রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
এ দেশে একটা অর্ডিন্যান্সকে অনেক রাস্তা পেরিয়ে ‘আইন’ হতে কতটা সময় লাগে, সম্ভবত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের চেয়ে তা আর কেউ বেশি জানেন না! এ হেন প্রণববাবুকে একই অর্ডিন্যান্সে পাঁচ বার সই করতে হল। তবু এখনও ‘আইন’ হয়ে ‘সাবালক’ হয়ে উঠতে পারল না সেই অর্ডিন্যান্স! এই সরকারি দীর্ঘসূত্রিতায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। আর তাঁর সেই ক্ষোভ গোপন করতে কোনও দ্বিধাও করেননি বলে রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রের খবর। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘‘সরকার এখনও এই অর্ডিন্যান্সটিকে আইন করতে পারল না! এটা তো জাতীয় স্বার্থরক্ষার জন্যই অত্যন্ত জরুরি। এটা আইন হয়নি বলেই সুপ্রিম কোর্টে এমন প্রচুর মামলা বা অভিযোগ জমতে জমতে পাহাড় হয়ে গিয়েছে।’’ অর্ডিন্যান্সটি ছিল শত্রুসম্পত্তি আইনের কয়েকটি সংশোধন সংক্রান্ত।
গত অগস্টে তাঁর স্বাক্ষরের জন্য এই অর্ডিন্যান্সটি চতুর্থ বার এসেছিল রাষ্ট্রপতির কাছে। প্রণববাবু তাতে সই করতে বিলম্ব করেননি। কিন্তু তার পরেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন মেলেনি ওই জরুরি অর্ডিন্যান্সে।
আরও পড়ুন- দীর্ঘমেয়াদী লাভের জন্য স্বল্পমেয়াদী কষ্ট করুন, দেশকে পরামর্শ মোদীর
রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রের খবর, চতুর্থ বার তাঁর সইয়ের জন্য যখন অর্ডিন্যান্সটি এসেছিল, তখনই সেই অর্ডিন্যান্সে সই করার পাশাপাশি সরকারকে একটি ‘বিশেষ নেট’ও দিয়েছিলেন প্রণববাবু। তাতে রাষ্ট্রপতি লিখেছিলেন, দেশের মানুষের স্বার্থেই এই বিষয়টিকে নিয়ে অযথা সময় নষ্ট করা উচিত নয়। কিন্তু তার পরেও অর্ডিন্যান্সটি তাঁর পঞ্চম বারের সই নেওয়ার জন্য আসায় যারপরনাই বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ প্রণববাবু।
যার কয়েকটি সংশোধন নিয়ে এই অর্ডিন্যান্স, সেই ‘শত্রুসম্পত্তি আইন’ এ দেশে ৪৮ বছরের পুরনো। যুদ্ধের পর যাঁরা ভারত ছেড়ে পাকিস্তান বা চিনে চলে গিয়েছেন, তাঁদের ফেলে যাওয়া স্থাবর সম্পত্তির নিরাপত্তা ও সেই সম্পত্তির হস্তান্তরকে নিশ্চিত করতেই এই আইনটি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই আইনে কিছু ফাঁকফোকরও ছিল। তার জন্যই জরুরি হয়ে পড়েছে কয়েকটি সংশোধন। এই আইনটি পাশ করানোর জন্য গত বছরেই লোকসভায় একচটি বিল পাশ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মূলত বিরোধী দলগুলির আপত্তিতে তা রাজ্যসভায় পাশ হয়নি। মোদী সরকার রাজ্যসভায় সংখ্যালঘু হওয়ায় রাজ্যসভায় তা পাশ করানো সম্ভব হয়নি।
ফলে, অর্ডিন্যান্সটি এখনও ‘আইন’ হয়ে উঠতে পারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy