Advertisement
২১ মে ২০২৪
Nerve trouble

Neurological disorder: স্নায়ুরোগ বাড়ছে এ রাজ্যে, ল্যানসেটে গবেষণাপত্র চিকিৎসকদের

যে কোনও রোগের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আছে। প্রত্যেক রোগীই সমাজের একটি অংশ। নানা ভাবে তাঁদের স্বাস্থ্যের অবস্থার সঙ্গে যুক্ত আরও পাঁচজনের জীবন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১ ১৪:৩৩
Share: Save:

গত ৩০ বছরে কোন রোগের হার বেড়েছে কী ভাবে, তা নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন এ শহরের দুই চিকিৎসক। তাঁদের সেই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ‘ল্যানসেট’ বিজ্ঞান পত্রিকায়। সেখানে দেখা গিয়েছে, এ রাজ্যে স্নায়ুরোগের প্রকোপেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের জীবনে নানা ধরনের অসুবিধা আসছে।

কোন রোগ সমাজের উপরে সবচেয়ে বেশি ভার তৈরি করছে, তা নিয়ে গবেষণা চলছে বিভিন্ন দেশে। বাদ পড়েনি এ দেশও। বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের রোগের চাপ বেশি। তারই মাঝে এই গবেষণাপত্র থেকে বেড়িয়ে এল পশ্চিমবঙ্গে জনজীবনের উপরে স্নায়ুরোগের প্রভাব।

যে কোনও রোগের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আছে। সেই প্রভাব শুধু রোগীর শরীরের উপরেই পড়ে না, পড়ে সমাজেও। কারণ, প্রত্যেক রোগীই সমাজের একটি অংশ। নানা ভাবে তাঁদের স্বাস্থ্যের অবস্থার সঙ্গে যুক্ত আরও পাঁচজনের জীবন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

এক সময়ে সংক্রামক রোগের প্রভাব বেশি ছিল সমাজে। কিন্তু গত ৩০ বছরে সে চিত্র অনেকটা বদলে গিয়েছে বলে মত গবেষক-চিকিৎসকদের। কিন্তু এখন ছোঁয়াচে রোগের থেকে অনেক বেশি প্রভাব স্ট্রোক, মাইগ্রেন, পার্কিনসন্স ডিজিজ, অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ, ডিমেনশিয়া, সেরিব্রাল পলসির মতো অসুখের। ১৯৯০-এ রোগীর সংখ্যা যা ছিল, তার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে ২০২১-এ। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি, এ চিত্র দেখা যাচ্ছে ছত্তীসগঢ়, ত্রিপুরা, ওড়িশা ও অসমেও।

গবেষকদের একজন হলেন ‘বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস’-এর চিকিৎসক অতনু বিশ্বাস। তাঁর বক্তব্য, এক সময়ে কোন রোগে ক্ষতি কত, তা মাপা হত মৃতের সংখ্যা দিয়ে। কিন্তু ক্ষতি শুধু মৃত্যু দিয়ে মাপা যায় না। যে সব রোগী বছরের পর বছর বেঁচে রয়েছেন, তাঁদের মাধ্যমেও চাপ পড়ে সমাজের উপরে। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও রোগ হলেই সেই মানুষটির জীবনযাত্রায় বদল আসে। তাঁর যত্ন নিতে হয় বাড়ির লোকদের। সে কারণে বদল আসে পরিজনদের জীবনে। কর্মক্ষেত্রেও পড়ে এর প্রভাব। সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রভাব তো রয়েছেই। সব ভারই বহন করতে হয় সমাজকে। সেই ভার এ রাজ্যে সবচেয়ে বেশি সৃষ্টি করছে বিভিন্ন ধরনের স্নায়ুরোগ। এমনই দেখতে পেয়েছি আমরা।’’ কোন কোন দিক থেকে প্রভাব ফেলছে এমন অসুখ, তাও এ শহরের আর এক চিকিৎসক তাপসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে খতিয়ে দেখেছেন তিনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কী কারণে এতটা বাড়ল এ ধরনের রোগ?

গবেষকেরা দেখেছেন, মূলত জীবনযাত্রার ধরনের কারণেই এমন ধরনের রোগ বাড়ছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকা অনেক ধরনের অসুখের মূলে। যেমন ডায়াবিটিস, উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা সংক্রান্ত রোগ বাড়ছে। তা আবার স্নায়ুরোগ বাড়াচ্ছে। ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস্‌ ফাউন্ডেশন’ এবং ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর উদ্যোগে হওয়া এই সমীক্ষা ধূমপানকেও একটি বড় কারণ হিসাবে দেখছে। সময়ের সঙ্গে বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু। তারও প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে এই সমস্যার পিছনে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, গড় আয়ু যত বাড়ছে, তত রোগীর কষ্ট পাওয়ার মেয়াদ বেড়ে যাচ্ছে। তারই সঙ্গে বাড়ছে পরিবারের লোকদের উপরে চাপ।

গবেষকদের আশা, এ ধরনের কাজের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়বে সমাজে। সঙ্গে সরকারও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উন্নতির কথা ভাববে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE