সরফরাজ় খান। — ফাইল চিত্র।
ভারতের হয়ে অভিষেক হয়েছে সরফরাজ় খানের। দীর্ঘ পরিশ্রম এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রানের পর টেস্ট দলে ঢুকেছেন তিনি। তবে এই সাফল্য সহজে আসেনি। তিনি নিজে যেমন পরিশ্রম করেছেন, তেমনই বাবাকেও অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সে রকমই একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন সরফরাজ়ের বাবা নৌশাদ। জানিয়েছেন, জীবনের লড়াই শেখাবেন বলে সরফরাজ়কে রাতে খেতে দেননি অনেক দিনই।
এক টিভি চ্যানেলে নৌশাদ বলেছেন, “আমি যেটা পারিনি, ছেলেকে সেই ক্রিকেটার বানানোই আমার স্বপ্ন ছিল। মনে হচ্ছিল ওর জায়গায় আমিই টেস্টের টুপি পেয়েছি। ছোটবেলা থেকে কঠোর ভাবে মানুষ করেছি ওকে। কোনও দিন ঘুড়ি ওড়ায়নি। কখনও বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করতে যায়নি। রোজ ভোরে উঠে অনুশীলন করতে যেত। তার পর বাড়ি ফিরে বিকেলে আবার অনুশীলনে যেত। টেস্ট দলের টুপি পাওয়ার পর সব পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।”
এর পরেই তিনি বলেন, “শিক্ষা দিতেই মাঝেমাঝে ওর উপরে একটু কড়া হতাম। অনেক রাতেই ও খাবার না খেয়ে শুতে গিয়েছে। ওকে বোঝাতে চাইতাম কী ভাবে হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে রাতে ফুটপাতে ঘুমোয়। আমাদের গাড়ি ছিল। তবু ওকে নিয়ে ট্রেনে যাতায়াত করতাম, যাতে জীবনের আসল কষ্টটা বুঝতে পারে।”
মুম্বইয়ের ময়দানি ক্রিকেটের কথা উল্লেখ করে নৌশাদ বলেছেন, “সচিন তেন্ডুলকর এবং বিনোদ কাম্বলির মতো ক্রিকেটারেরা ময়দান থেকে উঠে এসেছেন। আজ সরফরাজ়ও একই কাজ করল। ৯২ বছরের ইতিহাসে মাত্র ৩১০ জন ক্রিকেটার ভারতের হয়ে টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছে।”
উল্লেখ্য, সরফরাজ়ের অভিষেকের দিন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে সরফরাজ় ভারতীয় দলের টুপি পাওয়ার পর বাবা এবং স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরেন। তার পরেই রোহিত যান নৌশাদের কাছে। সরফরাজ়ের বাবাকে ভারত অধিনায়ক বলেন, “আপনি যা করেছেন, তা সকলে জানে।” নৌশাদই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সরফরাজ়কে। তাই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রোহিত। সরফরাজ়ের স্ত্রীকেও শুভেচ্ছা জানান রোহিত। রোহিতকে কাছে পেয়ে নৌশাদ তাঁকে বলেন, “স্যর, আমার ছেলেটার খেয়াল রাখবেন।” রোহিত উত্তরে বলেন, “অবশ্যই।” ছেলেকে রোহিতের হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চাইলেন নৌশাদ। এত দিন তাঁর প্রশিক্ষণেই ছেলে বড় হয়েছে। এ বার দায়িত্ব রোহিতের হাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy