Advertisement
১৮ মে ২০২৪

কোহালির তিনশো শুধু সময়ের অপেক্ষা

কোহালির ব্যাটিংয়ে এখন যেটা প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা হল ওর স্ট্রাইক রেট। নাগপুরের স্লো উইকেটেও প্রায় আশি স্ট্রাইক রেট রেখে ডাবল সেঞ্চুরি করে গেল। আর ফিরোজ শাহ কোটলায় ২৮৭ বলে ২৪৩ রান করল ৮৪.৬৬ স্ট্রাইক রেট রেখে।

দাপট: ১৮ মাসে ছ’নম্বর ডাবল সেঞ্চুরির পথে বিরাট। ছবি: পিটিআই।

দাপট: ১৮ মাসে ছ’নম্বর ডাবল সেঞ্চুরির পথে বিরাট। ছবি: পিটিআই।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:২৮
Share: Save:

নিজে যখন ক্রিকেট খেলতাম, সুনীল গাওস্করকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। যখন নির্বাচক ছিলাম, সচিন তেন্ডুলকরকেও কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। কিন্তু এই দুই কিংবদন্তি ক্রিকেটারের কথা মাথায় রেখেও বলব, বিরাট কোহালি এখন যত সহজে রান করছে, সে রকম সহজ ভাবে স্কোর করতে আমি অন্তত কাউকে দেখিনি।

কোহালির ব্যাটিংয়ে এখন যেটা প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা হল ওর স্ট্রাইক রেট। নাগপুরের স্লো উইকেটেও প্রায় আশি স্ট্রাইক রেট রেখে ডাবল সেঞ্চুরি করে গেল। আর ফিরোজ শাহ কোটলায় ২৮৭ বলে ২৪৩ রান করল ৮৪.৬৬ স্ট্রাইক রেট রেখে। এত লম্বা ইনিংসে এ রকম স্ট্রাইক রেট রেখে যে কোনও ব্যাটসম্যান খেলতে পারে, সেটা ভাবাই যায় না। আর এই স্ট্রাইক রেটটার কথা মাথায় রেখে আমি একটা ভবিষ্যদ্বাণী করতে চাই। রবিবার কোটলায় কোহালি ওর টেস্টে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিটা ফস্কাল ঠিকই, কিন্তু আমি জোর দিয়ে বলছি, টেস্টে অন্তত একটা ট্রিপল সেঞ্চুরি ওর ব্যাট থেকে আমরা পাবই।

অনেকেই বলতে পারেন, ক্রিকেটের মতো অনিশ্চয়তার খেলায় কী ভাবে এই ভবিষ্যদ্বাণী করছেন? আমি বলব, ক্রিকেট বিজ্ঞানের কথা মাথায় রেখেই এই কথা বলছি।

কেন কোহালিকে নিয়ে এ রকম কথা বলা যায়? প্রথমেই বলব, ওর স্ট্রাইক রেটের কথা। ট্রিপল সেঞ্চুরি আপনি তখনই করতে পারেন, যখন আপনি দ্রুত রান তুলতে পারবেন। যেমন ডন ব্র্যাডম্যান, বীরেন্দ্র সহবাগ, ব্রায়ান লারা, ক্রিস গেইল। যাদের দু’টো করে ট্রিপল সেঞ্চুরি আছে। কোহালির কাছে দ্রুত রান তোলার ব্যাপারটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ও চার নম্বরে ব্যাট করতে নামে। ফলে কোহালির হাতে সময়টা কম থাকে। তিনশো রান করতে গেলে দ্রুত রান ওকে তুলতেই হবে। এবং ঠিক এই কাজটাই এখন করছে কোহালি।

কোহালির কথায় একটা অবিশ্বাস্য তথ্য সামনে চলে আসছে। সেটা হল, বছর দেড়েক আগেও টেস্টে কোনও ডাবল সেঞ্চুরি ছিল না কোহালির। কিন্তু গত আঠারো মাসে ছ-ছ’টা ডাবল সেঞ্চুরি হয়ে গেল ওর। ‘বুক ক্রিকেটে’ও এ রকম পারফরম্যান্স ভাবা যায় না!

কোহালির এই সাফল্যের পিছনে কতগুলো কারণের কথা আলাদা করে বলতে চাই।

ফিটনেস: যেখানে ওকে দশে দশ দেব। এই জায়গায় আমি ওকে গাওস্কর, সচিনের থেকেও এগিয়ে রাখব। এমনকী এই প্রজন্মের বাকি ব্যাটসম্যানদের থেকেও ও এগিয়ে। দুর্দান্ত ফিটনেস বলেই লম্বা ইনিংস খেলতে সমস্যা হয় না। আবার রানিং বিটউইন দ্য উইকেটসও এত ভাল ওই ফিটনেসের জন্য। দারুণ খুচরো রান নিতে পারে বলে ওর স্ট্রাইক রেটটাও এই জায়গায়।

মানসিকতা: এখানে আমি দশে ন’নম্বর দেব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার পরে শুরুর দিকে ওর মনঃসংযোগ নিয়ে একটু সমস্যা ছিল। যেটা ও দারুণ ভাবে কাটিয়ে উঠছে।

টেকনিক: দশে সাড়ে নয়। এত ভাল টেকনিক বলে কখনও বোলাররা ওকে চাপে ফেলতে পারে না। সব রকম বলের জন্য স্ট্রোক আছে ওর হাতে। হ্যাঁ, মানছি ইংল্যান্ড সফরে অফস্টাম্পের বাইরে জিমি অ্যান্ডারসন ওকে সমস্যায় ফেলেছিল। কিন্তু আমার বিশ্বাস, সেই সমস্যায় আর পড়বে না কোহালি।

এটাই ক্রিকেট বিজ্ঞান। যার ওপর ভরসা করেই ভবিষ্যদ্বাণীটা আমি করে ফেললাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE