যুগলবন্দি: মঙ্গলবার জাহির খানের পার্টিতে সুপারহিট বিরুষ্কা। ছবি: টুইটার
রীতিমতো পার্টির মেজাজে আনন্দ করতে করতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ইংল্যান্ডে রওনা হলেন বিরাট কোহালি-রা। ম্যাঞ্চেস্টারে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হানা নিয়ে উদ্বেগ যেখানে একেবারেই ধরা পড়েনি।
বরং গত ২৪ ঘণ্টায় দেখা গিয়েছে নানা রোম্যান্টিক কোলাজ। কখনও বান্ধবী অনুষ্কা শর্মার হাত ধরে ঢুকছেন বিরাট কোহালি। দু’জনে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে চিত্রসাংবাদিকদের জন্য পোজ দিচ্ছেন। জাহির খান সদ্য বাগ্দান সেরেছেন সাগরিকা ঘাটকে-র সঙ্গে। জাহির-রা পার্টি দিয়েছিলেন মঙ্গলবার রাতে। সেখানেও দেখা গিয়েছে বিরাট-অনুষ্কাকে।
বুধবার আবার সচিন তেন্ডুলকর তাঁর ফিল্মের বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন কোহালিদের জন্য। যে ফিল্ম মুক্তি পাচ্ছে শুক্রবার। সেখানেও সেরা আকর্ষণ হয়ে ওঠেন বিরাট ও অনুষ্কাই। প্রিয় নায়কের ফিল্ম দেখেই ইংল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হল গোটা ভারতীয় দল। বিকেলের দিকে ফিল্ম দেখতে বসার আগেই যুবরাজ সিংহ টুইট করেন, ‘সচিন: আ বিলিয়ন ড্রিমস দেখতে বসছি আমরা। মাস্টারকে অনেক শুভেচ্ছা।’
তবে ফিল্ম দেখার আগে সাংবাদিক বৈঠকে এসে কোহালি বলে দেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যালেঞ্জ যে কতটা কঠিন, তা তিনি ভালই জানেন। ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘‘বিশ্বের সেরা আটটা দল এখানে খেলে আর টুর্নামেন্টটাও ছোট, তা-ই আমার মনে হয় বিশ্বকাপের চেয়েও কঠিন এই টুর্নামেন্ট। বিশ্বকাপে শুরুর দিকে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও পরে তা সামলে নেওয়া যায়। কিন্তু এই টুর্নামেন্টে সব ম্যাচেই সেরা ফর্মে থাকতে হবে। না হলেই বিপদ।’’
ইংল্যান্ডে কোহালিদের প্রথম চ্যালেঞ্জ পাকিস্তান, ৪ জুন। যা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থার মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলাটা ঠিক হচ্ছে কি না? শুনে বিরাটের জবাব, ‘‘আপনার নিজের কী ধারণা? মনে হচ্ছে, আপনি নির্দিষ্ট একটা ধারণা নিয়ে এখানে এসেছেন। এক জন ক্রিকেটার হিসেবে বলছি, আমরা যখন ব্যাট করি, তখন উল্টো দিকে থাকা সঙ্গীর কথাও মাথায় রাখি না। তাই বুঝতেই পারছেন, আমরা খেলার বাইরের ব্যাপার নিয়ে বিশেষ ভাবনা-চিন্তা করার সময় পাই না।’’
কিন্তু ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানে আলাদা টেনশন নয়? বিরাটের জবাব, ‘‘দর্শকদের জন্য অবশ্যই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ একটা উত্তেজনার বিষয়। কিন্তু আমাদের কাছে এটা আর পাঁচটা ক্রিকেট ম্যাচের মতোই। আলাদা কিছু নয়। আর আমরা তো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই প্রথম কোনও ম্যাচে নামছি না। ভারতের হয়ে খেলতে আমাদের বাড়তি অনুপ্রেরণার প্রয়োজন হয় না।’’
এমন একটা কঠিন টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়ার আগে আইপিএলের ব্যর্থতা থেকে জীবনের যে শিক্ষাটা নিয়ে যাচ্ছেন কোহালি, সেটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
আরও পড়ুন: রোহিতের জীবনের কঠিনতম ছ’মাসের কথা শোনালেন তাঁর স্ত্রী
ঘরোয়া টেস্ট মরসুমে টানা সাফল্যের পরে আইপিএলে তাঁর দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর চরম ব্যর্থ হওয়ায় কোহালির উপলব্ধি, ‘‘এর পরেই আমি বুঝতে পারি, সব ম্যাচে সব কিছু করার ক্ষমতা আমার নেই। অনেকের সে রকম প্রত্যাশা থাকলেও মানুষ হিসেবে নিজের সীমাটা সবারই বুঝে নেওয়াই উচিত। সেটাই শিখে নিলাম।’’
ইংল্যান্ডে ২০১৪-য় টেস্ট সিরিজে ১৩৪ রান করেছিলেন বিরাট। এ বার সেই ইংল্যান্ডেই নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ তাঁর। এই কথা মনে করিয়ে দিতে ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘‘বিদেশি ক্রিকেটাররা ভারতে এসে ভাল কিছু করতে না পারলে, তা নিয়ে অত হইচই হয় না। কিন্তু আমাদের মাথার উপর সব সময়ই যেন খাঁড়া ঝোলে। তবে ইংল্যান্ডে গিয়ে আমার প্রমাণ করার কিছু নেই। আমার কাজ দলকে জেতানো। সেটাই করতে চাই। এটাই আমার অনুপ্রেরণা।’’
এ বার ভারত একে গত বারের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নামছে, তার ওপর দলটাও আগের বারের তুলনায় অভিজ্ঞ। অনেক সফলও। সে জন্য ভারত এ বার আরও এগিয়ে কি না, জানতে চাইলে কোহালি বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জটাই হল, গত বারের চ্যাম্পিয়ন আমরা, এটা ভুলে যাওয়া। গত বার আমরা একটা তরুণ দল ছিলাম, যারা ক্রিকেটকে ভরপুর উপভোগ করতে নেমেছিল। এ বারও আমাদের উদ্দেশ্য একই। গত কয়েক বছর ধরে আমরা একই উদ্দেশে মাঠে নামছি। এই মানসিকতা নিয়েই এক নম্বরে উঠেছি। এ বারও
এ ভাবেই আমাদের খেলতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy