Advertisement
১০ মে ২০২৪

আমি শিবভক্ত, ধর্ম-বিতর্কে জবাব রাহুলের

বিজেপি আজও প্রচার করেছে রোমান ক্যাথলিক পরিবারে জন্ম নেওয়া মা এবং অ-হিন্দু বাবা হয়েও রাহুল গাঁধী পৈতেধারী ব্রাহ্মণ হন কী করে। এই প্রচারেরও আজ মোক্ষম জবাব দিয়েছেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি।

আশীর্বাদী: স্বামীনারায়ণ মন্দিরে প্রার্থনা রাহুল গাঁধীর। বৃহস্পতিবার গুজরাতের বোতাডে। —নিজস্ব চিত্র।

আশীর্বাদী: স্বামীনারায়ণ মন্দিরে প্রার্থনা রাহুল গাঁধীর। বৃহস্পতিবার গুজরাতের বোতাডে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫২
Share: Save:

বিজেপির ‘ধর্ম’-প্রচারের জবাব দিতে আজ মুখ খুললেন রাহুল গাঁধী নিজেই। তবে কোনও প্রকাশ্য সভায় নয়, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠকে।

তাঁর ধর্ম নিয়ে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারের প্রচারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে রাহুল আজ বলেন, ‘‘আমার ঠাকুমা, আমার পরিবার শিবভক্ত। এ ধরনের বিষয় আমরা সাধারণত ব্যক্তিগত রাখি। আমরা এ বিষয়ে বলি না। কারণ, আমাদের ধর্ম আমাদের বিষয়। আমাদের কারও থেকে সার্টিফিকেট নেওয়ার দরকার নেই। আমরা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করি না। দালালিও করি না।’’ বিজেপি আজও প্রচার করেছে রোমান ক্যাথলিক পরিবারে জন্ম নেওয়া মা এবং অ-হিন্দু বাবা হয়েও রাহুল গাঁধী পৈতেধারী ব্রাহ্মণ হন কী করে। এই প্রচারেরও আজ মোক্ষম জবাব দিয়েছেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি।

সোমনাথ মন্দিরের নথিতে সই-বিতর্কে আজও সরগরম ছিল গুজরাত। এই বিতর্কেও এ দিন মুখ খুলেছেন রাহুল। ওই ঘরোয়া বৈঠকেই তিনি বলেন, ‘‘আমি সোমনাথ মন্দিরের রেজিস্টারে সই করিনি। বিজেপি পরে আমার নাম ঢুকিয়েছে। আমি শুধু ভিজিটর্স বুকে লিখেছি।’’ বিষয়টি নিয়ে সরব হয় কংগ্রেসও। বিজেপির ধর্ম-রাজনীতিকে আক্রমণ করতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী আসল হিন্দু নন। ওঁরা (বিজেপি) হিন্দু ধর্ম ভুলে হিন্দুত্ব গ্রহণ করেছেন!’’ জবাবে বিজেপি নেতৃত্বের কটাক্ষ, ‘‘দলের পরবর্তী সভাপতিকে তুষ্ট করতে কপিল এখন প্রধানমন্ত্রীর আস্থাকে নিশানা করছেন?’’

আরও পড়ুন: তবে কি চাপে মোদী, ভোটের আগে জল্পনা

কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, মোদীর রাজ্যে উন্নয়ন নিয়ে রাহুলের প্রচারে বিপাকে পড়েছে বিজেপি। সেই সঙ্গে সামাজিক আন্দোলনের তরুণ নেতাদের পাশে টেনে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে বড় ফাটল ধরিয়েছেন রাহুল। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে নোটবাতিল এবং জিএসটি-র মতো বিষয়। আর কোনও পথ না পেয়ে এখন উগ্র হিন্দুত্বের হাওয়া তুলে রাহুলের ধর্ম পরিচয় নিয়ে আসরে নেমেছে বিজেপি। সে কারণেই সোমনাথ মন্দিরের নথি-বিতর্ক। কিন্তু রাহুল নিজে মুখ খুলে সেই বিতর্কে জল ঢেলে দিয়েছেন বলে কংগ্রেসের দাবি। একই সঙ্গে দলের বক্তব্য, রাহুল যে প্রকৃতই শিবভক্ত, তার প্রমাণ মিলবে খুব শিগগিরই। দলের একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, সোমবারকে বলা হয় শিবের বার। আগামী সোমবারেই দলের পরবর্তী সভাপতি পদের জন্য মনোনয়ন পেশ করবেন রাহুল।

সঙ্ঘ পরিবার সূত্রে বলা হচ্ছে, রাহুলের মোকাবিলায় ধর্মকেই আঁকড়ে ধরবে দল। হিন্দুত্বের মোড়কে জাতপাতের অঙ্কও মুছে ফেলতে চাইছে তারা। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশও জাতপাতের অঙ্কে খণ্ডবিখণ্ড ছিল। কিন্তু হিন্দুত্বের মোড়কে সেই অঙ্ক গুলিয়ে দিয়ে সাফল্য পেয়েছিল সঙ্ঘ-বিজেপি। গুজরাত ভোটেও সেটাই করতে চায় তারা। উগ্র হিন্দুত্বের হাওয়া তুলতে তারা এখন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে প্রচারে নামিয়েছে। কিন্তু গেরুয়া বসনধারী যোগীও মোদীর রাজ্যে হাওয়া তুলতে ব্যর্থ। যোগীর সভায় খালি থাকছে সিংহভাগ চেয়ার!

স্বভাবতই উদ্বিগ্ন সঙ্ঘ। বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, হাজার পাঁচেক সঙ্ঘ-কর্মী গুজরাত ভোটে নেমেছেন। হিন্দুদের একজোট করার চেষ্টা চালাবেন এঁরা। ‘সম্পর্ক অভিযান’ করে নানা সামগ্রী বিলিও করবেন। দিল্লিতে বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘হিন্দুত্বের জিগির তোলাও প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi রাহুল গাঁধী
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE