এই ভাবেই বিশ্বকাপের রঙে সাজছে দিল্লি।-নিজস্ব চিত্র।
ইন্ডিয়া গেটে পতপত করে সারা ক্ষণ উড়তে থাকা তেরঙাটা আজ যেন প্রতিনিধিত্ব করছে শুধুমাত্র ভারতীয় ফুটবলের।
অনূর্ধ্ব-১৭র ২১টি মুখের প্রচারেও যেন ব্যস্ত সে। সেই ভারতীয় পতাকাই আবার হাতে হাতে ঘুরছে স্টেডিয়ামের আশপাশে। পতাকা থেকে রিস্টব্যান্ড, টুপি থেকে ফেট্টি সব কিছুর রং আজ জাতীয় পতাকায় ঢঙে। আর টিকিটের সঙ্গে সঙ্গে সেই সব কিনতেও ব্যস্ত অনেকে। টিকিট পাওয়া মানেই তেরঙা উড়িয়ে আমেরিকাকে বুঝিয়ে দেওয়া, আমরাও পারি। আমরা খেলতে পারি, আয়োজনও করতে পারি।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে টিকিটের হাহাকার, কালোবাজারে বিকোচ্ছে পাঁচ গুণ দামে
আরও পড়ুন: ১২জন প্রাক্তনকে নিয়ে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের বোধন করবেন মোদী
যাতে আয়োজনে কোনও ঘাটতি না থাকে তার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে এসে কাজ দেখে গিয়েছেন খোদ কেন্দ্রীর ক্রীড়ামন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর। তাঁর কার্য সময়ের সব থেকে বড় ইভেন্ট। কোনও ফাঁক রাখতে চান না তিনি। তাই আয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে ডেকে নিয়েছেন দেশের সেরা প্রাক্তনদের।
দিল্লি এখন ফুটবলময়। এই দৃশ্য কলকাতায় দেখতে পাওয়াটা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। তবে তা ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও বর্তমানে অ্যাটলেটিকো কলকাতাকে ঘিরেই। ছোটদের ফুটবলকে কলকাতা কতটা কী ভাবে গ্রহণ করবে, তা সময়ই বলবে। কিন্তু, দিল্লি প্রমাণ করে দিল তারা কিন্তু আছে ছোটদের ফুটবলের সঙ্গেও। টিকিটের হাহাকার তো আগেই বুঝিয়ে দিয়েছে দিল্লির মানুষ ঠিক কতটা মুখিয়ে রয়েছে যুব বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখার জন্য। কিন্তু আগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে কাজ করছে একরাশ উদ্বেগও। নিজেদের দেশকে নিয়ে সেই ভাবনা। পারবে তো ভারত,এই প্রশ্নই ঘুরছে সবার মুখে মুখে। তাই শুক্রবার সকাল থেকেই দিল্লির সব রাস্তা গিয়ে মিশেছে জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে।
বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে যাবে ভারতের মাটিতে প্রথম বিশ্বকাপ। আপ্লুত পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে চুনী গোস্বামী। এই বিশ্বকাপ ঘিরে দিল্লি তার পুরোন ফুটবল আবেগ ফিরে পেয়েছে দেখে খুশি পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাক্তন অলিম্পিয়ান বলেন, “আমরা যখন খেলতে আসতাম বা যখন কোচিং করিয়েছি তখন দেখেছি ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের জন্য মাঠ ভরে যেত। দিল্লিতে আবার সেই আবেগটা দেখতে পাচ্ছি। ভাল লাগছে দিল্লি আবার ফুটবলে ফিরছে।”
ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলছিলেন ‘‘বিরাট ব্যাপার। ফুটবলের বিশ্বকাপ হচ্ছে বলে কথা। সে যেই বয়সেরই। আর আমাকে এই বিশাল ইভেন্টের মঞ্চে ডাকা হয়েছে সেটা আমার জন্যও গর্বের। কাল এক বার স্টেডিয়ামে গিয়েছিলাম। দারুণ লেগেছে। নিজেদের পুরনো দিনে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে।’’
এই মানুষগুলো ভারতীয় ফুটবলকে একটা পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন এক সময়। তার পর ভাইচুং ভুটিয়া, সুনীল ছেত্রীরা হাল ধরেছেন। পরের প্রজন্মও রেডি। এক সঙ্গে এত ভারতীয় ফুটবল তারকাকে দেখতে পারার উচ্ছ্বাসে টগবগ করে ফুটছে গোটা দিল্লি। এক সমর্থক তো বলেই ফেললেন, ‘‘আজ খেলা দেখতে না পারলে জীবনই বৃথা। শুধু কী খেলা। যাঁদের কখনও সামনে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি সেই পিকে, চুনীদের দেখতে পারব।’’ শুধু অমরজিৎ, অভিজিৎ, আনোয়ার আলিতে থেমে নেই দিল্লির ফুটবল ফিভার। তা ছড়িয়েছে অতীতেও। যা ছুঁয়ে যাচ্ছে এই প্রাক্তনদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy