ফিরতি পর্বের ডার্বিতেও সবুজ-মেরুনের জয়জয়কার। ছবি টুইটার
তিনটি গোল, প্রতিবারই জঘন্য ডিফেন্ডিং। আইএসএলের ১৮টি ম্যাচ খেলা হয়ে গেলেও এখনও রক্ষণের দুর্বল অবস্থা কাটাতে পারল না এসসি ইস্টবেঙ্গল। ফলস্বরূপ আইএসএলের ফিরতি পর্বেও এটিকে মোহনবাগানের কাছে ১-৩ ব্যবধানে হারতে হল লাল-হলুদকে। নির্বাসিত থাকায় গ্যালারি থেকেই সেই হার হজম করলেন কোচ রবি ফাওলার। জয়ের ফলে ১৮ ম্যাচে ৩৯ নিয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল এটিকে মোহনবাগান। এক ম্যাচ বেশি খেলে মুম্বই সিটি এফসি-র থেকে পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে গেল তারা। অন্যদিকে, ১৮ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট এসসি ইস্টবেঙ্গল থাকল নয়েই।
আই লিগে থাকাকালীন লিগের দুই পর্বেই লাল-হলুদকে হারানোর নজির দু’বার রয়েছে সবুজ-মেরুনের। আইএসএলের ইতিহাসে প্রথমবার খেলতে নেমেই চিরশত্রুর বিরুদ্ধে সেই অসামান্য নজির তৈরি করে ফেললেন আন্তোনিয়ো লোপেজ হাবাসের ছেলেরা। একটি গোল করে এবং দুটি গোল করিয়ে ডার্বির নায়ক সেই রয় কৃষ্ণ।
ডার্বিতে জ্বলে ওঠা যেন অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন ফিজির তারকা। প্রথম ডার্বিতে প্রথম গোল করেছিলেন তিনিই। শুক্রবারও সেই ধারাই বজায় থাকল। শুরু থেকেই এসসি ইস্টবেঙ্গলকে চাপে রেখেছিল এটিকে মোহনবাগান। মনবীর সিংহের সঙ্গে জুটি বেধে দলকে এগিয়ে দেওয়ার সুযোগ এসেছিল কৃষ্ণের সামনে। কিন্তু অল্পের জন্য সেই সুযোগ নষ্ট হয়।
কিন্তু নিজের কাজ করতে বেশি সময় নেননি ফিজির স্ট্রাইকার। ১৫ মিনিটের মাথায় নিজেদের বক্স থেকে লম্বা বল বাড়ান তিরি। লাল-হলুদের রক্ষণে তখন সবাই অনুপস্থিত! কৃষ্ণ কার্যত একাই ছিলেন। গতিতে বাকিদের পিছনে ফেলে এবং অনায়াসে সুব্রত পালকে কাটিয়ে বল গোলে ঠেলে দেন তিনি।
ম্যাচের আধিপত্য তারপরেও হারায়নি এটিকে মোহনবাগান। চাপ বজায় রেখেছিল। তবে পাল্টা আক্রমণে মাঝে মাঝে হানা দিচ্ছিল লাল-হলুদও। সেই চাপ থেকেই খেলার বিপরীতে গিয়ে গোল তুলে নেয় তারা। রাজু গায়কোয়াড়ের লম্বা থ্রো ক্লিয়ার করতে গিয়েছিলেন তিরি। বল তাঁর মাথায় পিছনে লেগে নিজেদেরই জালে জড়িয়ে যায়। সমতা ফিরিয়ে রক্তের স্বাদ পাওয়া লাল-হলুদ ফের আক্রমণ হানিয়েছিল। সে সময় সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে এগিয়েও যেতে পারত।
ফাওলারের ছকে যে গলদ রয়েছে, সেটা ম্যাচ চলাকালীনই বুঝতে পেরেছিলেন হাবাস। দুই উইংকে আরও বেশি সক্রিয় করে দিয়েছিলেন। এদিন অফ ফর্মে থাকা মার্সেলিনহোকে আরও একটু নিচে নামিয়ে সামনে এগিয়ে দেন ডেভিড উইলিয়ামসকে। দ্বিতীয় গোল এল সে ভাবেই। কৃষ্ণর হেড সুব্রতর হাতে জমা পড়ার পর তিনি তা পাস দেন ফক্সকে। ফক্স আর এক সতীর্থকে পাস দেওয়ার আগেই তা কেড়ে নেন কৃষ্ণ। দ্রুত বাঁ দিকে থাকা উইলিয়ামসকে পাস দেন। জোরালো নিচু শটে দলকে এগিয়ে দেন উইলিয়ামস।
তৃতীয় গোলের পিছনেও দায়ী লাল-হলুদ রক্ষণ। বল ধরে কর্নারের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন কৃষ্ণ। সে সময় তাঁকে জায়গা দিয়ে ক্রস করার সুযোগ দেন নারায়ণ। বক্সে লাফিয়ে উঠে জোরালো হেডে তৃতীয় গোল করেন হাভি।
এসসি ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে একমাত্র চোখে পড়ল ব্রাইট এনোবাখারেকে। বেশ কিছুচোখে পড়ার মতো মুভ তৈরি করেও তিনি সেই একই ভুল করছিলেন। বল বেশিক্ষণ পায়ে ধরে রাখছিলেন। ফলে কোণ ছোট করে এনে ব্রাইটকে পায়ের জালে জড়িয়ে ফেলতে সময় লাগছিল না সবুজ-মেরুন ডিফেন্ডারদের।
বাকি তিন মূল অস্ত্র জা মাঘোমা, মাঠি স্টেনম্যান, অ্যান্টনি পিলকিংটনকে তো খুঁজেই পাওয়া গেল না। লাল-হলুদের সহকারি কোচ টনি গ্রান্ট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দ্বিতীয় পর্বের ডার্বিতে অন্য লাল-হলুদকে দেখতে পাওয়া যাবে।
কার্যত দেখা গেল, বদলায়নি কিছুই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy