জাবিভাকা: রুশ বিশ্বকাপের ম্যাসকট।
মাঝখানে আর একটা মাস। তার পরেই রাশিয়ায় শুরু হয়ে যাবে বিশ্বকাপ ফুটবল। ১৪ জুন গ্রুপ ‘এ’-র প্রথম ম্যাচেই মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে সৌদি আরবের প্রতিপক্ষ রাশিয়া।
কিন্তু তার আগেই ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের ঘুম ছুটেছে ফুটবল-গুন্ডাদের সামলাতে। যার একটা বড় অংশই নাকি রয়েছে রাশিয়ায়। এমনটাই দাবি ইংল্যান্ডের সংবাদ মাধ্যমের। পাশাপাশি, পুতিন প্রশাসনের চিন্তা আরও বেড়েছে ইংল্যান্ডের ফুটবল-দাঙ্গাবাজদের হুমকিতে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই প্রচারমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারা আবার জানিয়ে দিয়েছে, ‘‘বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার দু’সপ্তাহ আগে রাশিয়ায় ঢুকে পড়ব। তার পরে রুশ দাঙ্গাবাজদের কোনও বেমক্কা আচরণ দেখলেই উচিত শিক্ষা দিতে হবে। তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত দল তৈরি হয়েছে এ বার।’’
রাশিয়ার ফুটবল-গুন্ডাদের তাও আগাম ধরপাকড় করে গারদে ভরে রাখা যাবে। কিন্তু বিদেশ থেকে যদি ফুটবল-পর্যটকের ছদ্মবেশে দাঙ্গাবাজরা ঢুকে পড়ে রাশিয়ায়, তা সামলানোর রূপরেখাই এখন তৈরি করছেন রাশিয়ার পুলিশ ও গোয়েন্দারা। উঠে আসছে, দু’বছর আগে ইউরো কাপে রাশিয়া বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচে মার্সেইয়ে দু’দেশের দাঙ্গাবাজদের মারপিটে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা। যেখানে গুরুতর আহত হয়েছিলেন দুই ইংরেজ সমর্থক। স্টেডিয়ামের চেয়ার ছাড়াও ভাঙচুর হয় আশেপাশের ক্যাফে, রেস্তরাঁও। ফরাসি পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে বাধ্য হয়। গ্রেফতারও করা হয় রাশিয়া ও ইংল্যান্ডের বেশ কিছু সমর্থককে।
রাশিয়ায় এই ফুটবল দাঙ্গাবাজদের বলা হয় ‘আল্ট্রাস’। আর এদের মাধ্যমেই নাকি গত কয়েক বছরে রাশিয়ার ফুটবল মাঠে ছড়িয়েছে নয়া-নাৎসিবাদ। এরা যে মাঠে কেবল বিপক্ষ সমর্থকদের মারধর করে ঝামেলা পাকায়, তা-ই নয়। বিপক্ষ ফুটবলারদের সম্পর্কে বর্ণবিদ্বেষমূলক আচরণ ও মন্তব্য করতেও সিদ্ধহস্ত।
গত মার্চে রাশিয়ান কাপের ম্যাচে কেপ ভার্দের ফুটবলার নুনো রোচা তাঁর ক্লাব তন্সোর হয়ে পেনাল্টি নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়েই তাঁকে উদ্দেশ্য করে শুরু হয় বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য এবং বাঁদরের ডাক। এপ্রিল মাসেই রাশিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের প্রীতি ম্যাচে সেন্ট পিটার্সবার্গে খেলা চলাকালীন পল পোগবা এবং ওসমান দেম্বেলের উদ্দেশেও বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য উড়ে এসেছিল। যার পরে রুশ উপপ্রধানমন্ত্রী ভিতালি মুতকো মন্তব্য করেন, ‘‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফুটবলার রাশিয়ায় খেলেন। এ রকম কোনও সমস্যা এ দেশে নেই।’’
কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক এক মাস আগে রাশিয়ার ক্লাব সিএসকেএ মস্কোর সমর্থক রবার্ট উস্তিয়ান বলছেন, ‘‘ফুটবল মাঠে দাঙ্গাবাজদের মাধ্যমে নয়া-নাৎসিবাদ মাথা চাড়া দিচ্ছে তা স্বীকার করলেই আমাদের শাসকরা মনে করেন, গোটা দেশ বর্ণবিদ্বেষী বা ফ্যাসিস্ত তকমা পাবে। তাই সত্যিটা স্বীকার করতে এত সমস্যা। আর প্রশাসন কড়া হাতে তা দমন না করায় নবীন প্রজন্মের দর্শকদের একটা বড় অংশই এই জাতীয় ঘৃণ্য আচরণ করছে খেলা দেখতে গিয়ে।’’
তবে বিশ্বকাপে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ক্রেমলিনও যে সচেষ্ট তার প্রমাণও মিলেছে। ইতিমধ্যেই গোপনে এই দলগুলোর পান্ডাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের কাউকে পাঠানো হয়েছে সংশোধনাগারে। কেউ আবার, ফের ফুটবল মাঠে এ রকম করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছে। কিন্তু বিশ্বকাপ শেষ হলে কী হবে, তা জানা নেই কারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy