Advertisement
২০ মে ২০২৪

সোপিয়ানে আক্রান্ত সেনা, সংঘর্ষে নিহত গাড়িচালক

সোপিয়ানের ফল বাগিচায় জঙ্গিদের বড় দলের গতিবিধির ভিডিও দেখা গিয়েছিল আগেই। সেই জঙ্গিদের খোঁজে দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ানে আজ বড় ধরনের অভিযানে নেমেছিল সেনা, সিআরপিএফ ও পুলিশের বাহিনী।

প্রস্তুত: জঙ্গি দমন অভিযানে ভারতীয় সেনা। কাশ্মীরের সোপিয়ানে বৃহস্পতিবার। ছবি: এফপি।

প্রস্তুত: জঙ্গি দমন অভিযানে ভারতীয় সেনা। কাশ্মীরের সোপিয়ানে বৃহস্পতিবার। ছবি: এফপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

সোপিয়ানের ফল বাগিচায় জঙ্গিদের বড় দলের গতিবিধির ভিডিও দেখা গিয়েছিল আগেই। সেই জঙ্গিদের খোঁজে দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ানে আজ বড় ধরনের অভিযানে নেমেছিল সেনা, সিআরপিএফ ও পুলিশের বাহিনী। তার মধ্যেই সেনার টহলদারি দলের উপরে হামলা চালাল জঙ্গিরা। তাতে আহত হয়েছেন চার সেনা। নিহত হয়েছেন এক স্থানীয় বাসিন্দা। পাশাপাশি কুলগামের দু’টি এলাকায় জনা ছয়েক জঙ্গিকে বাহিনী ঘিরে ফেলেছে বলে দাবি সেনার।

বুরহানের মৃত্যুর পরে দক্ষিণ কাশ্মীরে প্রশাসন একেবারেই দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে মেনে নিচ্ছেন রাজ্য ও কেন্দ্রের কর্তারাই। সেখানে জঙ্গিরা কার্যত বিনা বাধায় ঘোরাফেরা করছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। সোপিয়ানের বিভিন্ন বাগিচায় জঙ্গিদের গতিবিধির ভিডিও সম্প্রতি আপলোড হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফলে ওই এলাকায় জমি ফিরে পেতেই বড় অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে সেনা সূত্রে খবর। এক দশকের মধ্যে কাশ্মীরে এত বড় অভিযান কখনও হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে।

আজ ‘অপারেশন ক্লিন আপ’-এর ছক অনুযায়ী সোপিয়ানের ১২টি গ্রাম ঘিরে ফেলে বাহিনী। তার পর প্রতিটি বা়ড়িতে তল্লাশি শুরু হয়। নব্বইয়ের দশকের পর থেকে এমন তল্লাশি হয়নি কাশ্মীরে। তুর্কাওয়াঙ্গন গ্রামে পাথর ছোড়ার বিক্ষিপ্ত একটি ঘটনা ছাড়া প্রথমে কোনও বাধা পায়নি বাহিনী। পুরো এলাকা এক বার তল্লাশির পরে ফের বিপরীত দিক থেকে এক দফা তল্লাশি চালানো হয়। সামরিক পরিভাষায় এই কৌশলের নাম ‘রিভার্স সুইপ’। প্রথম বার তল্লাশির সময়ে কোনও জঙ্গি বাহিনীর বেষ্টনী ভেদ করে পালালে এই কৌশলে তাদের পাকড়াও করা যায়। তল্লাশির পাশাপাশি চালকহীন ড্রোন বিমান ও হেলিকপ্টার থেকে নজরদারি চলে।

আরও পড়ুন: হিরের টুকরো যতীন যেন দ্বিতীয় মাল্য

কিন্তু এর পরেই সোপিয়ানে সেনার এক টহলদারি দলের উপরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। চার জওয়ান আহত হন। একটি টাটা সুমো গা়ড়িতে যাচ্ছিলেন জওয়ানরা। সেটির চালক স্থানীয় যুবক নাজির আমাদের নিহত হয়েছেন। সেনা সূত্রে খবর, এ দিন নিয়ম ভেঙে আটটি সুমো ভাড়া করেছিলেন স্থানীয় কম্যান্ডার। এই হামলার দায় নিয়েছে হিজবুল মুজাহিদিন। সোপিয়ানের পাশের এলাকা কুলগামেও তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল সেনা। তাদের দাবি, সেখানে দু’টি জায়গায় জনা ছয়েক জঙ্গিকে ঘিরে ফেলেছে বাহিনী। কিন্তু জওয়ানদের লক্ষ করে পাথর ছুড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।

সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত অবশ্য তল্লাশি অভিযানকে প্রকাশ্যে বেশি গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁর দাবি, কাশ্মীরে এমন অভিযান বেশ কিছু দিন ধরেই চলছে। দক্ষিণ কাশ্মীরে জঙ্গি গতিবিধি বেড়েছে। চার দিন আগে কুলগামে পাঁচ জন পুলিশ-সহ সাত জনকে খুন করেছে জঙ্গিরা। ফলে এই তল্লাশি জরুরি ছিল। দক্ষিণ কাশ্মীরে তেমন গোলমাল না হলেও উত্তরে বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান ছাত্ররা। পুলওয়ামার একটি কলেজে বাহিনীর চেকপোস্ট বসানোর প্রতিবাদে ছাত্র বিক্ষোভে সম্প্রতি উত্তাল হয়েছিল কাশ্মীর। আজ উত্তর কাশ্মীরের সোপোরে ফের পথে নামেন পড়ুয়ারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anti-terrorism operation Shupiyan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE