Advertisement
১৮ মে ২০২৪

নিজেদের বাঁচাতে এ বার অ্যাপই ভরসা ডাক্তারদের

ফোরামের এক সদস্য জানান, অ্যান্ড্রয়েড ফোনে প্লে-স্টোর থেকে এই অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে। লাল রঙের ক্রস চিহ্নের উপরে এসওএস লেখা অ্যাপে তিনটি বিকল্প আছে। কর্মস্থলে চিকিৎসকের উপরে রোগীর পরিজন বা বহিরাগত কেউ চড়াও হলে লাল রঙের হৃদ্‌চিহ্নে স্পর্শ করতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ১০:৫২
Share: Save:

প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে পথ চলা শুরু হয়েছিল তাঁদের। এ বার নিরাপত্তা খুঁজতেও সেই প্রযুক্তির উপরেই ভরসা রাখছেন তাঁরা।

দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতাল ভাঙচুরের পরে সেখানের এক চিকিৎসক জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রুপ তৈরি করেন। সেই গ্রুপ এ বার সংগঠনে পরিণত হয়েছে, যার নাম ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম। রবিবার উত্তম মঞ্চে ফোরামের প্রথম বৈঠকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য তৈরি হল অ্যাপ— ডক্টর্স এসওএস।

গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে ভাঙচুর এবং চিকিৎসকদের হেনস্থার ঘটনা বেড়েছে। এমনকী, রোগী-মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হেনস্থা হতে হয়েছে চিকিৎসকের পরিবারকেও। এর জেরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অধিকাংশ চিকিৎসক। ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট পাশ হওয়ার পরে তাঁদের একাংশ মনে করছেন, নিরাপত্তাহীনতা আরও বেড়েছে। নিরাপত্তা বাড়াতেই তাই এ বার হাতিয়ার প্রযুক্তি।

ফোরামের এক সদস্য জানান, অ্যান্ড্রয়েড ফোনে প্লে-স্টোর থেকে এই অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে। লাল রঙের ক্রস চিহ্নের উপরে এসওএস লেখা অ্যাপে তিনটি বিকল্প আছে। কর্মস্থলে চিকিৎসকের উপরে রোগীর পরিজন বা বহিরাগত কেউ চড়াও হলে লাল রঙের হৃদ্‌চিহ্নে স্পর্শ করতে হবে। সেই বিপদ-বার্তা পৌঁছে যাবে আশপাশের চিকিৎসকদের কাছে। যদি কোনও চিকিৎসক হেনস্থা হওয়ার আশঙ্কা করেন, তা হলে হলুদ রঙের হৃদ্‌চিহ্ন স্পর্শ করতে হবে আর বিপন্মুক্ত হলে ধূসর রঙের।

আরও খবর
‘ফোরাম’ নিয়ে জলঘোলা

সংগঠনের আশা, বিপদ-বার্তা ফোরামের অন্য চিকিৎসকদের কাছে পৌঁছলে তাঁরা পুলিশের সাহায্যে আক্রান্তকে বাঁচাতে পারবেন। সংগঠন সূত্রে খবর, বেশ কিছু জায়গায় স্থানীয় থানার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। পুলিশকর্মীরা যাতে অ্যাপের মাধ্যমে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দিকটি দেখতে পারেন, তা নিয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি থানা আবেদনে সাড়া দিয়েছে বলেও জানান সংগঠনের এক সদস্য।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, চিকিৎসককে মারধর করার পরে পালিয়ে যায় অভিযুক্তেরা। যার জেরে তাদের গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। সংগঠন আশা করছে, আক্রান্তের কাছে দ্রুত পুলিশ ও অন্য চিকিৎসকেরা পৌঁছলে তাঁকে বাঁচানোর পাশাপাশি অপরাধীদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগও কমবে।

এ দিন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারা জারি না করার দাবিও ওঠে। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, যে কোনও অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করে হেনস্থা করা ঠিক নয়।

সংগঠনের সদস্য, চিকিৎসক বিনায়ক চন্দ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য বিলের কিছু অংশ নিয়ে আপত্তি আছে। আইনি পথে সেই লড়াই চলছে। পাশাপাশি সংগঠন চাইছে, চিকিৎসকেরা একে অন্যের পাশে থাকুন। যাতে নিরাপত্তার দিকটি বজায় থাকে।’’ আর এক সদস্য চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এত দিন ভাবতাম, রোগীকে সুস্থ করে তোলাই একমাত্র কাজ। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে নিরাপত্তা নিয়েও বা়ড়তি চিন্তা থাকছে। একে অন্যের পাশে থাকতেই এই উদ্যোগ।’’

সংগঠনের সভাপতি, চিকিৎসক রেজাউল করিম বলেন, ‘‘নিরাপত্তার সঙ্গে রোগীকে পরিষেবা দিতে চাই। পরিস্থিতি এমন হয়েছে, নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েই ভাবতে হচ্ছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE