তাঁর কথা শুনে তখন হাসছে গোটা আদালত-কক্ষ। এমনকী বিচারকও। হাসছিলেন ‘হাই-প্রোফাইল’ অভিযুক্তও। ভোজপুরি টানে বিচারককে বললেন, “হুজুর এখন ঘোর কলি। ভাল মানুষের জমানা আর নেই। সমাজে কপট মানুষেরই দাম। আমি যোগী, তাই কলুর বলদের মতো ঘুরছি।”
তিনি লালুপ্রসাদ। রাজনীতির ময়দানে যে ভাবে ভাষণ দেন, আজ রাঁচির বিশেষ সিবিআই আদালতে দাঁড়িয়ে অনেকটা তেমনই করলেন আরজেডি শীর্ষ নেতা। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির দেওঘর ট্রেজারি মামলায় তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করতে তিনি রাঁচিতে এসেছিলেন। লালুর কাছে ৩১টি প্রশ্নের জবাব জানতে চান বিচারক অরুণকুমার রাই। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে উত্তর দিচ্ছিলেন লালু। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত চলে প্রশ্নোত্তর-পর্ব। বিচারকের প্রতিটি প্রশ্নেই লালু টেনে আনেন রাজনীতির প্রসঙ্গ।
আরজেডি শীর্ষ নেতা বলতে থাকেন, “আমি বিহারের পিছনের সারির মানুষকে এগিয়ে আনতে চেয়েছিলাম। খৈনির নেশা কাটিয়ে বিহারের যুবকদের পড়াশোনার দিকে টেনে এনেছিলাম। আমার জমানায় আইএএস পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল বিহারের পড়ুয়াই। বিরোধীদের তা পছন্দ হয়নি।” বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিচারককে বলেন, “আমার বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি চালিয়ে কিছু পায়নি। রাবড়িদেবীকেও ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। এখন তো রাম-রাজ্য চলছে। দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিক।”
লালুর কাছে বিচারক মামলা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে বললেও, রাজনীতির কথাতেই ফিরছিলেন লালু। তিনি বলেন, “এক সময় যাঁদের সাহায্য করেছি, তাঁরাই আমাকে ফাঁসিয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি আমার অন্যতম বিরোধী এক জনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বাঁচিয়েছি। কারণ আমি খুব দয়ালু।”
পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির চাইবাসা ট্রেজারি মামলায় ইতিমধ্যেই পাঁচ বছর কারাদণ্ডও হয়েছে লালুর। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত। আর্থিক-দুর্নীতি কাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে অন্য মামলাগুলি বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছিলেন লালু। তা আগেই খারিজ করে দিয়েছে বিশেষ সিবিআই আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy