নরেন্দ্র মোদী।
দেশ জুড়ে কৃষক আন্দোলনের মুখে জেরবার নরেন্দ্র মোদী এ বার রাজ্যগুলির কাছেই সাহায্য চাইলেন।
আজ রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কৃষি রাজ্যের বিষয়। কাজেই কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজ রাজ্যকেই করতে হবে। মধ্যপ্রদেশ থেকে মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে কৃষকরা ফসলের উপযুক্ত দাম চাইছেন। দিল্লির যন্তর মন্তরে লাগাতার ধর্না চলছে। দাবি, ফসলের দাম চাষের খরচের দেড় গুণ হতে হবে। লোকসভা ভোটের আগে স্বামীনাথন কমিশনের এই সুপারিশই কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয়নি। চাষিরা যাতে ফসলের উপযুক্ত দাম পান, তার জন্য আজ মোদী দাওয়াই দিয়েছেন, কেন্দ্র যে অনলাইনে কৃষি পণ্য কেনাবেচার বাজার চালু করেছে, সব রাজ্য তা রূপায়ণ করুক। কৃষকদের ‘সয়েল হেল্থ কার্ড’ তৈরির ব্যবস্থা হোক।
আরও পড়ুন: নীতীশকে সমর্থনের প্রস্তাব বিজেপির
নীতি আয়োগের ডাকা এই বৈঠকে উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পানাগাড়িয়া যুক্তি দিয়েছেন, কৃষির উপর নির্ভরশীল মানুষকে কারখানা বা পরিষেবা ক্ষেত্রে নিয়ে যেতে হবে। কারণ কৃষিতে মাথাপিছু উৎপাদন অনেক কম। কারখানায় শ্রমিক পিছু উৎপাদন কৃষির ৫ গুণ, পরিষেবা ৩.৮ গুণ। পানাগাড়িয়ার যুক্তি, ‘‘কৃষির এক শতাংশ শ্রমিককেও কারখানায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হলে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার দেড় শতাংশ বেড়ে যাবে।’’
কী ভাবে কৃষি থেকে কারখানার কাজে মানুষকে সরানো সম্ভব, তার কোনও দিশা অবশ্য মেলেনি। কারখানায় যথেষ্ট চাকরির সুযোগ রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। পানাগাড়িয়া নিজেই আজ মুখ্যসচিবদের সামনে মেনে নিয়েছেন, দেশের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ এখন বেকারি। তার কারণ, দেশে বড় শিল্পের অভাব। ষষ্ঠ আর্থিক সুমারি অনুযায়ী, দেশে ৪৭ কোটি কর্মীর মধ্যে মাত্র ২.৮ কোটি এমন সংস্থায় কাজ করেন, যেখানে কর্মীর সংস্থা ১০ বা তার বেশি। বাকি ৪৪.২ কোটি মানুষ হয় চাষআবাদ বা নিতান্ত ছোট সংস্থায় কাজ করেন। উল্টোদিক থেকে বলা যায়, দেশে মাত্র ৫.৮৫ কোটি সংস্থা রয়েছে, যাতে ১০ জন বা তার বেশি কর্মী কাজ করেন। পানাগাড়িয়ার বক্তব্য, এমন নীতি প্রয়োজন, যাতে শিল্প সংস্থাগুলি অতি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র, তা থেকে মাঝারি ও বড় শিল্পে পরিণত হতে পারে।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ৩০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সচিবদের থেকে তাঁদের রাজ্যের একটি করে বিশেষ সাফল্যের কথা শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের তরফে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, শিশুমৃত্যুর হার কমে গিয়ে রাজ্য এখন দেশের মধ্যে দ্বিতীয়। বৈঠকে মোদীর উপদেশ, মুখ্যসচিবরা অন্তত পাঁচটি সমস্যা বেছে নিন, যা তাঁরা সমাধান করেই ছাড়বেন। একটি রাজ্যের সাফল্য আর একটি রাজ্য অনুসরণ করতে পারে। প্রয়োজনে দু’টি রাজ্য নিজেদের মধ্যে চুক্তিও করতে পারে এ জন্য। মোদীর মতে, কমবয়সী অফিসারদের যত বেশি সম্ভব মাঠে নেমে কাজ করা এবং প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার রেকর্ড রাখতে জেলায় অফিসারদের গেজেট লেখা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy