Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Mohun Bagan

চড়া মেজাজের সেমিফাইনালে ৩ গোল, ২ লাল কার্ড, ওড়িশার কাছে ১-২ হার মোহনবাগানের

আইএসএল সেমিফাইনালের প্রথম পর্বের জিততে পারল না মোহনবাগান। ওড়িশা এফসির কাছে ১-২ ব্যবধানে হারল হাবাসের ছেলেরা। দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে ২৮ এপ্রিল যুবভারতীতে আবার মুখোমুখি হবে দু’দল।

picture of Football

জয়ের উচ্ছ্বাস কৃষ্ণদের। ছবি: এক্স (টুইটার)।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ২১:২৯
Share: Save:

আইএসএল সেমিফাইনালের প্রথম পর্বের লড়াইয়ে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ভুবনেশ্বর গিয়েছিল লিগশিল্ড জয়ী মোহনবাগান। কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস চেয়েছিলেন, ভারতীয় ফুটবলে সবুজ-মেরুন শিবিরের দাপট অক্ষুণ্ণ রাখতে। কিন্তু ওড়িশা এফসির কাছে প্রথম পর্বের সেমিফাইনালে ১-২ ব্যবধানে হেরে গেল মোহনবাগান।

ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা সম্পূর্ণ কাজে লাগাল সের্খিয়ো লোবেরার ছেলেরা। প্রথম থেকেই আগ্রাসী মেজাজে শুরু করেন রয় কৃষ্ণ, প্রিন্সটনেরা। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নেওয়াই ছিল ওড়িশার ফুটবলারদের প্রাথমিক লক্ষ্য। তার আগেই অবশ্য মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন মনবীর সিংহ। ম্যাচের ৩ মিনিটে বাঁদিক থেকে আসা কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন মনবীর। পিছিয়ে পড়ার পরেই আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়ায় ওড়িশা। বাড়িয়ে দেয় খেলার গতিও। তাতেই মেলে সুফল। ১১ মিনিটের মাথায় সমতা ফেরায় ওড়িশা। জুয়ানের নেওয়া কর্নার থেকে মোহনবাগান বক্সে বল পেয়ে যান ফাঁকায় দাঁড়ানো কার্লোস ডেলগাডো। গোল করতে ভুল করেননি তিনি।

১-১ হয়ে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন লোবেরার ছেলেরা। ১৪ মিনিটে মোহনবাগানের বক্সে ফাঁকায় বল পান কৃষ্ণ। বিশাল কাইত ঝাঁপিয়ে আটকানোর চেষ্টা করলে ফাউল করে ফেলেন। কিন্তু ওড়িশার পেনাল্টির দাবি খারিজ করে দেন রেফারি। কারণ তার আগেই অফসাইডের জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন ফিজির স্ট্রাইকার। ৫ মিনিট পরে গোলের আরও একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে ওড়িশা। এই সময় ওড়িশার একের পর এক আক্রমণের সামনে কিছুটা চাপে পড়ে যায় মোহনবাগান। সবুজ-মেরুন ফুটবলারেরা একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে বল দখলে রাখতে পারছিলেন না। ওড়িশার গতির সঙ্গেও পাল্লা দিতে পারছিলেন না হাবাসের ছেলেরা। যদিও লড়াই ছাড়েনি সবুজ-মেরুন ফুটবলারেরা। এর মধ্যেও প্রতি আক্রমণে কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেছিল মোহনবাগান। ২২ মিনিটে জনি কাউকো, ২৪ মিনিটে দিমিত্রি পেত্রাতোসেরা গোল করার সুযোগ নষ্ট করেন। পেত্রাতোসের দুরন্ত শট আটকে ৩৪ মিনিটে ওড়িশার পতন রোখেন গোলরক্ষক অমরিন্দর সিংহ। ৩৯ মিনিটে ওড়িশাকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন কৃষ্ণ। এই গোলে ওড়িশার স্ট্রাইকারের কৃতিত্ব থাকলেও দায় এড়াতে পারে না মোহনবাগান রক্ষণ। মোহনবাগান ফুটবলারদের ভুলেই বক্সের মধ্যে বল পেয়ে যান কৃষ্ণ। গোলরক্ষক কাইতও আগে ভাগে গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে কৃষ্ণর কাজ সহজ করে দেন। প্রথমার্ধে আর গোল করতে পারেনি কোনও দলই।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে যায় ওড়িশা। মূলত প্রতিআক্রমণমূলক ফুটবল খেলতে শুরু করেন লোবেরার ছেলেরা। গোলের একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও সাফল্য পায়নি কোনও দলই। ৬৭ মিনিটে মাথা গরম করে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড এবং লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় মোহন স্ট্রাইকার আর্মান্দো সাদিকুকে। ১০ জনের মোহনবাগান আরও চাপে পড়ে যায়। আবার ৭৪ মিনিটে ডেলগাডো বক্সের মধ্যে হাতে বল লাগালে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড এবং লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। ফলে দু’দলই ১০ জনে হয়ে যায়। তাতেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি মোহনবাগান। বরং মোহন-রক্ষণকে ধারাবাহিক ভাবে ব্যস্ত রাখছিলেন ওড়িশার আক্রমণ ভাগের ফুটবলারেরা। ৮২ মিনিটে মোহনবাগানের পতন রোখেন কাইত। কৃষ্ণর কাছ থেকে বক্সের ভাল জায়গায় বল পেয়েও গোল করতে পারেননি জেরি। এর পরে মুহূর্তেরই প্রতিআক্রমণে উঠে প্রায় সমতা ফিরিয়ে ফেলেছিল মোহনবাগান। অনিরুদ্ধ থাপার শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। শেষ দিকে সমতা ফেরানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন পেত্রাতোসেরা। ওড়িশার রক্ষণ সতর্ক থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া ব্যবধান ধরে রাখতে বক্সেরনেমে এসেছিলেন ওড়িশার ছয়-সাত জন ফুটবলার। সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের দীর্ঘ সময় পায়ে বল রাখার প্রবণতাও কিছুটা দায়ী।

সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে আগামী ২৮ এপ্রিল যুবভারতীতে আবার মুখোমুখি হবে দু’দল। সেই ম্যাচে ২ গোলের ব্যবধানে জিততে পারলে আইএসএলের ফাইনালে উঠে যাবে মোহনবাগান। ১ গোলের ব্যবধানে ওড়িশাকে হারাতে পারলেও আশা থাকবে। সে ক্ষেত্রে সেমিফাইনালের ফয়সালা হবে টাইব্রেকারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mohun Bagan indian super league Odisha FC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE