আরপি গোয়েনকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শাশ্বত গোয়েনকা এবং শিভিকা গোয়েনকা। — নিজস্ব চিত্র।
আরপি সঞ্জীব গোয়েনকা গোষ্ঠীর উদ্যোগে শহরে তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের নতুন স্কুল। নাম ‘আরপি গোয়েনকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’। আগামী ১৭ জুলাই থেকে শুরু হবে ক্লাস ডায়মন্ড হারবার রোডের উপরে অবস্থিত এই প্রাঙ্গণে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে শিশুদের লেখাপড়া সেখানোর পাশাপাশি জীবনের নানা দিক সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল করে তোলার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানালেন প্রতিষ্ঠাতা শাশ্বত গোয়েনকা এবং শিভিকা গোয়েনকা।
দ্রুত বদলাতে থাকা বিশ্বে নিজেকেও তৈরি রাখতে হয় নানা রকম পরিবর্তনের জন্য। শুক্রবার আনন্দবাজার অনলাইনকে শাশ্বত বলেন, ‘‘আগে এক ভাবে বড় করা হত শিশুদের। এখন সময়টা আলাদা। প্রতিদিন নতুন কিছু রপ্ত করতে হয় ছোট-বড় সকলকে। জীবনের গতি সার্বিক ভাবেই বেড়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে পা মিলিয়ে যেন আমাদের ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে যেতে পারে, সে দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।’’ তাই আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে যেমন বিজ্ঞানচর্চার সুযোগ থাকছে, তেমনই আবার রক ক্লাইম্বিং থেকে বাগান করা— নানা কাজে সমান ভাবে তৈরি করা হবে এখানকার পড়ুয়াদের। ঐতিহ্যকে মনে রেখে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে যেন শেখে পড়ুয়ারা, সে দিকেই নজর দেবে আলিপুর চত্বরের এই স্কুল।
আপাতত চালু হবে নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস। শিভিকা জানান, আগামী দু’বছরের মধ্যে পুরো দমে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চালু হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক পড়ুয়ার যেন আলাদা ভাবে যত্ন নেওয়া যায়, সে দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ক্লাসে কুড়ি জনের বেশি পড়ুয়া থাকবে না।’’
ইন্টারন্যাশনাল বোর্ডের এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসেছেন ব্রিটেন থেকে। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে এসে যোগ দিচ্ছেন শিক্ষকরা। সকলেরই এর আগে আন্তর্জাতিক মানের আইবি বোর্ডের স্কুলে পড়ানোর অভিজ্ঞতা আছে। শাশ্বত জানালেন, পূর্ব ভারতে এটিই প্রথম স্কুল, যেখানে প্রাইমারি স্তরে ইন্টারন্যাশনাল বোর্ডের পাঠক্রম (ইন্টারন্যাশনাল ব্যাকালেরেটের প্রাইমারি ইয়ার্স প্রোগ্র্যাম) অনুযায়ী লেখাপড়া হবে। পরিবর্তী সময়ে দেশের বাইরে গিয়ে লেখাপড়া করতে হলে শিশুদের প্রথম থেকেই তৈরি হতে সাহায্য করবে এখানকার পাঠ্যক্রম বলেই বক্তব্য স্কুল কর্তৃপক্ষের।
শুধু লেখাপড়া শিখেই যে ব্যক্তিত্ব গঠন হয় না, সে কথা বিশ্বাস করেন প্রতিষ্ঠাতারা। তাই খেলা থেকে যোগ শিক্ষা, সঙ্গীত থেকে শিল্প— সব দিকে নজর থাকছে। আধুনিক ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া এই স্কুলের প্রাঙ্গণে নাটক, নাচ, গানের শিক্ষার জন্য আলাদা আলাদা ঘরের ব্যবস্থা আছে। মঞ্চ থেকে শুরু করে রকমারি বাদ্যযন্ত্র, সবই আছে সে সব কক্ষে। শরীরচর্চায় যেন ভাটা না পড়ে, তাই ছাদের উপরে রয়েছে টলটলে সুইমিং পুল। ভলি বল থেকে ব্যাডমিন্টন, নানা রকম খেলার শখও যাতে তৈরি হয় স্কুলে, সে দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তী প্রজন্মই দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের যত্নের সঙ্গে তৈরি করতে চান শিভিকা এবং শাশ্বত। শিভিকা নিজে লেখাপড়া করেছেন সিঙ্গাপুরের এক আন্তর্জাতিক স্কুলে। সেখানে যে সব সুবিধা পায় শিশুরা, সে সবই দিতে চান কলকাতার ছেলেমেয়েদেরও। শিভিকা এবং শাশ্বতর বক্তব্য, যত কাজই করা হোক না কেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কিছু না করলে, কাজ অসম্পূর্ণ মনে হয়। তাই অনেক দিন ধরেই মনের মতো করে একটি স্কুল তৈরির ভাবনা তাঁদের ছিল। সেই ভাবনাই বাস্তব রূপ পেল ডায়মন্ড হারবার রোডের এই ঠিকানায়। সেখানে খোলা মনে লেখাপড়া শিখে আনন্দে বেড়ে উঠবে শহরের শিশুরা, কথা দিচ্ছে শাশ্বত ও শিভিকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy