উইম্বলডনেই শুরু হয়েছিল আমার যাত্রা।
প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন শুরু হয় একটা মাঠে বা আমার মতো বাবা-মায়ের সঙ্গে। দেশের হয়ে খেলার জন্য বাবা-মা মাঠে যাওয়ার সময় আমিও যেতাম। সেখানেই আমার স্বপ্নটা আস্তে আস্তে বোনা শুরু।
একটা সময় এমন আসে যখন কারও একটা উচ্চতা ছোঁয়া, একটা জায়গায় উঠে আসা অন্যদের থেকে তাকে আলাদা করে দেয়। ১৯৯০-এ জুনিয়র উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আমায় স্পটলাইটে নিয়ে এসেছিল। মনে আছে ট্রফি জেতার পর আমি স্পনসরও পেয়েছিলাম। যেটার তখন খুব দরকার ছিল। সঙ্গে পেয়েছিলাম ক্রীড়াবিশ্বের স্বীকৃতি। ২৬ বছর পরও তাই উইম্বলডন আমার কাছে স্পেশ্যাল। দীর্ঘ কেরিয়ারের আশীর্বাদটা সঙ্গে আছে তাই এখনও উইম্বলডনে নামলে সেই প্রথম জুনিয়র ট্রফি পাওয়ার মতো একই রকম উচ্ছ্বাসটা টের পাই।
ফ্যাশন ভালবাসি বলে হয়তো কখনও কানের দুল পরে, নতুন নতুন চুলের ছাঁটে কোর্টে নেমেছি। তবে মনের গভীরে কিন্তু আমি ঐতিহ্যবাদী। আমি ইতিহাস ভালবাসি, যে পরিবেশ আর রোম্যান্স উইম্বলডনে লেগে থাকে সেটা দারুণ প্রিয়। এমন একটা জাঁকজমক আর ঐতিহ্য উইম্বলডনের সঙ্গে জুড়ে থাকে বিশ্বের অন্য কোনও এরিনার সঙ্গে তার তুলনা করা যায় না। এই ঐতিহ্যটার সঙ্গে নিজেরও একটা যোগাযোগ পাই, যেটাকে আমি খুব সম্মান করি। এখানকার ঘাসের গন্ধটা নেশার মতো, সবুজ মখমল ধরিয়ে দেয় আমন্ত্রণের চিঠি।
আগের মতো টুর্নামেন্ট এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে সার্ভ আর ভলি ট্র্যাকের কোর্টে গভীর ছাপ ফেলে দেওয়ার ব্যাপারটা আর দেখা যায় না। বদলে সেই ছাপ পড়ে যাওয়াটা এখন দেখা যায় বেসলাইনে। এতেই স্পষ্ট নেটে-রাশারদের যুগ এখন শেষ। এটা বল ক্রাশারদের দাপটের যুগ। যত দিন গিয়েছে টেনিস বল ভারী করা হয়েছে আর কোর্ট হয়েছে ততটাই শক্ত। যদিও এ সবের পরও আমার কাছে ঘাসের কোর্টে খেলার ব্যাপারটা ষাড়ের সামনে লাল পতাকা নাড়ানোর মতো। তখন একটাই কথা মনে হয় আমায় সামনে চার্জ করে নিজের অ্যাথলেটিক দক্ষতাটা ব্যবহার করতে হবে।
গ্র্যান্ড স্ল্যামে নামার আগে প্রচুর ম্যাচ প্র্যাকটিসের প্রস্তুতিটা আদর্শ। যাতে প্রতিযোগিতায় নামার আগে লড়াইয়ের ধারটা যতটা সম্ভব তীক্ষ্ণ করে নেওয়া যায়। তবে দীর্ঘদিন ট্যুরে আছি বলে গ্র্যান্ড স্ল্যামে নামার আগে আমার শরীর কী চাইছে সেটা ঠিক বুঝতে পারি। তাই নিজের প্রস্তুতিতে জিমে প্রচুর সময় দিচ্ছি। ব্যালান্স আর গতি বাড়ানোর জন্য মার্শাল আর্টসও প্র্যাকটিস করছি। অলিম্পিক্সের কথাও মাথায় রেখে পায়ের শক্তি বাড়ানোর জন্য শরীরের আড়াই গুন ওজন তুলছি। অন্য যে কোনও সারফেসের থেকে ঘাসে হাঁটু অনেক বেশি মুড়তে হয়। ঘাসের কোর্টে সেই শাসন করবে যে বলের নীচে পৌঁছে গিয়েও আগাগোড়া ভারসাম্য রাখতে পারবে। আগামী দু’সপ্তাহে এসডাব্লিউনাইনটিনে নিজের সেরাটা নিংড়ে দেওয়ার চেষ্টাই থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy