সমর্থকদের মাঝে ম্যাচের নায়ক ডু ডং। ছবি: উত্পল সরকার।
ডু ডংয়ের জোড়া গোল সঙ্গে রফিক আর রাহুলের এক-এক! ’৭৫-এর পর ছয়ে ছয় লাল-হলুদের! টানা ছ’বার কলকাতা লিগ জিতে ইতিহাস গড়লেন বিশ্বজিৎ ভট্টচার্যের ছেলেরা। সেই সঙ্গেই রবিবাসরীয় সন্ধ্যা রাঙালেন লাল-হলুদে!
ময়দানে জীবনের প্রথম ডার্বি ম্যাচের আগের দিন তাঁর স্বীকারোক্তি ছিল, শুরুর পাঁচ মিনিট নার্ভাস থাকবেন। কিন্তু, রবিবাসরীয় মহারণে নার্ভাসনেসের ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না ডু ডংয়ের খেলায়। ডার্বি ম্যাচের প্রথম পাঁচ মিনিটও কাটেনি। ইতিমধ্যেই এক গোলে এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল! সৌজন্যে, ডু ‘দ্য ডন’! কিং কংয়ের সঙ্গে যার নিয়মিত তুলনা টানতে শুরু করেছেন লাল-হলুদ সমর্থকেরা। হবে না-ই বা কেন! মাঠে যে ডনের মতোই দাপট দেখাচ্ছেন ডু ডং। এ পর্যন্ত কলকাতা লিগে অপরাজিত ইস্টবেঙ্গল। সেই রেকর্ড অক্ষত রাখতে সেই ‘ডনে’র পায়ের জাদুই এ দিন কাজে এসেছে। দু’মিনিটের মাথায় ফ্রি-কিক থেকে মোহনবাগানের জালে বল ঠেললেন ডং। বিশ্বমানের আরও একটি গোল তখনও বাকি ছিল। তা করলেন ৩৭ মিনিটের মাথায়। মোহন-বক্সে রফিককে কড়া ট্যাকল করে হলুদ কার্ড দেখেন সঞ্জয় বালমুচু। নাকি, ডংকে আরও একটি গোলের সুযোগ করে দিলেন! কারণ, ফের একটা ফ্রি-কিক। ফের বাঁ-পায়ের জোরালো শটে শিল্টনকে পরাস্ত করলেন ডং। এখনও পর্যন্ত লিগে ১২টা গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। নিজের পরিসংখ্যান ভাল করার জন্য আরও একটা ম্যাচ বাকি!
দু’গোলের পর মোহনবাগানের কাছে অবশ্য একটা সহজ সুযোগ এসেছিল। কিন্তু, বিশ্বজিতের ছেলেদের মজবুত রক্ষণ ছাড়িয়ে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি জুনেদিন। ৩৭ মিনিটেই দু’গোলে এগিয়ে ম্যাচে আরও চেপে বসে ইস্টবেঙ্গল। এর পর রফিক আর রাহুল দু’জনেই এক গোল করে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যায় লাল-হলুদকে।
কলকাতা লিগে অপরাজিত! সেই সঙ্গে ডার্বিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে ৪ গোলের মালা! চল্লিশ বছর পর টানা ছয় বার কলকাতা লিগ জিতে রেকর্ড গড়ার দিনে এমন স্কোরলাইন বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি লাল-হলুদের অতি বড় সর্মথকও। ডার্বির আগের দিন ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মোহন-কোচ সঞ্জয় সেন। লিগ জিতলেও ডার্বি হারিয়ে কলঙ্কের দাগ নিয়ে বাড়ি যেতে হতে পারে বলে। কিন্তু, রবিবাসরীয় ডার্বির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোচের কোনও কথারই মান রাখতে পারলেন না ডুডু-কেনরা। একপেশে ম্যাচে মাথা গরম করে বরং মাঠ ছাড়লেন ডুডু। আর দশ জনের মোহনবাগানের উপর আরও চেপে বসল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচ শুরুর দু’মিনিটের মাথায় গোল করে মোহনবাগানের মাঝমাঠের দমবন্ধ করে দেন বিশ্বজিতের ছেলেরা! সেই ফাঁসের গাঁট থেকে শেষ পর্যন্ত বেরোতে পারলেন না সঞ্জয়ের শিষ্যেরা। আরও দু’টি সহজ সুযোগ এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের হাতে। তবে, শিল্টনকে একা পেয়েও জালে বল ঠেলতে পারেননি তারা। তবে কি ’৭৫-এর শিল্ড ফাইনালের ৫-০ স্কোরলাইনের পুনরাবৃত্তি করা যেত? অবশ্যই যেত— এমনটাই দাবি এক কট্টর লাল-হলুদ সমর্থকের। তাঁর কথায়, “সময়াভাবে আরও একটা গোল দেওয়া গেল না।”
ইস্টবেঙ্গল: ব্যারেটো, রবার্ট, বেলো, গুরবিন্দর, রাহুল, বিকাশ, মেহতাব (তুলুঙ্গা), খাবরা, অবিনাশ, ডং, রফিক।
মোহনবাগান: শিল্টন, সুখেন, সঞ্জয়, জুবেদিন (সফর), সুমন, তীর্থঙ্কর, লালকমল, আসিফ, কেন, আজহারুদ্দিন (কাতসুমি), ডুডু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy