কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন মায়েরা। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
ভাইরাল নিউমোনিয়ার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ায় কোচবিহারে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এদিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে দু’জন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সককে কোচবিহারে পাঠানোর নির্দেশ জারি করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা বলেন, চিকিত্সাধীন শিশুদের কথা ভেবে অপেক্ষাকৃত বড় ওয়ার্ডে নতুন করে ৩০টি শয্যার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকেও দু’জন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক কোচবিহার জেলা হাসপাতালে আসছেন। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ওই চিকিত্সকেরা জেলায় থাকবেন। এতে সর্বক্ষণ শিশুদের দিকে নজর রাখার কাজে সুবিধে হবে। জেলার অন্য হাসপাতালগুলিকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। শুক্রবার কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন শিশুদের দেখতে গিয়েছিলেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গাদাগাদি অবস্থা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। শিশুদের অভিভাবকেরাও চিকিত্সক সংখ্যার স্বল্পতা নিয়ে অভিযোগ জানান। তারপরেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে পরিস্থিতির কথা জানিয়ে শিশু বিশেষজ্ঞদের কোচবিহারে পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান তিনি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, ভাইরাল নিউমোনিয়ার উপসর্গ নিয়ে বর্তমানে ৭৭ জন শিশু এই হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে অবস্থার অবনতি হওয়ায় একজন শিশুকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি শিশু অবশ্য সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছে। কোচবিহার জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “চিকিত্সাধীন শিশুদের চিকিত্সায় সবরকম নজর রাখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের জেলায় পাঠানোর ব্যাপারেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী উদ্যোগ নিয়েছেন। শিশুদের জন্য ওয়ার্ডের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি, চিকিত্সক ও নার্সের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে।” হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুব্রত হালদার বলেন,“ চিকিত্সার ব্যাপারে আমরা কোনও রকম খামতি রাখতে চাইছিনা।”
গত কয়েকদিন ধরে কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকা থেকে জ্বর,শ্বাসকষ্ট, সর্দি,কাশির উপসর্গ নিয়ে শিশুদের চিকিত্সার জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে জেলা হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৭০ জন কে ভর্তি করা হয়। আক্রান্তদের জন্য দুটি নতুন ওয়ার্ডও চালু করেও সমস্যা মিটছিলনা। শুক্রবার সকালে আরও কয়েকটি শিশুকে ভর্তি করা হয়। অবস্থা সামাল দিতে আরও একটি নতুন ওয়ার্ড চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজেও অন্তত ৫০ জন শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy