Advertisement
E-Paper

উত্তর-পূর্বে সাতে পাঁচ বিজেপি, হতে পারে ছয়ও

নাগাল্যান্ডে এত দিন বিরোধীহীন বিধানসভা চলছিল। ভোটের আগে আসন ভাগাভাগি নিয়ে মতান্তরে বিজেপি-এনপিএফের প্রাক ভোট মিত্রতা না হলেও, ভোটের আগেই এনপিএফ জানিয়েছিল তাদের সঙ্গে বিজেপির মিত্রতা চলবে। তাই ভোটে এনডিপিপি জিতুক বা এনপিএফ— ক্ষমতা বিজেপি তথা নেডা জোটের হাতে থাকা নিশ্চিত ছিলই। হলও তাই।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৮ ১৫:০৮

অসম দখলের পরেই কংগ্রেস মুক্ত উত্তর-পূর্ব গড়তে নর্থ ইস্ট ডেমোক্রাটিক অ্যালায়েন্স বা নেডা গড়েছিল বিজেপি। অমিত শাহ নেডার ভার তুলে দিয়েছিলেন অসম জয়ের কাণ্ডারী হিমন্তবিশ্ব শর্মার হাতে। দায়িত্ব হাতে নিয়ে হিমন্ত শুধু কংগ্রেস নয়, উত্তর পূর্ব ভারতকে কমিউনিস্টমুক্ত করেও ছাড়লেন। বামপন্থার দুর্গ ত্রিপুরা যে বিজেপি ছিনিয়ে নেবে তা হয়ত সিপিএম নেতৃত্বও বিশ্বাস করতে চাননি।

অন্য দিকে, নাগাল্যান্ডে এত দিন বিরোধীহীন বিধানসভা চলছিল। ভোটের আগে আসন ভাগাভাগি নিয়ে মতান্তরে বিজেপি-এনপিএফের প্রাক ভোট মিত্রতা না হলেও, ভোটের আগেই এনপিএফ জানিয়েছিল তাদের সঙ্গে বিজেপির মিত্রতা চলবে। তাই ভোটে এনডিপিপি জিতুক বা এনপিএফ— ক্ষমতা বিজেপি তথা নেডা জোটের হাতে থাকা নিশ্চিত ছিলই। হলও তাই।

কিন্তু মেঘালয়ে কংগ্রেসের ক্ষমতা ধরে রাখা নিয়ে আশঙ্কা তেমন ছিল না। কিন্তু একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না মেলায় আপাতত মেঘালয়ে সরকার গঠনে নির্ণায়ক ভূমিকা নিচ্ছে এনপিপি, ইউডিপি ও নির্দল প্রার্থীরা। শেষ পর্যন্ত যদি তিন রাজ্যেই বিজেপি ক্ষমতা দখল করে, তবে নেডার স্বপ্ন সফল হতে রইবে বাকি মাত্র একটি রাজ্য, মিজোরাম।

নাগাল্যান্ডে সন্ধে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ট্রেন্ডে দেখা যাচ্ছে ৬০ আসনের মধ্যে (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উত্তর আঙ্গামি-২ কেন্দ্রে আগেই জিতে গিয়েছেন প্রাক্তন

নাগাল্যান্ডে সন্ধে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ট্রেন্ডে দেখা যাচ্ছে ৬০ আসনের মধ্যে (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উত্তর আঙ্গামি-২ কেন্দ্রে আগেই জিতে গিয়েছেন প্রাক্তন

আরও পড়ুন: গেরুয়া ঝড়, মানিক বদলে ‘হিরা’কেই বাছল ত্রিপুরা

মুখ্যমন্ত্রী তথা এনডিপিপি প্রধান নেফিয়ু রিও) এনডিপিপি-বিজেপি জোট ২৯ ও এনপিএফ ২৯ আসনে জিতেছে বা এগিয়ে। অন্যান্যরা ২। খ্রিস্টান প্রধান রাজ্য নাগাল্যান্ডে গির্জা ও অন্যান্য সংগঠনের হুমকির সামনে বিজেপি নিজে বেশি আসন পাবে না জানত। তাই তারা ২০টি আসনে লড়ে সামনে থেকে এনডিপিপি-কে লড়তে দেয়।

নাগাল্যান্ডে অবশ্য লড়াইয়ের প্রধান আকর্ষণ মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে। ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার আশায় মুখ্যমন্ত্রীর গদি ছেড়ে সাংসদ হন রিও। কিন্তু কেন্দ্রে মন্ত্রিত্ব পাননি, তার পর রাজ্যে বিস্তর কলকাঠি নেড়েও আর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া হয়নি। বরং নিজের হাতে গড়া দল থেকে বহিষ্কৃত হন। এনডিপিপির হয়ে লড়তে নেমে, বরাবরের বন্ধু বিজেপিকে পাশে নেন রিও। এ দিকে ফল ঘোষণার আগের রাতে এনপিপি এবং সংযুক্ত জনতা দল এনপিএফের সঙ্গে জোটের কথা ঘোষণা করে। এনপিএফ জানায়, তাদের দরজা বিজেপির জন্যও খোলা। এনডিপিপি এখনও এগিয়ে। তাই রিও ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়েও এগিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এনপিএফ এগিয়ে গেলে বিজেপি তাদের হাত ধরতেই পারে। সে ক্ষেত্রে টি আর জেলিয়াংই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। কিন্তু জয়ের ধারা বজায় থাকলে নাগাল্যান্ডে রাজনৈতিক ইতিহাস গড়বেন রিও। ২০০৩ সালে কংগ্রেস ছেড়ে এনপিএফ গড়ে দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন কংগ্রেসকে ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে জিতলে ফের একবার নতুন দলের ভার নিয়ে তিন বারের ক্ষমতাসীন দলকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করবেন তিনি। দেখিয়ে দেবেন, দলীয় রাজনীতির চেয়েও ব্যক্তি হিসেবে রিওর আবেদন ও ক্যারিশমা অনেকটা বেশি।

মেঘালয়ের ক্ষেত্রে অঙ্ক অনেক জটিল। খ্রিস্টান রাজ্য মেঘালয়ে বিজেপি একা লড়ে মোটেই ভাল ফল করেনি। এখন পর্যন্ত সেখানে ২১টি আসনে কংগ্রেস, ১৯টিতে এনপিপি জিতেছে বা এগিয়ে। বিজেপি মাত্র ২টি। ইউডিপি ৬টি আসনে জয়ী বা এগিয়ে। বিজেপির সঙ্গে নেডা জোট ও এনডিএতে শরিক হলেও এনপিপি ভোটের আগে বিজেপির সঙ্গে জোট তো করেইনি, উল্টে জানিয়ে দেয় ক্ষমতার থাকার জন্য কংগ্রেসের সঙ্গেও তারা হাত মেলাতে পারে। কিন্তু মেঘালয়ে এখন যা পরিস্থিতি- তাতে এনপিপি নিজেই ক্ষমতায় আসতে পারে। বিজেপি ও এনপিপি মিলিয়ে এখন ২১। কংগ্রেসের হাতেও আছে ২১। ইউডিপি তাদের সমর্থন দিলে কংগ্রেসের কোনও চিন্তা নেই। কিন্তু বিজেপি যদি এনপিপি, নির্দল প্রার্থীদের ও ইউডিপিকে টেনে নেয়, তাহলে দুটি কেন্দ্রে জিতেও মুকুল সাংমার আর মুখ্যমন্ত্রী থাকা হবে না। দুর্নীতির অভিযোগ, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কুফল, প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। তবে বিজেপি জোট করলে সবচেয়ে বড় সমস্যা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার মতো মুখের অভাব।

আরও পড়ুন: লাইভ: মেঘালয়ে ত্রিশঙ্কু, নাগাল্যান্ডে এগিয়ে এনডিপিপি-বিজেপি

মেঘালয়ে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব কাটিয়ে এক সময় বন্ধু মুকুল সাংমাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন হিমন্তবিশ্ব শর্মা। সেই হিমন্তই ত্রিপুরা জয়ের অসম্ভবকে প্রায় সম্ভব করার পরে, মেঘালয় দখলে আনতে শিলং রওনা হয়েছেন। শিলং চলে গিয়েছেন কংগ্রেসের দুই নেতা আহমেদ পটেল এবং কমলনাথও। জোর টানাটানি চলবে বোঝাই যাচ্ছে।

Meghalaya Assembly Elections 2018 Nagaland Assembly Election 2018 Nagaland Assembly Election Results 2018 Meghalaya Assembly Elections Results 2018 Results Congress BJP NDPP NPF
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy