প্র: ভাবা যায় না, আড়াই মিনিটে কারও না কারও প্রস্টেট ক্যানসার ধরা পড়ছে বিশ্বের কোথাও না কোথাও। আর ১৬ মিনিট অন্তর একটি মৃত্যু। চিকিৎসা কি এ ভাবেই থমকে রইল?
উ: থমকে তো নেই। বরং এ দেশেও নতুন সব চিকিৎসা শুরু হয়ে গেছে। ব্যয়-সাপেক্ষ হলেও রোবোটিক সার্জারিও শুরু হয়েছে। মাত্র পাঁচটি ফুটো, রক্তপাত নেই, সংক্রমণের সম্ভাবনাও থাকে না।
প্র: পঞ্চাশ পেরোতে না পেরোতেই প্রায় সব চিকিৎসকই পিএসএ টেস্ট করাতে বলছেন। কিন্তু ক’জন আর গরজ করেন?
উ: গরজ তো করতেই হবে। কারণ পিসিএ-র মাত্রা ৪ অবধি হলে ঠিক আছে। তার বেশি হলেই বিপদ শুরু।
প্র: তার মানে ধরে নিতে হবে ক্যানসার হয়েছে?
উ: না। সেটা সব সময় নয়। প্রস্রাবের সংক্রমণ থেকেও পিসিএ-র মাত্রা বাড়তে পারে। ভয় পাবেন না। তবে সতর্ক থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
প্র: খুব অসুবিধে না হলে কে আর সতর্ক হয়?
উ: বয়স বাড়লে নিজের স্বাস্থ্যের দিকে তো নজর দিতেই হবে। পিসিএ-র মাত্রা ছাড়ালেই প্রথম দিকে মাসে একবার করে পরীক্ষাটি করে নিতে হবে। দেখতে হবে পরবর্ত়ীতেও সেই মাত্রা কেমন থাকছে। যদি দেখা যায়, কমছে না তবে বায়োপসি করতে হতে পারে। তাতেও প্রকৃত কারণ জানা না গেলে এম আর আই-ও করা হয়। শুধুমাত্র নিশ্চিন্ত হওয়ার জন্য।
প্র: এতেও বাড়ার প্রবণতা দেখলে কি ধরে নিতে হবে ক্যানসার?
উ: হ্যাঁ।
প্র: অনেকে জানেই না। বা জানলেও সব সময় পিএস এ পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। অন্য কোনও লক্ষণ দেখে কি বোঝা যায় প্রস্টেট সমস্যা শুরু হচ্ছে?
উ: কিছুটা বোঝা যায়। রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোনো যাচ্ছে না। বারবার বাথরুমে ছুটতে হচ্ছে। প্রস্টেট বড় হয়ে মূত্রনালীর ওপর চাপ বাড়ায়। আর তাতেই নানা বিপত্তি।
প্র: পঞ্চাশ পেরোলেও অনেকেই আছেন এ ধরনের সমস্যা তাঁদের নেই। তা হলে টেনশন তো না করাই ভাল।
উ: ভুল ধারণা। অনেক ক্যানসারের প্রথম দিকে কোনও উপসর্গ বাইরে থেকে বোঝাই যায় না। অ্যাডভান্স স্টেজ ছাড়ালেই তখন থেকে নানা সমস্যা দেখা দেয়।
প্র: বেশ ভয়ের ব্যাপার। সতর্ক থাকতে হবে তা হলে পঞ্চাশ পেরোলেই?
উ: অবশ্যই। আমরা সব সময় উপদেশ দিয়ে থাকি, সমস্যা থাকুক আর না-ই থাকুক, বছরে একবার পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারলে নিশ্চিন্তে থাকা যায়।
প্র: গাফিলতি হোক বা অনিচ্ছায়, হয়তো নিয়মিত পরীক্ষা করানো হয়নি। পরিণামে ক্যানসার ধরা পড়ল। প্রথম দিকে ধরা পড়লে কি তবে তা পুরোপুরি সেরে যায়?
উ: প্রথম দিকে ধরা পড়লে তা সেরে যায়। কারণ প্রস্টেটটা পুরোপুরি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। তাতে লাভ হয়, ক্যানসার পুরোপুরি নির্মূল হয়ে যায়। অনেকেই আছেন যাঁদের প্রথম দিকে ধরা পড়েছে এবং অপারেশনের পর সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।
প্র: প্রস্টেটটা পুরোপুরি বাদ দিলে অসুবিধে হবে না?
উ: হবে তো বটেই। কিন্তু এই অসুবিধেটুকু মানতেই হবে কারণ আগে তো জীবন।
প্র: যৌন ক্ষমতা বা ইচ্ছেও তো চলে যায়?
উ: কারও কারও যায়।
প্র: দেরি হয়ে গেলে বিপদ থেকে আর মুক্তি পাওয়া যায় কি?
উ: সমস্যা দেখা দেয় নানা ভাবে। প্রস্টেট ক্যানসার বোঝা যায় যখন প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়ে। রোগী অ্যানিমিয়ায় বা রক্তাল্পতায় ভোগেন। অনেকের রক্ত পড়ে না। সেটি হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তাও চট করে বোঝা যায় না। হাড়ের যন্ত্রণা বাড়তে থাকলে তা ধরা পড়ে। দুর্বল এবং ক্ষয়ে গিয়ে হাড় ভেঙেও যায়।
প্র: তখন?
উ: বেশি ছড়িয়ে পড়লে তখন আর প্রস্টেট বাদ দিয়ে কোনও লাভ হয় না। হরমোন থেরাপি বা কেমোথেরাপি দিয়ে সুস্থ রাখা হয়।
প্র: কিন্তু তাতে তো কোনও নিশ্চিন্তির উপায় নেই?
উ: তা ঠিক। রোগীকে অনেক দিন ভাল রাখা যায়।
প্র: ফ্যাট জাতীয় খাবার বেশি খেলে নাকি প্রস্টেট ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ে?
উ: একদম ঠিক। একটা বয়সের পরে ফ্যাট জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভাল। সবচেয়ে ভাল হয়, একটা ডায়েট চার্ট করিয়ে নিন। সেটা মেনে চললে দেখবেন সমস্যা অনেক কমে গেছে।
যোগাযোগ-৯৮৩১১৭৭১৮৮
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy