Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Sonagachi

Sex Workers in Sonagachi: যৌনকর্মীদের আইনি-সম্মানে আপ্লুত সোনাগাছি, সামাজিক ভাবে বড় পদক্ষেপ, মত সমাজকর্মীদের

যৌনপেশা বৈধতা পাওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। সুপ্রিম কোর্ট এই পেশাকে আইনসম্মত বলে ঘোষণা করায় আনন্দের স্রোত সোনাগাছিতে।

‘গাঙ্গুবাঈ’দের লড়াই পেল আইনি স্বীকৃতি।

‘গাঙ্গুবাঈ’দের লড়াই পেল আইনি স্বীকৃতি।

সুচন্দ্রা ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ১৯:৩৩
Share: Save:

আলিয়া ভট্টকে ‘গাঙ্গুবাঈ’-এর ভূমিকায় দেখে মুগ্ধ হয়েছেন অনেকে। যৌনপেশার সঙ্গে যুক্ত মহিলাদের সামাজিক অধিকারের প্রসঙ্গ ওঠায় হাততালিও দিয়েছেন। সঞ্জয়লীলা ভন্সালী এমন বিষয় নিয়ে ছবি করেছেন বলে বাহবা দিয়েছেন। কিন্তু সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে সেই হাততালিকেই আবার প্রশ্ন করেছেন। সে প্রশ্ন ঘুরপাক খেয়েছে কলকাতা শহরেও, যেখানে এ মহাদেশের বৃত্ততম যৌনপল্লি রয়েছে। সে পাড়ায় যেতে ক’জন স্বচ্ছন্দ? সে পাড়ায় কর্মরতা মহিলাদের পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়া উচিত কি উচিত নয়— তা নিয়ে স্পষ্ট মত ক’জনের রয়েছে?

যৌনকর্ম স্বীকৃতি পাওয়া উচিত কিনা, তা নয়ে বিতর্ক শুধু আমাদের দেশের নয়, ছড়িয়ে রয়েছে সর্বত্র। কিছু দেশে পেলেও বহু সমাজেই যৌনপেশা অবৈধ। তবে আজ, বৃহস্পতিবার দেশের শীর্ষ আদালত এমন একটি রায় দিয়েছে, যা আগামীতে বদলে দিতে পারে যৌনপেশা নিয়ে সামাজিক ধারণা। সুপ্রিম কোর্ট মনে করিয়েছে, আর পাঁচটি পেশার মানুষের মতো যৌনকর্মীদেরও সমমর্যাদা ও সমান অধিকার রয়েছে। এই বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি, স্বেচ্ছায় এই পেশায় আসা কর্মীদের কাজে অহরহ পুলিশি হস্তক্ষেপ এবং ফৌজদারি মামলা দায়েরের প্রবণতাতেও লাগাম পরিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, ‘‘যৌনকর্মীরাও আইনের চোখে সমান সুরক্ষার অধিকারী। যখন এটা স্পষ্ট যে, যৌনকর্মী এক জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং সম্মতি সাপেক্ষেই যৌনতা বিক্রি করছেন, তখন পুলিশকে অকারণ হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনও ফৌজদারি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যাবে না। সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ এই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার সুনিশ্চিত করেছে।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশির আলোড়ন সোনাগাছিতে। এত দিনের লড়াই যেন মান্যতা পেল, বলেই মত বহু যৌনকর্মীর। মিষ্টি খাওয়া, বিলি করা শুরু হয়েছে কলকাতার অন্যান্য যৌনপল্লিতেও। রাতারাতি পরিস্থিতি বদলে যাবে, সে আশা রাখেন না অধিকাংশেই। কিন্তু এত দিনের খাটনি যে ‘কাজ’ হিসাবে স্বীকৃতি পাচ্ছে, তাতেই যেন কিছুটা স্বস্তি। যৌনকর্মীদের অধিকার নিয়ে কাজে যুক্ত দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির পক্ষে মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা তো এটুকুই চাইছিলাম সেই কবে থেকে। এত দিনে লড়াই সার্থক হল। যৌনপেশার আইনি স্বীকৃতি আমাদের লড়াই অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেল।’’ তবে আরও অনেকটা পথ চলতে হবে, সে কথাও জানেন মহাশ্বেতা। সোনাগাছিতে যতটা সংগঠিত করা গিয়েছে যৌনকর্মীদের, ততটা সংগঠিত নন এ রাজ্যেরই বহু যৌনপল্লির কর্মীরা। তাই তাঁদের উপর জুলুম অনেক বেশি চলে। তিনি বলেন, ‘‘শুধু তো পুলিশি হেনস্থা নয়, স্থানীয় দুষ্কৃতীরাও কম উত্যক্ত করে না এই পেশায় যুক্ত মেয়েদের। যত দিন না যৌনকর্মীরা সংগঠিত হবে আরও বেশি করে, তত দিন বুঝি এ সব জুলুম থামানো সম্ভব হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE