Advertisement
০২ জুন ২০২৪
Air pollution

Air Pollution-Autoimmunity: আর্থ্রাইটিস, কোলাইটিস, আলসার, প্রদাহের শঙ্কা বাড়ে দূষিত বায়ুর পরিবেশে: গবেষণা

দূষিত বায়ুর পরিবেশে দীর্ঘ দিন কাটালে আমাদের স্ট্রোক, ব্রেন ক্যানসার, গর্ভপাত ও নানা ধরনের জটিল মানসিক রোগের আশঙ্কা বাড়ে।

দূষিত বায়ুতে থাকলে আর্থ্রাইটিস, আলসার, কোলাইটিস। -ফাইল ছবি।

দূষিত বায়ুতে থাকলে আর্থ্রাইটিস, আলসার, কোলাইটিস। -ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২২ ১৬:০৩
Share: Save:

দূষিত বায়ুর দূষিত পরিবেশে বেশ কিছু দিন থাকলেই নানা ধরনের বিপদ ঘনিয়ে আসে আমাদের। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দূষণ কণারা মানুষের দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেই বিগড়ে দেয়। যে কাজটা তার করার নয়, দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দিয়ে সেই কাজগুলিই করিয়ে নেয় দূষিত বায়ুর পরিবেশ,পরিমণ্ডল। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম— ‘অটোইমিউনিটি’। বহু দিন ধরে দূষিত বায়ুর পরিবেশে থাকলে অটোইমিউনিটি ঘটিত নানা ধরনের জটিল রোগ বাসা বাঁধে আমাদের শরীরে। রোগগুলি হয়ে ওঠে জটিলতর।

রোগগুলির মধ্যে অন্যতম— রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস, নানা ধরনের প্রদাহ, ক্রন’স ডিজিজ, কোলাইটিস, আলসার ও লুপাস। আগের নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দূষিত বায়ুর পরিবেশে দীর্ঘ দিন কাটালে আমাদের স্ট্রোক, ব্রেন ক্যানসার, গর্ভপাত ও নানা ধরনের জটিল মানসিক রোগের আশঙ্কা বাড়ে।

ইটালির ভেরোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণা জানাল, বাতাসে ১০ মাইক্রন (পার্টিকুলেট ম্যাটার অথবা পিএম১০) বা আড়াই মাইক্রন ব্যাসের (পিএম২.৫) ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে, এমন দূষিত বায়ুর পরিবেশে দীর্ঘ দিন থাকলে রিওমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে প্রায় ৪০ শতাংশ। নানা ধরনের প্রদাহ, আলসার, কোলাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে ২০ শতাংশ। আর লুপাসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে ১৫ শতাংশেরও বেশি। বাতাসে যে আকারের দূষণ কণার জন্য ওই সব রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে সেই পিএম১০ বা পিএম২.৫ কণারা আসে মূলত গাড়িঘোড়ার পোড়ানো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলি থেকে।

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘আরএমডি ওপ্‌ন’-এ।

গবেষকরা দেখেছেন, প্রতি ঘন মিটার বাতাসে পিএম১০ দূষণ কণার পরিমাণ অন্তত ৩০ মাইক্রোগ্রাম থাকলেই সেই পরিবেশে মানুষের বসবাস খুব বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। আর সেই দূষণ কণা যদি পিএম২.৫ হয় তা হলে প্রতি ঘন মিটার বাতাসে সেই কণা ২০ মাইক্রোগ্রাম থাকলেই যথেষ্ট। তাতেই মানুষের শ্বাসকষ্টজনিত নানা ধরনের রোগ, প্রদাহ, রিওমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, আলসার, কোলাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণ বেড়ে যায়।

পিএম২.৫ কণারা আকারে পিএম১০ দূষণ কণাদের চেয়ে ক্ষুদ্রতর হয় বলে তা ফুসফুসে আরও বেশি পরিমাণে ও আরও তাড়াতাড়ি পৌঁছয়। তার ফলে, এই আকারের কণারা আমাদের পক্ষে আরও ক্ষতিকর।

গবেষকরা দেখেছেন, দূষিত বায়ুর পরিবেশে দীর্ঘ দিন থাকলে আমাদের নানা ধরনের অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ১২ থেকে ১৩ শতাংশ বেড়ে যায়।

তবে এই গবেষণাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বহু ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আলোকপাত হতে পারে। কারণ, ঠিক কোন কোন পর্যায়ে অটোইমিউনিটির রোগগুলির উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে, কী ভাবে তা ছড়ায়, সে সম্পর্কেও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। দূষিত বায়ুর কোনও এলাকায় থাকা সব বাসিন্দার ক্ষেত্রেই এই সব হয় কি না তা-ও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, যিনি ঘর থেকে প্রায় বেরনোই না দূষিত বায়ুর পরিবেশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও কমে আসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Air pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE