সম্প্রতি রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে প্রায় ৮০০ আসন কমিয়ে দিয়েছে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা এমসিআই। সেই সব আসন পুনরুদ্ধারে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে এ বার কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, আসন হারানোর এই সমস্যা শুধু পশ্চিমবঙ্গের নয়। এতে বিপাকে পড়েছে অন্যান্য রাজ্যও। তাই এ ব্যাপারে যা করার, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককেই করতে হবে।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, অন্যান্য রাজ্য থেকেও এমন আর্জি জমা পড়েছে বলে জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “পরিস্থিতি যা, তাতে দেশের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ছ’হাজারের মতো আসন কমে যাচ্ছে। সদ্য ভোটে ক্ষমতায় এসেছে নতুন সরকার। এই পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর জন্য কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে উঠেপড়ে লাগতেই হবে।”
আসন উদ্ধারের ব্যাপারে কতটা কী করতে পারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক?
দিল্লিতে এমসিআইয়ের এক কর্তা জানান, অনেক কিছুই করা সম্ভব। সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন এমসিআই-কে ফের সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিতে পরিদর্শনে যাওয়ার কথা বলতে পারেন। আবার কেন্দ্র নিজেরাই এমসিআইয়ের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আসন ফেরত দিতে পারে বা আসন ফেরানোর ব্যাপারে এমসিআই-কে রাজি করাতে পারে।
এমন নজির অতীতে আছে কি?
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “অতীতে এমন হয়েছে। এমসিআই সুপারিশ করার অধিকারী। সেই সুপারিশ মানা হবে কি না, সেই বিষয়ে শেষ কথা বলবে কেন্দ্রই।”
রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা এখন কেন্দ্রের কোর্টেই বল ঠেলে দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে চাইছেন। তা হলে কি পরিকাঠামোর উন্নতি না-করে এ ভাবেই পড়াশোনা চালানো হবে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে?
পরিকাঠামোর ঘাটতির অন্যতম হল চিকিৎসক-শিক্ষকের অভাব। রাজ্যের স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার বলেন, “শিক্ষক-চিকিৎসকের অভাব তো রাতারাতি মিটবে না। কিন্তু পরিকাঠামোর অন্য সব ব্যাপারে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতেই হবে। আমরা যে এ ব্যাপারে চেষ্টা চালাচ্ছি, এমসিআই এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে তা জানানো হয়েছে।” বিষয়টি নিয়ে সামগ্রিক আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা আজ, সোমবার রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন।
এমসিআইয়ের এথিক্যাল বা নীতি সংক্রান্ত কমিটির সদস্য সুদীপ্ত রায় জানান, পরিকাঠামোয় কিছু খামতি থাকলেও রোগী পরিচর্যার ক্ষেত্রে সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলি অনেক বেশ অভিজ্ঞ। “শিক্ষার মানের সঙ্গে আপস না-করে কী ভাবে মেডিক্যাল শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, আপাতত আমাদের লক্ষ্য সেটাই,” বলছেন তিনি।
মেডিক্যালের প্রথম কাউন্সেলিং আগামী ২৫ জুন। এই পরিস্থিতিতে এখনও এমন টানাপড়েন চলতে থাকায় পড়ুয়াদের মধ্যে বিভ্রান্তি ক্রমশ বাড়ছে। তবে সুশান্তবাবুর আশ্বাস, “প্রথম কাউন্সেলিংয়েই তো সব শেষ হয়ে যাবে না। গোটা জুলাই পড়ে রয়েছে। তাই এখনই ভরসা হারানোর মতো পরিস্থিতি আসেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy