‘তালগো’ ট্রেনের কামরা।
গতিমানের পরে এ বার পরীক্ষামূলক দৌড় দিল সেমি-বুলেট ট্রেন। গতিমানের গতি ঘণ্টায় ১৩০-১৫০ কিলোমিটার। আর প্রতি ঘণ্টায় সেমি-বুলেট ট্রেনের গতি দাঁড়াবে ১৬০-২২০ কিলোমিটার। শুক্রবার পলবল-মথুরা শাখায় স্পেনের ‘তালগো’ কোচ দিয়ে তৈরি এই ট্রেনের দৌড় পরীক্ষা হল।
সেমি বুলেট ট্রেন চালানোর জন্য ভারতীয় রেলের সিগন্যালিং প্রযুক্তি এবং লাইন সংস্কার করতে হবে বলে কেন্দ্রকে জানিয়েছিল জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জাইকা)। তার খরচ অনেক। কিন্তু স্পেনের একটি বেসরকারি সংস্থা দাবি করে— তাদের দেশে তৈরি বিশেষ ধরনের ‘তালগো’ কোচ ব্যবহার করলে ভারতে প্রচলিত লাইন ও সিগন্যালিং ব্যবস্থাতেই ঘণ্টায় ১৬০-২২০ কিলোমিটার গতিতে সেমি বুলেট ট্রেন চালানো সম্ভব। এ জন্য ‘ট্রায়াল রান’ দিতে তারা কোনও অর্থও নেবে না। এর পরে ওই সংস্থাকে পরীক্ষামূলক ভাবে সেমি বুলেটে ট্রেন চালানোর অনুমতি দেয় রেলবোর্ড। রেলকর্তারা জানিয়েছেন— পরীক্ষায় পাশ করেছে স্পেনের ওই সংস্থাটি।
রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, ট্রায়াল রানের জন্য প্রথম দফায় স্পেন থেকে ন’টি কামরা এসেছিল। ওই কামরাগুলিতে ভারতীয় ইঞ্জিন লাগিয়ে শুক্রবার পলবল-মথুরা শাখায় দৌড় পরীক্ষা হয়। এক কর্তা জানান, পরের ধাপে সেমি বুলেট দৌড়বে বরেলী-মোরাদাবাদ এবং নয়াদিল্লি-মুম্বই রুটে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফাতেও স্পেনের কামরাগুলি জোড়া হবে ভারতীয় ইঞ্জিনের সঙ্গে। আগামী জুন মাস পর্যন্ত এই পরীক্ষামূলক দৌড় চলবে। তার পরেই স্পেন থেকে কেনা হবে ৩০টি ‘তালগো’ কোচ।
রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর প্রথম থেকেই ট্রেনের গতি বাড়াতে নানা ধরনের পরিকল্পনা করেন। সেমি-বুলেট ট্রেন তারই একটি। কী নতুনত্ব রয়েছে এই নতুন কামরাগুলিতে?
রেলকর্তারা জানান, প্রচলিত কামরায় চাকাগুলি অ্যাক্সেল দিয়ে ট্রেনের সঙ্গে আটকানো থাকে। এতে চালু অবস্থায় কামরাগুলি দুলতে থাকে। ফলে ট্রেনের গতি খুব বেশি ওঠে না। স্পেনের তৈরি কামরায় ট্রেনের সঙ্গে চাকাগুলি সরাসরি আটকানো রয়েছে। তাতে সুবিধা কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ব্যবস্থায় ট্রেন ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বা তার বেশি গতিতে দৌড়লেও বাঁকের মুখেও কোনও অসুবিধা নেই। কামরাগুলি লাইনেই সেঁটে থাকবে। রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরা বলছেন, মোটরগাড়িতে যেমন পাওয়ার স্টিয়ারিং লাগানো থাকলে অনায়াসে মোড় ঘোরানো যায়, এই কামরাতেও সেই সুবিধা রয়েছে।
পরীক্ষামূলক দৌড়ের সময় রেল বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে হাজির ছিলেন স্পেনের ওই সংস্থার একটি প্রতিনিধি দলও।
তাঁরা রেল কর্তাদের জানান, কামরাগুলিতে অনেক ‘সেন্সর’ লাগানো রয়েছে। সেগুলি ঠিকমতো কাজ করছে কি না, প্রথম পরীক্ষায় সেটিই ছিল দেখার। তাতে পাশ করেছে স্পেনের কামরা।
রেল কর্তারা জানান, পরের দু’টি পরীক্ষায় গতি আরও বাড়ানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy