যুযুধান: আজ ফেড কাপে দ্বৈরথ সনি ও সুনীলের। ফাইল চিত্র
সনি নর্দে বনাম সুনীল ছেত্রী দ্বৈরথের আগে দুই শিবিরের আবহটাই বদলে গিয়েছে। ভুবনেশ্বরে চনমনে মোহনবাগানের ফুটবলাররা। আতঙ্ক বাড়ছে কটকে বেঙ্গালুরু এফসি-র অন্দরমহলে!
বৃহস্পতিবার সকাল দশটা নাগাদ ভুবনেশ্বরে টিম হোটেলের লবিতে নামলেন সনি নর্দে, ড্যারেল ডাফি-রা। আগের রাতে লাজং এফসি-কে ৩-২ গোলে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে খেলা কার্যত নিশ্চিত করে ফেলার স্বস্তি তাঁদের শরীরী ভাষাতেই স্পষ্ট।
শুক্রবার প্রতিপক্ষ বেঙ্গালুরু। অথচ আশ্চর্যরকম ভাবে উদ্বেগহীন মোহনবাগানের ফুটবলাররা। হোটেলের লনে মাত্র আধ ঘণ্টাতেই শেষ প্রস্তুতি। তা-ও আবার ফিজিক্যাল ট্রেনার গার্সিয়া মিরান্দার তত্ত্বাবধানে। কোচ সঞ্জয় সেন ব্যস্ত থাকলেন ফুটবলারদের জন্য ডাব এসেছে কি না, তার খোঁজেই।
ঠিক উল্টো ছবি হাইওয়ের উপরে সুনীল ছেত্রীদের টিম হোটলে। ডিএসকে শিবাজিয়ান্স এফসি-র বিরুদ্ধে হারের ফলে ফেডারেশন কাপে বেঙ্গালুরুর ভবিষ্যৎই এখন সঙ্কটে। এই পরিস্থিতিতে আগের দিন যাঁরা ম্যাচ খেলেছিলেন, তাঁদেরও বিশ্রাম দেননি কোচ আলবের্তো রোকা। বৃহস্পতিবার বিকেলে কটকের পুলিশ মাঠে পুরো দলকেই ঘণ্টাখানেক প্র্যাকটিস করান বার্সেলোনায় ফ্র্যাঙ্ক রাইকার্ডের সহকারী।
টানা ম্যাচ ও প্রচণ্ড গরমের জন্য বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে প্রথম দলের বেশ কয়েকজনকে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন সঞ্জয়। তিনি বললেন, ‘‘ফুটবলারদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, কে কে বিশ্রাম নিতে চায়। ওরা সকলেই খেলতে চাইছে। কিন্তু আমি খেলাব না।’’
আরও পড়ুন:চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শুধুই বিরাট নির্ভরতা নয়: কপিল
সবুজ-মেরুন অন্দরমহলের খবর, সনি, ডাফি ও আনাস এডাথোডিকা-কে বিশ্রাম দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। কিন্তু হাইতি তারকা এই ম্যাচটা খেলতে চাইছেন। সেই সঙ্গে এটাও দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে সুনীলের কোনও লড়াই নেই। ম্যাচটা মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরুর মধ্যে। একই ব্যাখ্যা জাতীয় দলের সর্বোচ্চ গোলদাতারও। সুনীল বলেছেন, ‘‘ভারতীয় ফুটবলে এই ম্যাচটাও ডার্বি। দারুণ ছন্দে আছে মোহনবাগান। দেখা যাক কী হয়।’’
আই লিগে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে ড্র করেছিল মোহনবাগান। হোম ম্যাচে ৩-০ গোলে জিতেছিলেন সনি-রা। তবে এএফসি কাপের প্রথম লেগে ১-২ গোলে জেতেন সুনীলরা।
এ বার মহানদীর তীরে কী হবে?
সঞ্জয় চাইছেন বেঙ্গালুরুকে ফেডারেশন কাপ থেকেই ছিটকে দিতে। বললেন, ‘‘জয়ের ধারা বজায় রাখতে চাই। তা ছাড়া আমরা জিতলে ওরা ছিটকে যাবে ফেডারেশন কাপ থেকে। বেঙ্গালুরু দারুণ দল। ফুটবলে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। কে বলতে পারে, ওরা ফাইনালে উঠবে না!’’
শুক্রবার লাজং এফসি যদি শিবাজিয়ান্সকে হারিয়ে দেয়, সে ক্ষেত্রে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ড্র করলেই শেষ চারে পৌঁছে যাবেন সুনীলরা। দুর্ধর্ষ গতিতে ছুটতে থাকা মোহনবাগানকে কি থামানো সম্ভব?
বেঙ্গালুরু কোচ অবশ্য এখনই হাল ছাড়তে রাজি নন। তিনি বলেছেন, ‘‘এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার পথ আমাদেরই খুঁজে বার করতেই হবে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘মোহনবাগান দুর্ধর্ষ দল। কিন্তু আমাদের ফুটবলাররা সকলেই মরিয়া ম্যাচটা জিততে। আমি বিশ্বাস করি, ওদের সেই ক্ষমতা আছে।’’
প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে গত বছর এএফসি কাপের ফাইনাল খেলা বেঙ্গালুরুর এই অবস্থা কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ফুটবলার বললেন, ‘‘রোকার স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো সময় আমরা পাইনি। ব্যর্থতার অন্যতম কারণ সেটাই।’’
মোহনবাগান কোচ রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার উদাহরণ দিয়ে বললেন, ‘‘২০১২ সালের পর থেকে লা লিগা জিততে পারেনি রিয়াল। লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস থাকা সত্ত্বেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে গিয়েছে বার্সা। সব দলেরই খারাপ সময় আসে। বেঙ্গালুরুর ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলে ওরা এখনও অন্যতম সেরা শক্তি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy