Advertisement
২১ মে ২০২৪

প্রায় চার বছর রাতে ওষুধ মেলে না শহরে

রাতে অসুস্থ হলেই বিপদ। কোথায় ওষুধ পাওয়া যাবে তা নিয়ে দুশ্চিতার অন্ত নেই ইসলামপুরের বাসিন্দাদের। ওষুধের জন্য দোকানে দোকানে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় রোগীর আত্মীয়দের। ইসলামপুর শহরে প্রায় কয়েক মাস ধরেই বন্ধ রাত্রিকালীন ওষুধ পরিষেবা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪৭
Share: Save:

রাতে অসুস্থ হলেই বিপদ। কোথায় ওষুধ পাওয়া যাবে তা নিয়ে দুশ্চিতার অন্ত নেই ইসলামপুরের বাসিন্দাদের। ওষুধের জন্য দোকানে দোকানে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় রোগীর আত্মীয়দের।

ইসলামপুর শহরে প্রায় কয়েক মাস ধরেই বন্ধ রাত্রিকালীন ওষুধ পরিষেবা। এর আগে শহরে হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় রাতে জরুরি ওষুধ বিক্রি করতেন দু’এক জন ব্যবসায়ী। কয়েক মাস ধরে তাও বন্ধ। ফলে রাতবিরেতে অসুস্থ রোগীকে নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। ইসলামপুরের এক কলেজ ছাত্র কমল বিশ্বাস বলেন, “সম্প্রতি এক দিন মাঝরাতে হঠাত্‌ বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাতে ওষুধ আনতে গিয়ে দেখি শহরের সব দোকানই বন্ধ। ডাকাডাকির পরেও কোনও দোকানে সাড়া পাইনি। শহরের বুকে রাতে ওষুধ পরিষেবা নিয়ে এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এর আগে আমার হয়নি।”

ইসলামপুরের মহকুমাশাসক ভিভু গোয়েল বলেন, “ওষুধের দোকানগুলি বেসরকারি। তাই তাদের কাজের সম্পর্কে বলা সম্ভব নয়। হাসপাতালে যাতে ২৪ ঘণ্টা ওষুধ পরিষেবা দেওয়া যায়, তার জন্য কর্তৃপক্ষকে বলেছি।”

টানা প্রায় ৪ বছর রাত্রিকালীন পরিষেবা চললেও এখন তা বন্ধ কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,শহরের হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার কয়েকটি ওষুধের দোকানে রাতে ওষুধ পাওয়া যেত। ওষুধ ব্যবসায়ীরা জানান, ২০১০ সালে ইসলামপুরের তত্‌কালীন মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টের পক্ষ থেকে এলাকার কয়েকটি দোকান থেকে রাতে ওষুধ বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রাতে নিরাপত্তার কারণে সেই সব দোকানের দরজা বন্ধ থাকলেও, দোকানের কর্মীদের ডাকলেই ওষুধ পেতেন রোগীর আত্মীয়রা। এমনকি দোকানের বাইরে মালিকের ফোন নম্বরও দেওয়া থাকত। তবে বর্তমানে সেই পরিষেবাটুকুও পাচ্ছেন না রোগীর আত্মীয়েরা। রাতে বেশিরভাগ দোকানেরই সাটার নামিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন মালিকেরা। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, তাঁরা হাসপাতালে জননী সুরক্ষার ওষুধ দিতেন। তাই রাতে থাকতেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জননী সুরক্ষার টাকা না দেওয়ায় তাঁরা আর সেই পরিষেবা প্রদানের বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি। তাই রাতেও দোকান বন্ধ রেখেছেন। তা ছাড়া রাতে পরিষেবা দিতে দু’জন ফার্মাসিস্টেরও প্রয়োজন হয়। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক সুবোধ ঘোষ বলেন, “ওই এলাকাতে রাত্রিকালীন পরিষেবা বন্ধ রয়েছে বলে শুনেছি। এলাকায় আমাদের যে সদস্যেরা রাত্রিকালীন পরিষেবা দিতেন, তাঁরা হাসপাতালকে জননী সুরক্ষার ওষুধ প্রদান করেও টাকা পাননি। সেই কারণে তাঁরা রাত্রিকালীন পরিষেবা দিচ্ছেন না। এ ছাড়াও এলাকাতে নিরাপত্তারও একটি বিষয় রয়েছে। সব কিছু সমস্যা মিটে গেলে এলাকার নেতৃত্বকে বলে সেই পরিষেবার বিষয়টি চালু করা হবে।” নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, “বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

islampur medicine night
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE