যারা অবসাদে ভোগেন তারা ছবির ক্ষেত্রে নীলচে, গাঢ় রং ব্যবহার করেন।
আপনি কি ইনস্টাগ্রামে প্রায়ই ছবি পোস্ট করেন? কীসের ছবি পোস্ট করেন? কী ফিল্টার ব্যবহার করেন? লাইক বা কমেন্টই বা কত আসে? ভাবছেন রোজই তো কত কিছু পোস্ট করা হয়। কখনও লাইকে ভরে যায়, কখনও বিশেষ নজর কাড়ে না। কী এমন রয়েছে ইনস্টাগ্রামের ছবিতে? গবেষকরা জানাচ্ছেন, ইনস্টাগ্রামে কী পোস্ট করছেন, কী ভাবে পোস্ট করছেন, তা আপনার মনের প্রতিফলন। জানান দেয় আপনার মানসিক অবস্থার।
ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্ট কম্পিউটেশনাল স্টোরি ল্যাবের গবেষকরা ১৬৬ জন ইনস্টাগ্রাম ইউজারের ৪৩ হাজার ছবি নিয়ে প্রুফ অব কনসেপ্ট নামের একটি গবেষণা করেন। তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ইতিহাস নিয়েও পরীক্ষা করা হয়। দেখা গিয়েছে এদের মধ্যে অর্ধেক সংখ্যক ইউজার বিগত তিন বছরের মধ্যে অবসাদে ভুগেছেন।
এরপর গবেষকরা একটি অ্যালগরিদম তৈরি করেন। সেই অ্যালগরিদম অনুযায়ী তাদের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ছবির এলিমেন্ট, রং, ছবিতে থাকা অন্য মানুষদের সংখ্যা, ছবিতে কত জন লাইক, কমেন্ট করেছেন তার উপর গবেষণা করেন। দেখা যায় অবসাদে ভোগেন তারা ছবির ক্ষেত্রে নীলচে, গাঢ় রং ব্যবহার করেন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের ছবিতে কম মানুষ থাকেন।
আরও পড়ুন: ইনস্টাগ্রামে ক্রমাগত খাবারের ছবি থেকে বাড়ছে ইটিং ডিজঅর্ডার
অবসাদে ভোগা ইউজাররা সাধারণত এডিট ও আপলোড করার সময় ফিল্টারও ব্যবহার করেন না। এনহান্সমেন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে তারা ইঙ্কওয়াল ফিল্টার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছেন। যার সাহায্যে রঙিন ছবিকে সাদা-কালো করা যায়। যারা অবসাদে ভুগছেন না তাদের মধ্যে অন্য ইউজারদের মধ্যে ভ্যালেন্সিয়া ফিল্টার ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যায়।
এই গবেষণার ফল মনোবিদদের আরও গভীর গবেষণায় সাহায্য করবে বলে মনে করে সমীক্ষার মুখ্য গবেষক ক্রিস ড্যানফোর্থ। সাধারণ ভাবে মনোবিদরা বলে থাকেন অবসাদে ভোগা মানুষদের মধ্যে সমাজ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা, অন্ধকারের প্রতি ঝোঁক থাকে। ইনস্টাগ্রামের ছবিতে গাঢ় রঙের ফিল্টারের ব্যবহার, তাদের ছবিতে কম মানুষের উপস্থিতি সেই তত্ত্বকেই সমর্থন করছে।
আরও পড়ুন: ফেসবুক নয়, ইনস্টাগ্রামই আসল ভিলেন, বলছে সমীক্ষা
এই মুহূর্তে পৃথিবীর ৩০ কোটি মানুষ অবসাদে ভুগছেন। ড্যানফোর্ড মনে করেন, উন্নত প্রযুক্তি এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের সাহায্যে অবসাদ নির্ধারণ এবং তার চিকিত্সা অনেক সহজ হবে।
এর আগে ২০১৩ সালে টুইটের ভিত্তিতে সবচেয়ে সুখি ও সবচেয়ে দুঃখি রাষ্ট্রের তালিকা প্রকাশ করেছিল ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্ট।
ইপিজে ডেটা সায়েন্স জার্নালে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy