কোচ ভারতী ঘোষের সঙ্গে স্মরণ এবং প্রিয়ম। নিজস্ব চিত্র
১ মে থেকে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মূক ও বধিরদের অলিম্পিক্স বা ডিফলিম্পিক্স। সেখানেই খেলতে যাচ্ছেন শিলিগুড়ির প্রিয়ম চক্রবর্তী ও স্মরণ দাস। দু’জনেই খেলবেন টেবিল টেনিসে। তাঁরা প্রশিক্ষণ নেন দ্রোণাচার্য তথা প্রাক্তন টেবিল টেনিস খেলোয়াড় ভারতী ঘোষের কাছে।
শিলিগুড়ির দেশবন্ধু পাড়ার বাসিন্দা প্রিয়ম। ছোটবেলা থেকে বোঝা না গেলেও একটু বড় হতেই বাড়ির লোক জানতে পারেন প্রিয়ম মূক ও বধির। তবে থেমে থাকেনি পরিবার। তাঁর দিদি প্রিয়া চক্রবর্তী বলেছেন, “ছোট থেকে খেলা ভালবাসত প্রিয়ম। যে কোনও খেলা সহজেই রপ্ত করে নিতে পারত। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সব খেলা খেলতে পারেনি। তখনই হঠাৎ আমরা ভারতী ঘোষের কথা জানতে পারি। তিনি সুস্থ বাচ্চাদের পাশাপাশি মূক ও বধিরদেরও টেবিল টেনিস খেলা শেখাতেন। ভাইকে সেখানেই ভর্তি করি। আজ প্রায় ১৫ বছর ধরে প্রিয়ম তাঁর কাছেই খেলা শিখছে। জেলার পাশাপাশি রাজ্য ও জাতীয় স্তরেও খেলেছে ও।” প্রিয়মের বাবা ২০১০ সালে মারা যান। সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন তিনি। খুব অল্প বয়সেই বাবাকে হারিয়ে খানিকটা দিশেহারা হলেও থেমে থাকেননি প্রিয়ম।
অন্য দিকে, শিলিগুড়ির দেবাশিস কলোনির বাসিন্দা স্মরণের বাবা পরিমল পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী। তিনি বলেছেন, “ছোটবেলায় স্মরণ কথা বলতে পারলেও, পরে ডাক্তার জানায় ও মূক ও বধির। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে গেলে কিছু করতেই হত। সেটা ভেবেই ভারতী ঘোষের কাছে স্মরণকে টেবিল টেনিসে ভর্তি করি।” জেলা, রাজ্য ও জাতীয় স্তরের একাধিক পদক জিতেছেন তিনি। ২০১৬ সালে জামশেদপুরে জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন, ২০১৭-তে চেন্নাইতে জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন, ২০১৯-এ চেন্নাইয়ে ফের জুনিয়ন চ্যাম্পিয়ন হন তিনি।
প্রিয়ম ও স্মরণের কোচ ভারতী ঘোষ বলেন, “আজ আমার গর্বের মুহুর্ত। এর আগেও এ শহর থেকে অনেক মূক ও বধির খেলোয়াড় ডিফলিম্পিক্সে অংশগ্রহণ করেছে। পদকও জিতেছে। একজন সুস্থ স্বাভাবিক খেলোয়াড়কে অলিম্পিক্সে যেতে হলে যে পরিশ্রম করতে হয়, এদের একই পরিশ্রম করতে হয়। ছোট থেকে ওদের আমি খেলা শেখাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, দু’জনই দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy