গুরমিতের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করছেন জেলের চিকিৎসকরা।
জেলে ভাল করে খাচ্ছে না, ঘুমচ্ছে না গুরমিত ‘বাবা’ রাম রহিম। কখনও পায়চারি, কখনও অস্থির অস্থির ভাব। কখনও নিজের মনেই বিড়বিড় করে চলা। রোহতক জেলে রাম রহিমকে পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা বলছেন, এই অস্থিরতার প্রধান কারণ যৌনতায় ‘বাবা’র তীব্র আসক্তি। ডেরা সচ্চা সৌদার সাম্রাজ্যে এতদিন চাহিদা মতো নিজস্ব ‘প্রয়োজন’ মিটিয়েছে রাম রহিম। কিন্তু প্রতি দিনের সে অভ্যাসে ছেদ পড়েছে এ বার। জেলে দীর্ঘ দিন যৌনসুখ না পাওয়ার কারণেই রাম রহিম এমন অস্থির হয়ে পড়ছে বলে জানালেন চিকিৎসকরা। এ জন্য গুরমিতের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান রোহতক জেলের চিকিৎসকরা। শীঘ্রই চিকিৎসা শুরু না হলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ১৪ সাধু ‘জাল’, তালিকা আখড়ার
জেল সূত্রের খবর, ‘বাবা’ সম্ভবত চিকিৎসকদের তাঁর এই যৌন সমস্যার কথা বলেছেন। এবং এই সমস্যার ফলেই যে তাঁর শরীর খারাপ হচ্ছে তাও বলেছেন।
‘বাবা’র এই অস্থিরভাবের পিছনে মাদকাসক্তি রয়েছে কি না, তাও অবশ্য খতিয়ে দেখছেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি সিবিআই আদালতের অন্যতম সাক্ষী প্রাক্তন ডেরা সদস্য গুরদাস সিংহ তোর ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, মদ ও ড্রাগেও আসক্ত রাম রহিম। ১৯৮৮ থেকে নিয়মিত মদ্যপান করে সে। গুরদাসের দাবি, নিয়মিত এনার্জি ড্রিঙ্ক ও সেক্স টনিক খেত গুরমিত।
ডেরা সচ্চা সৌদার ভিতরে চলছে তল্লাশি
১৯৯০ সালে সিবিআই আদালতে গুরমিত দাবি করেছিল সে নপুংসক। এমনকী স্ত্রী ছাড়া অন্য কোনও মহিলার সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক নেই বলেও সে সময় দাবি করেছিল সে। তখন প্রশ্ন ওঠে তা হলে কী ভাবে দুই মেয়ে ও এক ছেলের বাবা হতে পারে রাম রহিম? সে সময় রাম রহিমের পুরুষত্ব পরীক্ষার দাবিও উঠেছিল। কিন্তু পরে গোটা ব্যপারটাই ধামা চাপা পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: রাম রহিমের ডেরায় সাধ্বীনিবাসেই সুড়ঙ্গের মুখ!
এ দিকে জোড়া ধর্ষণ কাণ্ডে ‘রকস্টার বাবা’ গুরমিত রাম রহিম সিংহ জেলে যাওয়ার পর থেকে একের পর এক ‘কেউটে’ বেরিয়েই চলেছে ঝুলি থেকে। রাম রহিমের গ্রেফতারির পর সিরসার ডেরায় হানা দিয়ে কখনও পাওয়া গিয়েছে গুপ্ত সুড়ঙ্গের হদিস, কখনও মিলেছে বিকল্প মুদ্রা তো কখনও বোমা তৈরির কারখানা। তখনই অভিযোগ ওঠে, আশ্রমের বহু কর্মীকে খুন করে পুঁতে দেওয়া হয়েছে ডেরা চত্বরেই। ডেরার ‘সচ কহুঁ’ পত্রিকায় ঘুরপথে কার্যত সে কথা স্বীকারও করে নেওয়া হয়েছিল। জানানো হয়, ভক্তরা নিজ ইচ্ছায় দেহ দান করতেন রাম রহিমের কাছে। তাঁদেরই পুঁতে দেওয়া হত। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, সেই সমস্ত মৃতদেহের কোনও নথি নেই ডেরার দফতরে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিশেষ তদন্তকারী দলের অনুমান, ডেরায় অনেককে অবৈধ ভাবে গর্ভপাতও করানো হত। গর্ভপাত করানোর নিজস্ব নিয়মও ছিল ডেরার। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, সেই নিয়মেও ছিল বিস্তর ফাঁক।
কিছু দিন আগে অভিযোগ উঠেছিল ডেরা থেকে এলাকার হাসপাতালে নাকি বেআইনি ভাবে লাশ পাচার হয়েছিল। এমনকী এই সমস্ত মৃতদেহের চামড়া দিয়ে রাম রহিম অবৈধ চামড়ার ব্যবসাও ফেঁদে বসেছিল বলে অনুমান পুলিশের।
ছবি: পিটিআই
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy