প্রয়োজনীয় অ্যানেস্থেটিস্ট না থাকায় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে বন্ধ হতে চলেছে গলব্লাডার, হার্নিয়া, অ্যাপেডিক্স-সহ বেশ কিছু অপারেশন। আজ সোমবার থেকেই এই সব ‘কোল্ড অপারেশন’ (বিশেষজ্ঞদের মতে, যে অস্ত্রোপচার জরুরি ভিত্তিতে না করালেও চলে) অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজ্যে পালাবদলের পরে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালকে জেলাস্তরে উন্নীতকরণের কথা বলা হয়েছিল। তার এমন হাল কেন? সুপার দেবাশিস পাল বলেন, “হাসপাতালে একজন অ্যানেস্থেটিস্ট আসার কথা আছে। কিন্তু তাঁকে না পাঠিয়ে একজনকে তুলে নেওয়া হয়েছে। তাই সোমবার থেকে হাসপাতালে কোল্ড অপারেশন চালানো সম্ভব নয়।” তবে এর কোনও প্রভাব জরুরি অপারেশনে পড়বে না বলেই তাঁর দাবি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “অতিরিক্ত অ্যানেস্থেটিস্ট না আসা পর্যন্ত খড়্গপুর হাসপাতালে কোল্ড অপারেশন কিছুটা কমানো যেতে পারে। কিন্তু, বন্ধ করা যায় না।” বিষয়টি নিয়ে তিনি সুপারের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
বস্তুত, কেশিয়াড়ি, নারায়ণগড়, দাঁতন-সহ ১০টি ব্লক খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ওপরেই নির্ভরশীল। গত ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পরেই জেলার সব স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই এই হাসপাতালকে জেলাস্তরে উন্নীতকরণের কথা বলা হয়েছিল। নির্দেশিকাও এসেছিল হাসপাতালে। কিন্তু ওই পর্যন্তই! কেমন অবস্থা হাসপাতালের? হাসপাতাল সূত্রে খবর, নেই যথেষ্ট চিকিত্সক, নার্স। চালু হয়নি ট্রমা কেয়ার ইউনিট। এই অবস্থায় এক অ্যানেস্থেটিস্টকে বদলি করা হয়েছে সপ্তাহ খানেক আগেই। সুপারের দাবি, হাসপাতালে দু’জন অ্যানেস্থেটিস্টের পদ রয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় অপারেশনের চাপ বেশি থাকায় একজন অতিরিক্ত অ্যানেস্থেটিস্টকে ডেপুটেশনে নিয়োগ করা হয়েছিল। তিন জন দিয়ে কোনও রকমে চলছিল কোল্ড অপারেশনের কাজ। সুপারের অভিযোগ, গত সপ্তাহেই ডেপুটেশনে থাকা ওই চিকিত্সককে বদলি করায় সমস্যায় পড়েন বাকি দু’জন। এই পরিস্থিতিতে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত বহির্বিভাগের কোল্ড অপারেশনগুলি স্থগিত করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই বলে সুপারের অভিযোগ। এমন সিদ্ধান্তের কথা জানেন না বলেই দাবি রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্যের।
খড়্গপুর হাসপাতালে বহির্বিভাগে জটিল নানা অস্ত্রোপচার ছাড়াও সপ্তাহে গড়ে ১৭টি করে অস্থি, গলব্লাডার, হার্নিয়া, অ্যাপেডিক্স-সহ তুলনায় কম জরুরি নানা অপারেশন হয়। প্রতিদিনই দশটা থেকে দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত চলে এই কোল্ড অপারেশন। তা বন্ধ হয়ে গেলে বিপাকে পড়তে হবে বহু রোগীকে। তবে চোখের অপারেশনে অ্যানেস্থেটিস্টের প্রয়োজন না হওয়ায় তা চলবে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy