Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
নীরব-কেলেঙ্কারিতে বাড়ছে বিড়ম্বনা

রাহুলকে বিঁধতে ব্যর্থ বিজেপি

নীরব মোদী-মেহুল চোক্সী কাণ্ডে যে দলের ভাবমূর্তি ধাক্কা খেয়েছে, তা কবুল করছেন বিজেপি নেতারা।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩০
Share: Save:

গত পাঁচ দিন ধরে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে নীরব মোদীর যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় মরিয়া ছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বিজেপির অন্দরের গুঞ্জন, তাতে ‘বিফল’ হয়েই অবশেষে মুখ খুলে ব্যাঙ্ক-অডিটরদের ঘাড়ে দোষ চাপালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

নীরব মোদী-মেহুল চোক্সী কাণ্ডে যে দলের ভাবমূর্তি ধাক্কা খেয়েছে, তা কবুল করছেন বিজেপি নেতারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁদের প্রাথমিক কৌশল ছিল, দেশ থেকে উধাও হওয়া দুই অভিযুক্তের সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতির যোগসূত্র প্রতিষ্ঠা করা। রাহুল কি দু’বছর আগে গোপনে ব্যাংককে নীরবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন? ইউপিএ আমলের অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের প্রশ্রয়েই কি ব্যাঙ্ক জালিয়াতি শুরু হয়েছে? হিরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কি আন্তর্জাতিক হাওয়ালা কারবারি, সন্ত্রাসে আর্থিক মদতদারদেরও যোগ ছিল? গত বছর প্রয়াত অস্ত্র ব্যবসায়ী আদনান খাশোগি, হাওয়ালা কারবারি হাসান আলিরও কি কোনও ভূমিকা আছে এতে? নীরবকে প্রশ্রয় দিতে কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে কি কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছে? এমন হাজারো ছিদ্র খোঁজার চেষ্টা গত ক’দিনে চালিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু ২০১৩ সালে নীরব মোদীর এক প্রদর্শনীতে রাহুলের যাওয়া এবং নীরবের সংস্থা থেকে কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির স্ত্রীর হিরে কেনা ও তাদের বাড়ি ভাড়া দেওয়া ছাড়া কোনও যুৎসই প্রমাণ হাতে আসেনি বলেই বিজেপি সূত্রে খবর।

ফলে কংগ্রেস সভাপতির ঝাঁঝালো আক্রমণের মুখে পাল্টা বলার মতো কিছুই পায়নি মোদীর দল। আর পরিস্থিতি ক্রমেই চলে গিয়েছে হাতের বাইরে। বিজেপি নেতারাই বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখে কুলুপ, অর্থমন্ত্রীও চুপ— সব মিলিয়ে জনমানসে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে সরকারের দুর্নীতি বিরোধী ভাবমূর্তি। তাই শেষ পর্যন্ত আসরে নেমেছেন জেটলি। দায় ঠেলেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, পিএনবি এবং অডিটরদের ঘাড়ে।

সরকারের এই নাজেহাল দশার ফায়দা নিতে কসুর করছে না কংগ্রেস। এ দিন আক্রমণের সুর আরও চড়িয়ে মেঘালয়ের ভোট প্রচারে রাহুল বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী আসলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে নন, বরং তিনি দুর্নীতি তৈরির মূল যন্ত্রী। বিজয় মাল্য থেকে নীরব মোদী— সকলেই জনতার টাকা মেরে দেশ থেকে পালাচ্ছেন। ভারতের আইন আর তাঁদের ছুঁতে পারছে না। এটাই মোদী ম্যাজিক। এমন ম্যাজিক চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই দেশ থেকে গণতন্ত্রও হাপিস হয়ে যাবে।’’

আর বিজেপির নিশানায় আসা সিঙ্ঘভির কটাক্ষ, ‘‘সরকারের কাছে ব্রেকিং নিউজ... শ্রীমতি সিঙ্ঘভির সংস্থা আইপিএল ম্যাচ চলার সময় নীরবের সংস্থার সঙ্গে রোটোম্যাক পেন দিয়ে লিজ ডিডে সই করেছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গাঁধী। সকলে কিংগ্‌ফিশারের পানীয় খাচ্ছিলেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE