Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নয়া কর জমানার শুরুতেই চড়া সুর মোদীর

হুঁশিয়ারি দেওয়ার জন্য মোদী আজ বেছে নেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ)-দের মঞ্চকে। তাঁর গর্জনের নিশানায় ছিলেন সিএ-রাও। মোদীর বক্তব্য, দেশের ২ কোটি লোক বিদেশ ভ্রমণ করেন। অথচ মাত্র ৩২ লক্ষ ভারতীয় ঘোষণা করেন যে, তাঁদের আয় ১০ লক্ষ টাকার উপরে।

চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ)-দের মঞ্চে চড়া সুর মোদীর। ছবি: পিটিআই।

চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ)-দের মঞ্চে চড়া সুর মোদীর। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৩
Share: Save:

গোটা দেশে নোট বাতিলের মতো অস্থিরতা তৈরি হয়নি জিএসটির চালুর পরে। সেই কারণে প্রথম দিনেই আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হুঁশিয়ারি দিলেন কর-চুরি ও কালো টাকা নিয়ে। মোদীর কথায়, ‘‘দেশকে এত দিন যারা লুটেছে, এ বার তাদের মূল্য চোকাতে হবে।’’

প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের মতে, গত কাল মধ্যরাতে জিএসটি চালুর পরে আজ সকাল থেকেই গোটা দেশের পরিস্থিতির উপরে নজর রেখে যাচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর পরে সন্ধেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের জড়ো করে দিল্লিতে এক সম্মেলনে তিনি ঘোষণা করলেন, নোট বাতিলের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩ লক্ষের বেশি সংস্থা সন্দেহের ঘেরাটোপে এসেছে। গত কাল মধ্যরাতে জিএসটির চালুর ৪৮ ঘণ্টা আগে এক ঝটকায় অ-নথিভুক্ত করা হয়েছে ১ লক্ষের বেশি সংস্থা। কালো টাকা লুকোনো বা হাওয়ালা কারবারে যুক্ত, এমন ৩৭ হাজার সংস্থাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, তাঁর সরকার আসার পরে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের টাকা রাখাও কমে গিয়েছে ৪৫%। দু’বছর পর থেকে সুইস ব্যাঙ্কের তথ্য নিয়মিত আসতে শুরু করলে নিস্তার নেই কারও।

হুঁশিয়ারি দেওয়ার জন্য মোদী আজ বেছে নেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ)-দের মঞ্চকে। তাঁর গর্জনের নিশানায় ছিলেন সিএ-রাও। মোদীর বক্তব্য, দেশের ২ কোটি লোক বিদেশ ভ্রমণ করেন। অথচ মাত্র ৩২ লক্ষ ভারতীয় ঘোষণা করেন যে, তাঁদের আয় ১০ লক্ষ টাকার উপরে। সিএ-দের একাংশের মদত ছাড়া এই অনিয়ম চলতে পারে না। তাই তাঁদেরও সততার পথে আসতে হবে।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে জিএসটি আগামী সপ্তাহে

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘‘নোট বাতিলের পরেও সিএ-দেরই একাংশ বিপথে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।’’ তাঁর প্রশ্ন, গত ১১ বছরে অনিয়মের কারণে কেন মাত্র ২৫ জন সিএ-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো? এমন অনিয়মের ১৪০০ মামলা যে এখনও বকেয়া, তা-ও উল্লেখ করেন তিনি। মোদীর মতে, কোনও সংস্থার অডিট ঠিক মতো না হলে তার উপরে ভরসা করে যে গরিবেরা বাজারে পয়সা খাটান, তাঁদের টাকা ডুবে যায়। এটা গরিবদের প্রতি অবিচার।

জিএসটি চালুর পরেও দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ হচ্ছে বটে। কিন্তু নোট বাতিলের পরে যতটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তেমন পরিস্থিতি নেই বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দিল্লির ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা প্রবীণ খান্ডেলওয়ালও বলেন, ‘‘এ দিনটা ছিল অন্য দিনের মতোই।’’ অর্থ মন্ত্রক আগেই কড়া বার্তা দিয়েছে, মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদেরও জিএসটি ব্যবস্থায় আসতে হবে। কেন্দ্রের সেই মনোভাবও আজ চড়া সুরে বুঝিয়ে দিলেন মোদী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE