অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি নিয়মবহির্ভূত ভাবে একটি কোম্পানিকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন। আর সেই মামলাতেই মঙ্গলবার সকালে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের বাড়িতে হানা দিল সিবিআই। পি চিদম্বরম যদিও জানিয়েছেন, সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সিবিআইকে ব্যবহার করছে।
শুধু বাবা নয়, পি চিদম্বরমের ছেলে কার্তি চিদম্বরমের চেন্নাইয়ের বাড়িতেও এ দিন তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থা। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে ছাড়পত্রের ক্ষেত্রে একটি বেসরকারি মিডিয়া কোম্পানিকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ২০০৮ সালে সুবিধা পাইয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ওই কোম্পানির সঙ্গে তত্কালীন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের ছেলের যোগ ছিল বলে সিবিআইয়ের দাবি। বাবার প্রভাব খাটিয়েই অর্থমন্ত্রকের ছাড়পত্র আদায় করেছিলেন কার্তি। আর এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তারা দুর্নীতি এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে কার্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। শুধু কার্তি নয়, ওই একই মামলায় নাম রয়েছে শিনা বরা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়, দু’টি বেসরকারি সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের কয়েক জন পদস্থ কর্তারও। এ দিন শুধু চিদম্বরম নয়, দিল্লি, মুম্বই, পটনা, গুরুগ্রাম— দেশ জুড়ে ডজনখানেক জায়গায় হানা দিয়েছে সিবিআই।
আরও খবর
ইস্টবেঙ্গলের হারের জন্যই কি এ ভাবে ফেরার ‘অসম্মান’?
যদিও চিদম্বরম জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে সরকার একশোর বেশি কোম্পানিকে ছাড়পত্র দিয়েছিল। পাঁচটি সচিবালয় সিদ্ধান্ত নিয়েই ওই ছাড়পত্র দিয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই অভিযোগ ওঠেনি। না সেই সচিবালয়ের বিরুদ্ধে, না মন্ত্রকের বিরুদ্ধে, এমনকী তাঁর বিরুদ্ধেও। তাঁর দাবি, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআইকে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ভাবে এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই ব্যবহার করছে। আর সে কারণেই ছেলে এবং ছেলের বন্ধুরা-সহ তাঁকে নিশানা করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার আমাকে নীরব করে দিতে চাইছে। চাইছে আমার লেখা বন্ধ করতে। ঠিক যেমন ভাবে, অন্য দলের রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক এবং সামাজিক সংগঠনগুলির মুখ বন্ধ করতে চাইছে। তবে, আমি মুখ এবং লেখা কোনওটাই বন্ধ করব না।’’ বিজেপি যদিও চিদম্বরমের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
যে মিডিয়া কোম্পানিকে সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেই কোম্পানির তৎকালীন ডিরেক্টর ছিলেন ইন্দাণী। অন্য একটি সংস্থার প্রাক্তন ডিরেক্টর ছিলেন পিটার। আর এই দুই কোম্পানির সঙ্গে যোগ ছিল কার্তির নিজস্ব কোম্পানি মেসার্স চেস ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের। গোয়েন্দাদের দাবি, কার্তির কোম্পানির কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়েছিল। এর পরেই ওই কোম্পানি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের অনুমোদন পায়। প্রাথমিক ভাবে ৪ কোটির অনুমোদন পেলেও আসলে তারা পেয়েছিল প্রায় ৩০৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ। এই মামলায় তত্কালীন মনমোহন সরকারের অর্থমন্ত্রী ভূমিকাও খতিয়ে দেখবে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy