Advertisement
১৯ মে ২০২৪
ফেড কাপ

মুম্বই ম্যাচের আগে আর্মান্দোর সেই নিজেকে নিয়ে ধোঁয়াশা

বর্ষবরণের সেলিব্রেশনটা স্থগিতই রাখলেন ডুডু ওমাগবেমি। নাটকীয় পরিস্থিতিতে শেষ মুহূর্তে গোল করে ফেড কাপে ইস্টবেঙ্গলকে অক্সিজেন দিয়েছেন বর্ষশেষের রাতে। বান্ধবী-বোনকে কথা দিয়েছিলেন উত্‌সব করবেন গোল করলে। কিন্তু নাইজিরিয়ান গোলমেশিন সেটা করেননি।

চনমনে মেজাজে বছর শুরু ডুডুর। ছবি: উত্‌পল সরকার

চনমনে মেজাজে বছর শুরু ডুডুর। ছবি: উত্‌পল সরকার

রতন চক্রবর্তী
মারগাও শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:১০
Share: Save:

বর্ষবরণের সেলিব্রেশনটা স্থগিতই রাখলেন ডুডু ওমাগবেমি।

নাটকীয় পরিস্থিতিতে শেষ মুহূর্তে গোল করে ফেড কাপে ইস্টবেঙ্গলকে অক্সিজেন দিয়েছেন বর্ষশেষের রাতে। বান্ধবী-বোনকে কথা দিয়েছিলেন উত্‌সব করবেন গোল করলে। কিন্তু নাইজিরিয়ান গোলমেশিন সেটা করেননি।

কেন? “এখন উত্‌সব করার সময় নয়। সেমিফাইনাল যেতে হলে মুম্বই এফসি ম্যাচটা জিততেই হবে। উত্‌সব করলে ফোকাস নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই ওদের বলেছি টিমটা শেষ চারে উঠুক তার পর তোমাদের হোটেলে নিয়ে গিয়ে খাওয়াব। ওরা আমাকে জানে। মেনে নিয়েছে,” টিম হোটেল থেকে বলছিলেন ডুডু।

অথচ লাল-হলুদের গোয়ান কোচ আর্মান্দো কোলাসো পুরো টিমকে ছুটি দিয়ে চলে গিয়েছিলেন আগাসাই-তে, নিজের বাড়িতে। বৃহস্পতিবার সারাদিন হোটেলমুখো হননি। বিকেলে আসার কথা ছিল ভাস্কোতে। মোহনবাগান-পুণে ম্যাচ দেখতে। আসেননি। পরিবারিক কাজে আটকে গিয়েছেন বলে।

ইস্টবেঙ্গল গ্রুপের চারটে দলের মধ্যে একমাত্র স্পোর্টিং ক্লুব-এর কোনও পয়েন্ট নেই। এ দিন টোলগে ওজবের হ্যাটট্রিকের দৌলতে ডেম্পো ছ’পয়েন্টে পৌঁছে গিয়েছে। বাকি সবারই হাতে তিন পয়েন্ট। ফলে শেষ চারে যাওয়ার প্রশ্নে আর্মান্দো ব্রিগেড যে চাপে, এটা বলা যাবে না। কোচ তা বলেও দিচ্ছেন, “এখনও রাস্তা খোলা আছে। কাল জিতলে সুবিধাজনক অবস্থায় যাব।”

তাঁর টিম কলকাতা লিগের মতো ফর্মে ফিরতে পারছে না, মানছেন না। তবুও যে ভাবে সুসাক-বার্তোসদের নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে তাতে বিরক্তও। “ওদের একটু সময় দিন। না হলে বিদেশি ফুটবলার এনে লাভ কী?”

খালিদ জামিলের টিমের বিরুদ্ধে নামার আগে ডুডুর গোল আর্মান্দোকে আশ্বস্ত করেছে। “ডুডুর একটা গোল পুরো টিমের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে। র্যান্টিকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাচ্ছি। যে সব গোল ও সুযোগ পেলেই করত সেগুলো করতে পারছে না।”

ইঙ্গিত দিলেন দলে দু’তিনটে পরিবর্তন করতে পারেন। টিম সূত্রের খবর, হরমনজিত্‌, বলজিত্‌ সিংহেরা ফিরতে পারেন প্রথম একাদশে। কিন্তু তাতে কি ইস্টবেঙ্গলের খেলার কোনও উন্নতি হবে। ডেম্পো এবং রয়্যাল ওয়াহিংডোর বিরুদ্ধে একেবারেই ভাল খেলতে পারেনি লাল-হলুদ।

ইস্টবেঙ্গল যখন পুরো বিশ্রামে তখন মুম্বই এফসি বিকেলে অনুশীলনে নেমে পড়ল। টিমে কলকাতায় খেলে যাওয়া চিকাওয়ালি, জোসিমাররা রয়েছেন। রয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের ছেড়ে দেওয়া ভাসুমও। আটলেটিকো দে কলকাতায় কোনও ম্যাচে সুযোগ না পাওয়া ক্লাইম্যাক্স লরেন্স রয়েছেন।

তাঁকে আইএসএলে কেন খেলানো হচ্ছে না এই প্রশ্ন তুলে দীর্ঘদিন ভারতীয় দলে খেলা ক্লাইম্যাক্স ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন আটলেটিকো কোচ আন্তোনিও হাবাসের সঙ্গে। হাবাস রেগে গিয়ে বলেছিলেন, “উইকিপিডিয়ায় যা তোমার বয়স দেখেছি তাতে তোমার অবসর নেওয়া উচিত।” যা শুনে গোয়ার শান্ত স্বভাবের ছেলে পাল্টা বলেছিলেন, “আমাকে একটা ম্যাচে নামিয়ে দেখুন আমি বুড়ো, না গার্সিয়া বুড়ো!” যে ঝামেলা গড়িয়েছিল অনেক দূর পর্যন্ত। মুম্বইয়ের অধিনায়ক সেই ক্লাইম্যাক্স এ দিন বলছিলেন, “আমাকে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। আমদের শেষ চারে উঠতে হলে ম্যাচটা জিততে হবে।”

মুম্বইয়ের এই মরিয়া ব্যাপারটাই ভাবাচ্ছে আর্মান্দোকে। ইস্টবেঙ্গল কোচ বলছিলেন, “ওদের কোনও চাপ নেই। কিন্তু আমাদের চাপ অনেক বেশি। একটা ম্যাচ হারলেই এমন হইচই হয় যে, মনে হয় সব শেষ হয়ে গেল।” পাঁচ বার আই লিগ জেতা কোচ বুঝতে শুরু করেছেন গোয়া আর বাংলায় কোচিং করানোর মধ্যে পার্থক্যটা কী। এই চাপ কি তিনি নিতে পারছেন না? অপ্রত্যাশিত ভাবে ইস্টবেঙ্গল কোচ হাসতে হাসতে বললেন, “কলকাতায় আর হয়তো ফিরব না। আর কোচিং করাব না।” কেন কোচিং ছাড়ার কথা ভাবছেন? হোমসিক বলেই কি? “ডাক্তাররা আমাকে এত চাপ নিতে বারণ করছেন। পরিবারও বলছে। ওদের বলেছি, দেখি কী করা যায়।” নিন্দুকরা বলছেন, এ রকম আর্মান্দো বলেই থাকেন ধোঁয়াশা বাড়াতে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে ক্লাবের ডামাডোলে লাল-হলুদ কর্তারা সব কিছু ছেড়ে বসে আছেন কোচের উপর। তাঁর ইচ্ছেতেই সব হচ্ছে। ডেম্পোতে যা করে এসেছেন কোচিং জীবনের বেশির ভাগ সময়। তা হলে কলকাতার বড় ক্লাবে একই দায়িত্ব সামলাতে অপ্রস্তুত কেন দেশের সেরা ক্লাব কোচও!

আজ ফেডারেশন কাপে

ইস্টবেঙ্গল বনাম মুম্বই এফসি

(মারগাও, সন্ধে ৭-০০)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE