একই দিনে সুপ্রিম কোর্টে জোড়া ধাক্কা খেল কেন্দ্র ও দু’টি রাজ্যের বিজেপি সরকার। এক দিকে, ‘পদ্মাবত’-এর মুক্তি রোখা গেল না। যার আর্জি জানিয়েছিল রাজস্থান ও হরিয়ানার বিজেপি সরকার।অন্য দিকে, কেরলের মেয়ে হাদিয়ার বিয়ে নিয়ে তদন্তের অধিকার হারাল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।
সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছে, ‘লভ জিহাদ’ মামলায় কেরলের মেয়ে হাদিয়ার বিয়ের বিষয়ে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র হস্তক্ষেপ করার কোনও অধিকার নেই। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি বেঞ্চে হাদিয়া মামলার শুনানি চলছে। এ দিন শুনানির সময় এনআইএ-কে ওই বেঞ্চ বলে, ‘‘আপনারা তদন্ত করতেই পারেন, তবে ওঁদের বিয়ে নিয়ে নয়। ‘লভ জিহাদ’ নিয়ে তদন্ত চলুক বা, অন্য যে কোনও বিষয়ে তদন্ত হোক। কিন্তু ওঁদের বিয়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। বিয়েকে ফৌজদারি অপরাধ, চক্রান্ত থেকে আলাদা করে দেখতে হবে। না হলে সেটা খারাপ নজির হবে।’’ আদালত বড়জোর হাদিয়ার বিয়ের বয়স সংক্রান্ত আইনি দিকটি খতিয়ে দেখতে পারে বলে, মন্তব্য শীর্ষ আদালতের বেঞ্চের।
এ দিন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি খানউইলকর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এও বলেছে, ‘‘বিয়ের পাত্র হিসেবে কে ভাল আর কে খারাপ, সেটা ঠিক করতে পারেন শুধু হাদিয়াই।’’
২০১৬-র ডিসেম্বরে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন কেরলের বাসিন্দা অখিলা অশোকন। নিজের নাম বদলে রাখেন হাদিয়া। তার পর দক্ষিণ কেরলের কোল্লামের বাসিন্দা শাফিন জাহানকে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু, সেই বিয়েকে অস্বীকার করেন হাদিয়ার বাবা অশোকন। মামলা দায়ের করেন কেরল হাইকোর্টে। আদালতে অশোকনের অভিযোগ ছিল, মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তরকরণ করা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট-এ যোগ দিতে তাঁকে যুদ্ধবিদ্ধস্ত সিরিয়ায় পাঠানো হতে পারে। তাঁর মেয়ের বিয়ে বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন অশোকন, আদালতে।
আরও পড়ুন: লোকসভা, বিধানসভায় একাই লড়বে শিবসেনা
গত বছরের মে মাসে সেই বিয়ে বাতিল ঘোষণা করে কেরল হাইকোর্ট। তার পর সুপ্রিম কোর্টে যান হাদিয়ার স্বামী। কেরল হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে হাদিয়ার বিয়ের ঘটনা আসলে ‘লভ জিহাদ’ কি না, গত অগস্টে তা নিয়ে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ‘লভ জিহাদ’ বিতর্কে কেরল-সহ গোটা দেশেই আলোড়ন তোলে সেই হাদিয়া মামলা।
শীর্ষ আদালতে হাদিয়ার বয়ান-সহ একটি রিপোর্ট গত বছরের শেষে জমা দেয় এনআইএ। সেখানে হাদিয়া বলেন, নিজের ইচ্ছাতেই তিনি মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। মুসলিম হতে কেউ তাঁকে বাধ্য করেননি। তাঁর উপর কোনও জোরজবরদস্তি হয়নি। পরে সরাসরি হাদিয়ার মুখ থেকে তাঁর বক্তব্য জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: শিক্ষিতরাও সন্ত্রাসে, উদ্বেগ মোদীর
সুপিরেম কোর্টে তাঁর জীবনের স্বপ্ন, উচ্চাশা ও ভবিষ্যতের ভাবনার কথা জানান ২৫ বছরের হাদিয়া। তিনি জানান, মুসলিম ধর্ম পালন করে চলার পাশাপাশি স্বামীর সঙ্গে থাকার ব্যাপারেও ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ চান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy