Advertisement
১৪ জুন ২০২৪
কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল

অব্যবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্যকর্তা

জেলায় এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ফিভার ক্লিনিকে ভিড় বাড়ছে। চার দিন আগে হাসপাতালে ছানির অস্ত্রোপচার করে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছিলেন আট জন রোগী। এই পরিস্থিতিতে, মঙ্গলবার কোচবিহার জেলা (এমজেএন) হাসপাতালে গিয়ে চরম অব্যবস্থা দেখে প্রকাশ্যেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বনাথ শতপথী। এ দিন হাসপাতাল সুপারের কাছে ছানি অপারেশনের পর রোগীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা নিয়ে রিপোর্টও চেয়ে পাঠান তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০১:২৩
Share: Save:

জেলায় এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ফিভার ক্লিনিকে ভিড় বাড়ছে। চার দিন আগে হাসপাতালে ছানির অস্ত্রোপচার করে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছিলেন আট জন রোগী। এই পরিস্থিতিতে, মঙ্গলবার কোচবিহার জেলা (এমজেএন) হাসপাতালে গিয়ে চরম অব্যবস্থা দেখে প্রকাশ্যেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বনাথ শতপথী। এ দিন হাসপাতাল সুপারের কাছে ছানি অপারেশনের পর রোগীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা নিয়ে রিপোর্টও চেয়ে পাঠান তিনি।

জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে নার্সিং স্টেশন, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান সহ হাসপাতাল চত্বরের বেহাল দশা দেখে সকলের সামনেই সুপারকে সতর্ক করেন তিনি। এমনকী, এক রোগিণীকে ডেকে তাঁর কাছে থাকা প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধের নাম দেখে ক্ষিপ্ত হন। প্রেসক্রিপশনের ছবি মোবাইলে তুলে নেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “এ সব কী ছেলেখেলা হচ্ছে? এমন চলতে পারে না। কোন চিকিৎসক এই প্রেসক্রিপশন করেছেন?” তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং হাসপাতাল সুপারকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মা ও নবজাতকের জন্য লেখা ওই প্রেসক্রিপশনে ন্যায্য মূল্যের দোকানে পাওয়া যায় না এমন কিছু ওষুধ লেখা রয়েছে দেখে ক্ষিপ্ত হন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, জরুরি না হলে ন্যায্য মূল্যের দোকানে যে ওষুধ মেলে তা লেখাই বাঞ্ছনীয়।

জেলা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে দিনহাটা মহকুমা হাসাপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যকর্তা। পরে সন্ধ্যায় তিনি বলেন, “জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এনসেফ্যালাইটিসে কোচবিহারের ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোচবিহার জেলা এমজেএন হাসপাতালে এনসেফ্যালাইটিস পরীক্ষার ব্যবস্থা ও বুধবারের মধ্যে আইসিইউতে কার্ডিয়াক মনিটর দ্রুত চালু করা হবে। তা চালু হলে রেফারের প্রবণতা অনেকটা কমানো যাবে।”

বিশ্বনাথবাবু কোচবিহার হাসপাতালে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) গিয়ে রোগীদের দেখে সেখান থেকে জরুরি বিভাগে যান। সেখানে রক্ত পরীক্ষার (ম্যালেরিয়া) জন্য রাখা সরঞ্জাম ঠিক রয়েছে কি না, তা দেখেন তিনি। কী ভাবে ওই পরীক্ষা করা হয়, তা নিয়ে এক নার্সকে প্রশ্ন করেন। ওই নার্স কোনও উত্তর দিতে না পারায় অবাক হয়ে যান তিনি। পরে এক জন প্রবীণ নার্স ওই প্রশ্নের উত্তর দেন। সে সময় স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “ভয় পাওয়ার কী আছে? আপনারা তো সব জানেন। ভাল কাজ করছেন। তা হলে ঘাবড়ে যাচ্ছেন কেন?” সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি নার্সিং স্টেশনে গিয়ে দেখতে পান, একটি পাত্রে ব্যবহার করা সিরিঞ্জ। তা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। কেন তা নষ্ট করে ফেলে দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্ন তোলেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, হাসপাতাল সুপার সেখানে ছিলেন। বিশ্বনাথবাবু দাঁড়িয়ে থেকে তা নষ্ট করার ব্যবস্থা করেন।

ন্যায্য মূল্যের দোকানে ওষুধের তালিকা টাঙানো না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। কর্মীরা ওষুধপত্রের বাক্সে চাপা পড়ে থাকা তালিকা বের করে স্বাস্থ্য অধিকর্তার হাতে দেন। তিনি তা খতিয়ে দেখে ওষুধের নমুনা দেখতে চান। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “দোকানে অর্ধেক ওষুধ রাখা হয় না। তাই তালিকা টাঙানো হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mjn hospital cooch behar mjn encephalitis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE