জোট শরিক মেহবুবা মুফতির দাবি উড়িয়ে দিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার জানিয়ে দিল, জম্মু-কাশ্মীর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ অধিকার আইন বা আফস্পা আপাতত প্রত্যাহার করা হবে না।
সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ অধিকার আইন মূলত বলবৎ থাকে উপদ্রুত এলাকাগুলিতে। জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু এলাকায় ওই আইন চালু রয়েছে। সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীর থেকে ওই বিশেষ আইন তুলে নেওয়ার জন্য সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি-সহ অনেকেই। তাঁদের যুক্তি, ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে উপত্যকার মানুষের মনে সরকার সম্পর্কে আস্থা বাড়বে।
তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহির আজ জানান, ‘‘এই মুহূর্তে জম্মু-কাশ্মীরে জারি থাকা সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ অধিকার আইন, (১৯৯০)-প্রত্যাহার করার কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের।’’ মোদী সরকারের এই অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। তাঁর কথায়, ‘‘আফস্পা-র মতো বর্বরোচিত আইন আর কিছু নেই। কাশ্মীরের মানুষের আন্দোলনে ভয় পেয়ে সরকার তা দমনের উদ্দেশ্যেই ওই আইন জারি রেখেছে। গত কয়েক দশক ধরে দিল্লি ওই আইনের সাহায্যে সেনা শক্তি প্রয়োগ করে সাধারণ মানুষের কণ্ঠরোধ করে যাচ্ছে।’’
তবে এ ভাবে আফস্পা প্রয়োগ করে উপত্যকায় কতটা শান্তি ফিরবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সরকারের ভিতরেই। বিশেষ করে যে ভাবে উপত্যকার তরুণ ও যুব সমাজ পাথর ছোড়ার মতো ঘটনায় জড়াচ্ছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংসদীয় এস্টিমেট কমিটি। কমিটি সুপারিশ করেছে, দ্রুত ওই কিশোর-তরুণদের সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হোক। প্রয়োজনে মনোবিদদের সাহায্য নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে যুবকদের জন্য উপত্যাকায় ‘উড়ান’ ও ‘হিম্মত’ নামে দু’টি প্রকল্প চালু করা হয়। কমিটি রিপোর্টে প্রকল্পগুলির প্রশংসা করে জানিয়েছে, সময়ে সময়ে নজরদারি ছাড়াও সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য যেন চাকরি সৃষ্টি করা হয়। ওই এলাকার যুবকেরা যাতে চাকরি পায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। স্কুলছুট ছাত্রদের বিভিন্ন শিক্ষানবিশ প্রকল্পের আওতায় এনে তাদের দক্ষতা বাড়ানোর সুপারিশও করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে বা সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে যে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বা সরকারি সংস্থার দফতর রয়েছে, সেখানেও নিয়মিত ব্যবধানে স্থানীয় যুবকদের চাকরির সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy