তীব্র লড়াই করে অবনমন থেকে বাঁচলেও পরের মরসুমের আই লিগ খেলা হচ্ছে না তিন ক্লাবগোয়ার চাচির্ল ব্রাদার্স, কলকাতার ইউনাইটেড স্পোর্টস এবং শিলংয়ের রাংদাজিদের।
এএফসি-র লাইসেন্সিং শর্ত পূরণ করতে না পারায় তিনটি দলকেই বুধবার ছাঁটাই করে দিল ফেডারেশন। ফলে আই লিগ এবং ফেড কাপে খেলার যোগ্যতা হারাল তারা। বাতিল করা হল আই লিগ থেকে নেমে যাওয়া মহমেডানকেও। ছাড়পত্র না পাওয়ায় ফেড কাপে তারাও খেলতে পারবে না।
দিল্লির ফুটবল হাউসে এ দিন দুপুরে লাইসেন্সিং কমিটির সভার পর চেয়ারম্যান গিরিজা মুঙ্গলি বলে দিলেন, “মোট ন’টি ক্লাব পাস লাইসেন্সিং শর্ত পূরণ করেছে। এ বার আই লিগ ওয়ানে ওঠা রয়্যাল ওয়াহিংডো কোনও কাগজ জমা দেয়নি। ওঁরা আরও এক বছর সময় চেয়েছে, আমরা সেটা দিচ্ছি।” সভায় উপস্থিত ছিল সব দলই। শুধু মহমেডানের বিষয়ে আলোচনার সময় উপস্থিত ছিলেন না আইনজীবী উষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বহু প্রতীক্ষিত কমিটির সভার দিকে তাকিয়ে ছিল দেশের প্রতিটি ক্লাবই। ফল বেরোনোর পর তিন ক্লাবেই বিষাদ। ইউনাইটেড কর্তা নবাব ভট্টাচার্য বলে দিলেন, “জানি না কেন আমাদের বাতিল করা হল। কাল চিঠি পেলে আবেদন করব।” একই প্রতিক্রিয়া ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন চার্চিল ব্রাদার্সেরও। প্রধান কর্তা চার্চিল আলেমাও গোয়া থেকে বললেন, “আমরা আবেদন করব।” কিন্তু যদি তাতেও পাশ না করেন? মুখে কিছু না বললেও গোয়ার খবর, ভোটে হেরে রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা আলেমাও টিম তুলে দেওয়ার কথা ভাবতে পারেন। আর মহমেডান প্রেসিডেন্ট সাংসদ সুলতান আমেদের প্রতিক্রিয়া, “আমরা হেরিটেজ ক্লাব। সেই ক্লাবকে ফেডারেশন পরিকল্পনা করে মারতে চাইছে। আবেদন করব।”
তবে চার্চিল ব্রাদার্স শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে গেলে কলকাতার দুই প্রধান দু’ভাবে সুবিধা পেয়ে যেতে পারে। ইস্টবেঙ্গল পেতে পারে এএফসি কাপে খেলার সুযোগ। আর মোহনবাগান সামনের মরসুমের জন্য পেয়ে যেতে পারে তাদের টার্গেটে থাকা চার্চিলের বলবন্ত সিংহ-সহ বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে। আই লিগে টিম কমে যাওয়ায় কম খরচে অন্য ক্লাবগুলিও ইউনাইটেড ও রাংদাজিদের ফুটবলারদের পেয়ে যাবে।
পুণে এফসি আগেই পাশ করেছিল। এ দিন ছাড়পত্র পেল ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, বেঙ্গালুরু এফসি, ডেম্পো, স্পোর্টিং ক্লুব, শিলং লাজং, মুম্বই এফসি, সালগাওকর, রয়্যাল ওয়াহিংডো। তা হলে আই লিগ কি এ বার ১০ দলেরই হবে? সিইও সুনন্দ ধর বললেন, “সেটা এখনও ঠিক হয়নি। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য দরপত্র ছাড়া হয়েছে। তাদের যদি কেউ সুযোগ পায় তা হলে দল বাড়বে।” সুনন্দ অবশ্য বললেন, “যে চার ক্লাব বাতিল হয়েছে কারণ জানিয়ে তাদের চিঠি দিচ্ছি। তারা সাত দিনের মধ্যে আবেদনের সুযোগও পাবে।”
ফেডারেশন সূত্রের খবর, আবেদন করলেও যে বিষয়গুলি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে সেগুলি পূরণ করা কঠিন। যুব দল, আর্থিক পরিকাঠামো, অডিট রিপোর্ট—এগুলো দু’একদিনে শেষ করার কাজ নয়। তা ছাড়া রাংদাজিদ তো কাগজপত্রই জমা দেয়নি। গতবার কোম্পানি না করায় ওএনজিসিকে বাতিল করেছিল ফেডারেশন। এ বার বাতিল হল আরও তিন ক্লাব!
ইস্টবেঙ্গল ১
লাল-হলুদ সমর্থকদের কাছে খুশির খবর। আই লিগে বেঙ্গালুরুকে দু’বার হারিয়েও এ বার রানার্স হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। কিন্তু বুধবার এএফসি-র ক্লাব লাইসেন্সিং শর্ত পূরণে আই লিগ খেলা যে ন’টি ক্লাব যোগ্যতামান পার করেছে, তাদের মধ্যে প্রথম ইস্টবেঙ্গল। দিল্লির ফুটবল হাউসে বুধবার দুপুরে পাঁচ সদস্যের লাইসেন্সিং কমিটির সভায় হাজির ছিলেন আইনজীবী উষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন, “ইয়ুথ ডেভলপমেন্ট, পরিকাঠামো উন্নয়ন, আর্থিক লেনদেনের অডিট রিপোর্ট-সহ শর্তপূরণের একাধিক বিষয়ে সর্বাধিক নম্বর পেয়ে ইস্টবেঙ্গলই আই লিগ খেলা বাকি ক্লাবদের পিছনে ফেলে এক নম্বরে।” এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি কলকাতায় ক্লাব পরিদর্শনে এসেছিলেন ফেডারেশনের লাইসেন্সিং কমিটির প্রতিনিধিরা। ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে জিম, জাকুজি, পরিকাঠামো যুব দল, অডিট রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখে সন্তোষ ব্যক্ত করেছিলেন। যার ফল, লাইসেন্সিং কমিটির দেওয়া নম্বরের ভিত্তিতে এক নম্বরে কলকাতার ক্লাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy