Advertisement
১৮ মে ২০২৪

হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ

হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন এক চিকিৎসাধীন ব্যক্তি বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১১ এপ্রিল ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে বলে অভিযোগ। নিখোঁজ ব্যক্তির নাম কালু মাঝি। সোমবার এ বিষয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডলের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয় দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের পক্ষ থেকে। তার ভিত্তিতে মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি গড়ে তদন্ত শুরু করলেন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সংগ্রাম সিংহ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৫ ০৩:০২
Share: Save:

হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন এক চিকিৎসাধীন ব্যক্তি বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১১ এপ্রিল ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে বলে অভিযোগ।

নিখোঁজ ব্যক্তির নাম কালু মাঝি। সোমবার এ বিষয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডলের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয় দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের পক্ষ থেকে। তার ভিত্তিতে মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি গড়ে তদন্ত শুরু করলেন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস, বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন। হাসপাতালের রেজিস্ট্রারেও ১১ এপ্রিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা রয়েছে। যদিও ওই তারিখে কালু মাঝি নামে কেউ ভর্তি হননি বলে দাবি করেছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যাঁরা তাঁকে ভর্তি করিয়েছিলেন, তাঁদের কেন হাসপাতাল বদলের সময় জানানো হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকারের অভিযোগ, ‘‘আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। উপরন্তু আমরা ১১ তারিখের পর থেকে মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে খুঁজলেও তাঁকে কোনও ওয়ার্ডে খুঁজে পাইনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে।’’ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, ‘‘ওই দিন আমাদের এখানে কালু মাঝি নামে কেউ ভর্তি হননি।’’ যদিও বিষয়টি কী হয়েছে তা বুঝতে পারছেন না বলে জানান শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপার। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ‘রেফার’ করা হলে তাঁর আত্মীয়দের জানানোর রীতি রয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘বিষয়টি কী হয়েছে তা জানতে একটি পাঁচজনের তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই যা বলার বলব।’’

তবে অমিতবাবুর দাবি, ‘‘রেজিস্টারে একজন ওয়ার্ড মাস্টার ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর সই রয়েছে।’’ তবে এদিন হাসপাতালে গেলে ওয়ার্ড মাস্টার সোমবার থেকে ছুটিতে গিয়েছেন বলে জানানো হয়। ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও হাজির ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। তিনি কোথায় গিয়েছেন তাঁর সদুত্তর মেলেনি।

জানা গিয়েছে, গত ৫ এপ্রিল কালুবাবুকে নর্দমায় পড়ে থাকতে দেখেন সূর্যসেন কলোনি এলাকার বাসিন্দারা। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করার পর দেখা যায়, তাঁর সারা শরীরে জখমের চিহ্ন, বাঁ হাত নাড়াতে পারছেন না। তার মধ্যেই তিনি জানান, তাঁর বাড়ি বিহারে। বয়স প্রায় ৮০ বছর। ছেলেরা মারধর করে ফেলে দিয়েছে। এরপরে তাঁকে স্থানীয়রাই কয়েকজন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। খবর পেয়ে তাতে সহযোগিতা করেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর জানা যায়, তাঁর বাঁ হাতের হাড় ভেঙেছে। হাসপাতালে ভর্তির পরে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লিগাল এড ফোরামের বিহার শাখাকে খবর দেওয়া হয়, তাঁর পরিবারের লোকজনকে খুঁজে বের করার জন্য। তবে এখনও তাঁদের খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE