বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে নিউজিল্যান্ড চলল মিসবার পাকিস্তান।
যে কোনও দলের কাছে হারতে পারো। কিন্তু ভারতের কাছে নয়। পাকিস্তান দলের কাছে সর্বদা এটাই দাবি সমর্থকদের। মজাটা হল, ভারতীয় দলের জন্যও একই কথা প্রযোজ্য। ১৫ ফেব্রুয়ারির অ্যাডিলেডেও ছবিটা এতটুকু পাল্টাবে না গ্যারান্টি। বিশ্বকাপে ভারত-পাক মহাম্যাচ শেষ বার হয়েছে মোহালিতে চার বছর আগে। দর্শকাসনে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি হাইভোল্টেজ সেমিফাইনালের উত্তাপ আরও বাড়িয়ে তুলেছিল। সইদ আজমলের ভাষায় যা ‘অবিস্মরণীয়’।
বেআইনি বোলিং অ্যাকশনের জেরে আজমল এ বারের বিশ্বকাপ দলে ঠাঁই পাননি। “টিভিতে খুব সম্ভবত পনেরো ফেব্রুয়ারির ম্যাচটা দেখব। টিভির সামনে বসেই সারাক্ষণ আমাদের দলের জন্য চিৎকার করব,” এ দিন আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন এই মুহূর্তে নির্বাসিত তারকা পাক অফস্পিনার।
তার পর ঢুকে পড়লেন চার বছর আগের বিশ্বকাপে ভারত-পাক ম্যাচের স্মৃতিচারণে। “সকাল থেকে কাতারে কাতারে মানুষ স্টেডিয়ামের দিকে যাচ্ছে দেখেছিলাম সে দিন। কিন্তু দিনের শেষে আমাদের কাছে ম্যাচটা বুক ভেঙে দিয়ে গিয়েছিল। একটা সময় ম্যাচটায় খুব ভাল জায়গায় থেকেও শেষমেশ হেরে যাই। এখনও ওই ম্যাচটার কথা মনে পড়লে বুকটা যন্ত্রণায় মুচড়ে ওঠে। হৃদয় খানখান হয়ে যায়। আবার ভাবি, এটাই ক্রিকেট। জীবন কিন্তু এগিয়ে চলবে।”
সে দিন মোহালিতে ধোনি টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পর আফ্রিদি ম্যাচের নবম ওভারেই আজমলকে আক্রমণে এনেছিলেন। এবং দ্বিতীয় ওভারেই তিনি সচিনকে প্রায় তুলে নিয়েছিলেন। চার বছর পর সেই ম্যাচের প্রসঙ্গে আজমল বললেন, “মনে আছে সহবাগ নেমেই পেটাতে শুরু করেছিল। ফলে আমাকে তাড়াতাড়ি বল করতে ডাকা হয়। ওটা ছিল আমার দ্বিতীয় ওভার। আর আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারি না ব্যাপারটা। বলটা অনেকটা স্পিন করে ঢুকে একেবারে উইকেটের সামনে সচিনের পায়ে লাগে। আম্পায়ার ছিলেন খুব সম্ভবত ইয়ান গোল্ড। তিনি আউট দেন। কিন্তু সচিন রিভিউ চায়। আর আমাকে অবাক করে থার্ড আম্পায়ার নট আউট দেন সচিনকে। আমি এখনও সেটা ভুলতে পারি না। তার পর যত বার আমি টিভিতে ওটার রিপ্লে দেখেছি এবং আপনাকে বলছি, সেটা হাজারের বেশি হবে বই কম নয়, প্রতিবার মনে হয়েছে সচিন ওটা আউট ছিল। পরের বলেই সচিন স্টাম্পিংয়ের থেকে বাঁচে। সে দিন যদি ওকে আমরা ওই সময় পেয়ে যেতাম, তা হলে হয়তো ভারতকে অনেক আগেই শেষ করে দিতে পারতাম। সে দিন আমরা অনেকগুলো ক্যাচ ফেলেছিলাম। শেষমেশ আমিই সচিনকে আউট করেছিলাম, কিন্তু ততক্ষণে ও আশির মতো রান করে দিয়েছে।” তার পরেও ভারতের তোলা ২৬০ রান পাকিস্তানের কাছে কঠিন হলেও অসাধ্য টার্গেট ছিল না।
শেষ দিনের ক্যাম্পে মিসবা
• নেটে লম্বা ব্যাটিং প্র্যাকটিস
• পরে ফিটনেস পরীক্ষায় বসা
• ফিটনেস যুদ্ধে টেক্কা দিলেন আফ্রিদিকে
“কিন্তু ভারত-পাক বিগ ম্যাচের চাপ আমাদের উপর চেপে বসেছিল। ভাল শুরু করেও আমাদের ইনিংস পরে ভেঙে পড়েছিল সে দিন।” এ বার কী হবে? আজমলের কথায়, “এ বারও চাপের ম্যাচ। ফলে কারা ফেভারিট বলা কঠিন। তবে আমি লক্ষ্য করছি, অধিনায়ক মিসবা, কোচ ওয়াকার ইউনিস থেকে শুরু করে দলের প্রতিটা সদস্য এ বার বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ভারত-ম্যাচের জুজু কাটিয়ে উঠতে যেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
বৃহস্পতিবারই আজমলের চেন্নাই যাওয়ার কথা। সেখানে আইসিসির রসায়নগারে নিজের বোলিং অ্যাকশন শোধরানোর আর এক প্রস্ত পরীক্ষা দিতে। গত সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নির্বাসিত পাক অফস্পিনার নিশ্চিত এ বার তিনি মুক্ত হবেন। “নিজের ভুল বোলিং অ্যাকশনের ওষুধ বার করতে আমি গত ক’মাস প্রচণ্ড খেটেছি। শেষ দু’তিন মাসে বারো হাজারের বেশি বল করেছি। ক্যারম বল কিংবা নতুন বল সিমে পিচ করে এক ধরনের ডেলিভারি প্র্যাকটিস করেছি আইসিসি-র আইনের ভেতর থেকে। আশা করছি খুব শিগগির মাঠে ফিরে এই দু’টো ডেলিভারিতে ব্যাটসম্যানদের ধোঁকা দিতে পারব।”
ধর্মগুরুর পরামর্শে বদল জার্সি নম্বর
বিশ্বকাপে ভাল করার জন্য অনেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার নিজেদের এত দিনের ওয়ান ডে জার্সির নম্বরে বদল আনছেন। সংবাদসংস্থার খবর, তাঁদের এই পরামর্শ দিয়েছেন তাঁদের দেশের এক পির। যেমন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান উমর আকমল, যিনি সদ্য কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন, ৯৬ নম্বর ছেড়ে বিশ্বকাপে ৩ নম্বর জার্সি গায়ে খেলবেন। পাক ক্রিকেট বোর্ডও তাদের বিশ্বকাপ দলের প্লেয়ারদের অনুমতি দিয়েছে নিজের ইচ্ছে মতো নম্বরের জার্সি পরে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে খেলতে। আবার আফ্রিদি (১০), মিসবা (২২) কিংবা ইউনিস খান (৭৫) জার্সি নম্বর না পাল্টানোর পরামর্শ পেয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy