প্রতীকী ছবি।
পরমায়ু বৃদ্ধির আশীর্বাদ কিংবা শুভেচ্ছা নিয়মিত মেলে। কিন্তু আয়ু বৃদ্ধি কি ডেকে আনছে স্নায়ু রোগ? এসএসকেএম-এর বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের শিক্ষক-চিকিৎসক অতনু বিশ্বাস এবং আরেক চিকিৎসক তাপসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের গবেষণা সেই দিকেই ইঙ্গিত করেছে। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান পত্রিকা ল্যানসেট-এ।
অতনুবাবু জানাচ্ছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, খাদ্যাভাস, শারীরচর্চা না-করা এবং সর্বোপরি বায়ু দূষণের কারণেই স্নায়ুরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তিনি বলেন, “আরও একটা কারণ হল গড় আয়ু বেড়ে যাওয়া। এক জন বয়স্ক মানুষের স্নায়ু মরে গেলে সেটি আর তৈরি হয় না। এগুলি সারানোর ক্ষমতাও শরীরের থাকে না। যখনই স্নায়ুর ক্ষয় বেশি হয় তখনই বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। এগুলি বয়সকালেই বেশি হয়। আর দীর্ঘ দিন সেই রোগে আক্রান্ত থাকার ফলে সমাজেও তার প্রভাব পরে।”
ওয়াশিংটনের ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ এবং ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর সহযোগিতায় বিগত বছরগুলিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের স্নায়ু রোগে আক্রান্ত ও তার প্রভাবের বিষয়ে সমীক্ষা চালান ওই দুই চিকিৎসক। পাশাপাশি আগেকার বিভিন্ন সময়ের পরীক্ষামূলক গবেষণার তথ্যকেও এই কাজে ব্যবহার করা হয়। অতনুবাবু জানাচ্ছেন, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে গত তিরিশ বছরে সব থেকে বেশি স্ট্রোকের প্রভাব বেড়েছে। যিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন তাঁর কথা আলাদা। কিন্তু যিনি কয়েক বছর ধরে ভুগছেন, তাঁর পরিবার-পরিজনদেরও বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়েই সময় কাটাতে হচ্ছে। কারণ রোগীর যত্ন নেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে পরিজনকে মানিয়ে নিতে হয়, তাতে অর্থনৈতিক, সামাজিক পরিবর্তনও ঘটছে।
দুই চিকিৎসক দেখিয়েছেন, অনেক মানুষই সুগার, রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু তাঁরা সেটাকে গুরুত্ব দিতে চান না। কেউ হয়তো আবার নিয়মিত ওষুধও খান না। এরই সঙ্গে এক শ্রেণির মানুষের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা যুক্ত হয়ে ঘটায় ‘স্ট্রোক’। স্নায়ুঘটিত এই রোগের ফলে শুধু একটি মানুষ নন, প্রভাব পরে গোটা সমাজের উপরেই।
গবেষকরা জানান, ১৯৯০ সালে যত জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হতেন এখন সংখ্যাটা তার দ্বিগুণ হয়েছে। মাইগ্রেন, পার্কিনসন্স, অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনশিয়া-র মতো স্নায়ু রোগেও আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy