেন না।
একটা কথা জেনে রাখা ভাল যে সর্দি কাশি সহ বা ছাড়া যে কোনও রকম জ্বর মানেই যে ডেঙ্গি তা নয়। এই সময় ম্যালেরিয়ার প্রবণতাও খুব বাড়ে। আর জর হলে গা হাত পা ব্যথা কমানোর জন্যে অনেকেই আইব্রুফেন ও প্যারাসিটামল কম্বিনেশন ওষুধ ব্যবহার করেন। আমার পরামর্শ, জ্বর হলে শুধু মাত্র প্যারাসিটামল নির্দিষ্ট ডোজে খেতে হবে। আইব্রুফেন খেলে ডেঙ্গি মারাত্বক হয়ে উঠতে পারে।
ভাইরাল ফিভারের মতোই ডেঙ্গি জ্বর সপ্তাহখানের ভোগায়। আর জ্বর হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরে ডেঙ্গির জীবাণুর অ্যান্টিজেন অ্যান্টিবডির উপস্থিতি বোঝা যায়। ১৫ থেকে ২০% ক্ষেত্রে ৪/৫ দিন বাদেও রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গির উপস্থিতি বোঝা যায়। সুতরাং জ্বর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টেস্ট করিয়ে নেগেটিভ রেজান্ট দেখে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy