মাংস বিক্রেতাদের ধর্মঘট উঠে গেল উত্তরপ্রদেশে। যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় আসার পরেই রাজ্য সরকার তালা ঝুলিয়েছে একের পর এক কসাইখানায়। চূড়ান্ত টান পড়েছিল সরবরাহে। তার প্রতিবাদেই গত পাঁচ দিন ধরে ধর্মঘট করছিলেন মাংস ব্যবসায়ীরা।
লখনউয়ের একটি মাংস বিক্রেতা সংগঠনের পদাধিকারী মুবীন কুরেশি আজ বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে যে, মৌলবিগঞ্জের (বন্ধ হওয়া) কসাইখানাটি খোলা হবে। সেই সঙ্গে আরও একটি কসাইখানা তৈরি করা হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার খোলা মনে আমাদের কথা শুনেছে। কাল থেকে আমরা দোকান খুলছি।’’ এর পাশাপাশি, আইন মেনে আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে মাংস বিক্রেতাদের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের ব্যাপারেও যোগী সরকারের কাছ থেকে তাঁরা আশ্বাস পেয়েছেন বলে কুরেশি জানান।
রাজ্য সরকারের অবশ্য বরাবরই বক্তব্য ছিল, শুধু অবৈধ কসাইখানাগুলির বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিচ্ছে তারা। মাংস সরবরাহে টান পড়ায় সঙ্কটে পড়ে নামী হোটেল-রেস্তোরাঁগুলি। সমস্যায় পড়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলিও। আজই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে খাবারের সমস্যা মেটাতে একটি কমিটি গঠন করেন উপাচার্য জামির উদ্দিন শাহ।
উত্তরপ্রদেশে কসাইখানার বিরুদ্ধে অভিযান এবং তার ফলে মাংস ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের কারণে গোটা উত্তরপ্রদেশে মাংস সরবরাহের উপর প্রভাব পড়েছে গত ক’দিনে। বিশেষ করে ব্যাহত হয়েছে মোষের মাংসের সরবরাহ। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়েও এই ক’দিন পাওয়া যায়নি আমিষ খাবার। বিশেষ করে মোষের মাংস। আমিষ খাবারের দামও বেড়ে গিয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে দেওয়া হচ্ছে নিরামিষ খাবার। এই সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়ে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছিল ছাত্র সংগঠন। এর পরেই পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই কমিটির প্রথম কাজ হবে মাংস কেনার জন্য একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
তবে মোষের মাংসের সরবরাহে খুব একটা উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন আলিগড় মাংস বিক্রেতা সংগঠনের সম্পাদক তারিক আনোয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘‘মোষের মাংস এখানে খুব চলে। তা না পেয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়েছে।’’ এই সমস্যার সমাধানে উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন এগিয়ে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। রাতে অবশ্য ধর্মঘটই তুলে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি তাতেও স্বাভবিক হবে কি না তা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকে। কারণ, ইতিমধ্যেই অনেক কসাইখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাজ্যে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী মাংসের জোগান মিলবে কি না সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy