Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্ষমা চাইলেন জুকেরবার্গ, ভারতে পিছু হঠল ফেসবুক

অবশেষে পিছু হঠল ফেসবুক। ভারত থেকে তাদের বহু বিতর্কিত প্রকল্প ফ্রি বেসিকস সরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করল এই সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৫:২৮
Share: Save:

অবশেষে পিছু হঠল ফেসবুক। ভারত থেকে তাদের বহু বিতর্কিত প্রকল্প ফ্রি বেসিকস সরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করল এই সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট।

চলতি সপ্তাহেই নিরপেক্ষ ইন্টারনেট পরিষেবা বা নেট নিউট্রালিটির পক্ষেই মত দিল টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)। তাদের এই সিদ্ধান্তের ফলে আসলে খারিজ হয়েছে ফেসবুকের ‘ফ্রি বেসিক’ তত্ত্ব। নেট নিউট্রালিটির মূল কথাই হল ইন্টারনেটে সব ধরনের পরিষেবার জন্য একই মাসুল হার ধার্য করা। সোমবার তার সপক্ষেই প্রস্তাব দেয় ট্রাই। অর্থাৎ কোনও টেলি পরিষেবা সংস্থা আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশনের জন্য আলাদা আলাদা মাসুল ধার্য করতে পারবে না। কোনও সংস্থা বা ব্যক্তি বিশেষ সুবিধাও পাবে না। বরং নেট পরিষেবা পেতে এক বার টাকা দিলেই সব ধরনের সাইট ও অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন গ্রাহক। ট্রাইয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী এর অন্যথা হলে প্রতি দিন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে সংস্থাকে।

রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্স-এর সঙ্গে জোট বেঁধে কিছু নির্দিষ্ট সাইট নিখরচায় ব্যবহারের সুবিধা দেওয়ার প্রকল্পের কথা বেশ কিছু দিন আগে ঘোষণা করে ফেসবুক। ফেসবুকের এই ফ্রি বেসিক প্রকল্পের পক্ষে-বিপক্ষে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বিতর্কের ঝড় ওঠে। একটা অংশের মত ছিল, এই ফ্রি বেসিকের মাধ্যমে ফেসবুক নিজেই নেট নিউট্রালিটির শর্ত ভাঙছে। কারণ, বেসিক কিছু পরিষেবা দিলেও তার বাইরে কোনও সাইট ব্রাউজ করতে গেলে গুনতে হবে অতিরিক্ত মাসুল। আর এখানেই শর্ত ভাঙার প্রশ্নটা আসছে।

ফেসবুকের তরফে প্রাথমিকভাবে জানান হয়, ট্রাইয়ের এই প্রস্তাবে তারা হতাশ। আরও বেশি মানুষকে ইন্টারনেটের আওতায় আনতে তারা আরও সক্রিয় হবে বলেও জানায়। কিন্তু তারপরেই বিতর্কটা অন্যদিকে মোড় নেয়। সৌজন্যে, তাদের অন্যতম বোর্ড মেম্বার মার্ক অ্যান্ডরসনের একের পর এক টুইট। ‘‘যাদের কিছুই নেই, আর্দশের নামে তাদের পৃথিবীর অন্যতম সস্তা ইন্টারনেট পরিষেবা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এক কথায় মুর্খামি। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির কবর খুঁড়ল। ’’ অ্যান্ডরসনের এই টুইটের পর টুইটারাত্তিরা রে রে করে ওঠেন। সমালোচনায় ভরে ওঠে তাঁর ওয়াল। তবে তাতেও দমনেনি তিনি। করেন সেই মারাত্মক টুইট, ‘‘ঔপনিবেশিকতাবাদের বিরোধিতা করতে গিয়ে দশকের পর দশক ধরে ভারতের অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে। এখনই বা কেন এসব বন্ধ হবে?’’ এই টুইটের পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেট স্যাভি ভারতীয়। ‘ক্ষমা চাইতে হবে অ্যান্ডরসনকে’। জোরালো দাবি ওঠে। বিপাকে পড়ে গতকালই ডামেজ কন্ট্রোলে নামেন খোদ মার্ক জুকেরবার্গ। সরাসরি সমালোচনা করেন মার্ক অ্যান্ডরসনের। ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়ে টুইটটা ডিলিট করতে বাধ্য হন অ্যান্ডরসন, তবে তাতেও প্রশমিত হয়নি নেট দুনিয়ার ক্ষোভ। অ্যান্ডরসনের টুইটের রেশ ধরে ফের সমালোচনার কেন্দ্রে চলে আসে ফেসবুক সিইও-র স্বপ্নের সেই ফ্রি বেসিক।

আজ শেষ মেশ নিজেদের ওয়েবসাইট দ্য নেকস্ট ওয়েব-এ বিবৃতি দিয়ে ভারত থেকে হাতগুটিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে দিল তারা।

আরও পড়ুন-জেনে নিন নেট নিউট্রালিটির সঙ্গে ফেসবুকের বিরোধের কারণ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE