Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

বন্যাবিধ্বস্ত ত্রিশূরে ফের গৃহহীন বিজয়ন

মহরাষ্ট্র, কর্নাটকের পাশাপাশি কেরলেও থাবা বসিয়েছে ভয়ঙ্কর বন্যা। ইতিমধ্যেই কেরলের ন’টি জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ২২। নিখোঁজ ৪০জন।

উদ্বিগ্ন: ত্রিশূরের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন বিজয়ন। নিজস্ব চিত্র

উদ্বিগ্ন: ত্রিশূরের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন বিজয়ন। নিজস্ব চিত্র

শুভজিৎ মজুমদার
শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৪৫
Share: Save:

এক বছর আগের ভয়ঙ্কর বন্যার স্মৃতি ভোলার আগেই ফের বিপর্যয়। আরও এক বার পরিবার নিয়ে শুক্রবার সকালে নিজের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হলেন ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার আই এম বিজয়ন।

মহরাষ্ট্র, কর্নাটকের পাশাপাশি কেরলেও থাবা বসিয়েছে ভয়ঙ্কর বন্যা। ইতিমধ্যেই কেরলের ন’টি জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ২২। নিখোঁজ ৪০জন। কোচি বিমানবন্দরের রানওয়ে জলের নীচে। একই অবস্থা বিজয়নের শহর ত্রিশূরেরও। গত বছর অগস্টেও একই রকম ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সে-বার পরিবার নিয়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরে এর্নানুলে শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। এ বার তাঁর ঠিকানা ত্রিশূরে কেরল পুলিশের অতিথি নিবাস। শুক্রবার দুপুরে আনন্দবাজারকে ফোনে আতঙ্কিত বিজয়ন বললেন, ‘‘গত তিন দিন ধরেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে ত্রিশূরে। তবুও ভাবিনি যে, এ বারও গৃহহীন হতে হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে আমার বাড়িতে জল ঢুকতে শুরু করেছে। এক তলায় প্রায় হাঁটু পর্যন্ত জল।’’ তিনি আরও বললেন, ‘‘গত বছর বন্যার সময় আমার বাড়িতে বিষধর সাপ ঢুকে পড়েছিল। এ বারও যা পরিস্থিতি, তাতে যে কোনও সময় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। তাই আর বাড়িতে থাকার ঝুঁকি নিতে পারিনি।’’

শ্বশুর বাড়ির বদলে পুলিশের অতিথি নিবাসে কেন গেলেন? হতাশ বিজয়ন বললেন, ‘‘এ বারের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। আমার বাড়ির সামনের রাস্তা জলের নীচে। গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় এর্নানুলে যাওয়া সম্ভব নয়।’’

বিজয়নের বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে রামবর্মাপুরমে কেরল পুলিশের অ্যাকাডেমি। শুক্রবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হেঁটেই সেখানে গিয়েছেন কিংবদন্তি ভারতীয় ফুটবলার। বিজয়ন বলছিলেন, ‘‘গাড়ি চলছে না। পুরো রাস্তাটাই হেঁটে যেতে হয়েছে। তাই একটা ছোট ব্যাগে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসই শুধু নিতে পেরেছি। আশা করছি, খুব একটা সমস্যা হবে না। পুলিশের অতিথি নিবাসে সব কিছুই পাওয়া যাবে।’’

পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেও বিজয়নের উদ্বেগ কমছে না। কোজ়িকোড়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি। সেখানেও এক অবস্থা। বলছিলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ফোনে কথা বলতে পারছি। পরিস্থিতিতে যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে কয়েক দিনের মধ্যে ফোনে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বলে আমার ধারণা। ওদের বলেছি, ত্রিশূর চলে আসার চেষ্টা করতে।’’

বন্যার কারণেই ইস্টবেঙ্গলের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় আসার পরিকল্পনাও ভেস্তে গিয়েছে বিজয়নের। বললেন, ‘‘রাজ্যের অবস্থা ভয়ঙ্কর। কেরল পুলিশের কর্মী হিসেবে আমারও একটা দায়িত্ব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা যাওয়া সম্ভব নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে

কলকাতায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Flood Thrissur I.M. Vijayan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE