Advertisement
০৩ মে ২০২৪

মালদহ মেডিক্যাল থেকে নীলরতনে ৩০ লক্ষের যন্ত্র

মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাল্টি জিম, ডিজিটাল ট্র্যাকশন ৩০টি দামি যন্ত্র বসানোর জন্য এক হাজার বর্গফুট জায়গা চেয়েছিলেন ফিজিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসকেরা। কিন্তু সেই মেশিন বসানোর জায়গা হয়নি। তাই এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বাক্স বন্দি হয়ে পড়ে থাকা ৩০ লক্ষাধিক টাকার যন্ত্রপাতি কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পীযূষ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৩
Share: Save:

মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাল্টি জিম, ডিজিটাল ট্র্যাকশন ৩০টি দামি যন্ত্র বসানোর জন্য এক হাজার বর্গফুট জায়গা চেয়েছিলেন ফিজিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসকেরা। কিন্তু সেই মেশিন বসানোর জায়গা হয়নি। তাই এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বাক্স বন্দি হয়ে পড়ে থাকা ৩০ লক্ষাধিক টাকার যন্ত্রপাতি কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের আরও ৬০ লক্ষাধিক টাকার যন্ত্রপাতি কলকাতার ইন্সটিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের মার্চে ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের জন্য প্রায় এক কোটি টাকার ৩৪টির বেশি যন্ত্র কেনা হয়েছিল।

এ ব্যাপারে রাজ্যের স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মালদহ মেডিক্যাল কলেজে জায়গার অভাবে মেশিনগুলি দীর্ঘদিন পড়ে থাকতে থাকতে নষ্ট হচ্ছিল। সেই কারণে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে কলকাতায় ফিজিক্যাল মেডিসিনের যন্ত্রগুলি পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ১২টি যন্ত্র কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।

কিন্তু জায়গা পাওয়া গেল না কেন? রোগী কল্যাণ সমিতিও তো জায়গার ব্যবস্থা করে দিতে পারত। কিন্তু এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। তিনি বলেন, “রোগী কল্যাণ সমিতিতে আলোচনা না করে কী করে অধ্যক্ষ এত বড়ো সিদ্ধান্ত নিলেন? মেশিনগুলি কলকাতায় পাঠানোর আগে অধ্যক্ষ তো আমাকে জানাতে পারতেন। বিষয়টি আগে জানলে মালদহ মেডিক্যাল কলেজেই ওই যন্ত্রগুলি বসানোর জায়গার ব্যবস্থা করতাম। আমি অধ্যক্ষকে কাছে জানতে চাইবো কেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজের মেশিন আমাকে না জানিয়ে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।”

জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপকুমার মণ্ডলেরও কথায়, “মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিনের দামি দামি যন্ত্রগুলি কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ পাঠানো হবে বলে রোগী কল্যাণ সমিতিতে কোনও আলোচনাই হয়নি।” অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “উপর থেকে নির্দেশ এসেছে তাই যন্ত্রগুলি কলকাতায় পাঠাতে হয়েছে।”

মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান অঞ্জনকুমার ঘোষ বলেন, “আমাদের বিভাগের জন্য কেনা মেশিনগুলি বসানোর জন্য অধ্যক্ষের কাছে এক হাজার বর্গফুট জায়গা চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই জায়গা পাইনি। জায়গা পেলে আজকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য কেনা যন্ত্রগুলি কলকাতায় অন্য মেডিক্যাল কলেজে যেত না।” তবে জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির এক্স অফিসিও সেক্রেটারি মহম্মদ আব্দুর রসিদ বলেন, “এই বিষয়টি চিকিৎসা শিক্ষার অংশ। সুতরাং ফিজিক্যাল মেডিসিনের যন্ত্র পাঠানোর বিষয়টি জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা হওয়াটা প্রাসঙ্গিক নয়। সেই কারণে রোগী কল্যাণ সমিতিতে এই বিষয়টি আলোচনা করা হয়নি।”

ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের বাকি যন্ত্রগুলি মালদহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে চলে যাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছে। কিন্তু মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আর একটি যন্ত্রও কলকাতায় পাঠানো হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। তিনি বলেন, “মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য কেনা মেশিন কেন অন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে? এমন চেষ্টা যে কোনও মূল্যে রুখবই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE